OrdinaryITPostAd

শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল জেনে নিন

 শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল তা আমাদের সকলের জানা প্রয়োজন। শ্রমিক দিবসকে আন্তর্জাতিকভাবে মে দিবস বা মে ডে হিসেবেও চেনা হয়ে থাকে। শ্রমিক দিবসকে বিশ্বের সকল দেশের কর্মজীবী মানুষের অধিকার ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

শ্রমিক-দিবসের-পেছনের-ইতিহাস-কী-ছিলসারা বিশ্বে এই দিনটি উদ্‌যাপন করা হয় বলে এই দিনটি সরকারি ছুটি বলে বিবেচনা করে হয়। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষ এই দিনটির ইতিহাস সম্পর্কে জানেনা। তাই আমাদের প্রত্যেকের এই দিনটি পেছনের ইতিহাস কী ছিল এটি জানা ও এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।

সূচিপত্রঃ শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল

শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল

শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল এই ইতিহাস নিয়ে আজকে আমরা বিস্তারিত জানবো। বিশ্ব শ্রমিক দিবস এটি শুধু একটি দিবস নয় বরং এর পেছনে রয়েছে এক অবিশ্বাস্য ইতিহাস। যা ইতিহাসের পাতায় রয়ে যাবে চিরকাল। আমাদের প্রত্যেকের এই ইতিহাস সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কারণ এই আন্দোলন যদি না হতো তাহলে হইতো আজকে হইতো বিশ্ব জুড়ে প্রত্যেক শ্রমিককে দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। তাই শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল এটি জানা আমাদের প্রত্যেকের উচিত। এখন আমরা সংক্ষেপে শ্রমিক আন্দোলনের কারণ ও ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবো।
দিনটি ছিল ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হাজার হাজার শ্রমিক রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলন শুরু করে। তাদের একটি দাবি ছিল দিনে মাত্র ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস হবে ও ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম এবং ৮ ঘণ্টা ব্যক্তিগত সময় হবে আমেরিকার প্রত্যেক শ্রমিকদের। তাদের আন্দোলন ১ মে থেকে ৩ মে শান্তিপূর্ণ ভাবে চললেও ৪ মে হেমার্কেট স্কোয়ার নামক জায়গায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এর ফলস্বরূপ পুলিশ গুলি বর্ষণ শুরু করে এবং অনেক আন্দোলনকারী ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং পরবর্তীতে অনেক আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার ও ফাঁসি দেওয়া হয়।

যেভাবে শ্রমিক বিপ্লবের সূচনার শুরু হয়

আমরা জানি যে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল ১৮৮৬ সালের ১ মে কিন্তু এর পেছনের আসল ঘটনা আমরা অনেকেই জানি না। শ্রমিক বিপ্লবের সূচনা শুরু হয় মূলত ১৮৮৬ সালেরও ১০০ বছর পূর্ব থেকে। ১৭০০ সালের দিকে ইংল্যান্ডে শিল্প বিল্পব শুরু হলে অনেক মানুষ আয় রোজগারের আশায় গ্রাম থেকে শহরে চলে আসে। গ্রাম থেকে শহরে আসা মানুষ গুলো কারখানায় অমানবিক পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হতে হয়। তাদের থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করিয়ে নেওয়ার সত্ত্বেও পারিশ্রমিক পেতো শুধু নাম মাত্র। এছাড়াও শিশু শ্রম, বিশ্রামের সুযোগ না থাকা এইসকল নির্মম আচরণ তো নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল।
শ্রমিক-দিবসের-পেছনের-ইতিহাস-কী-ছিল
এরই জের ধরে শত শত বছরের জমে থাকা অবিচার, শোষণ, ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের প্রতিবাদ শুরু হয়। যা পরবর্তীতে আধুনিক শ্রমিক আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে গড়ে উঠে। মূলত ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লব ও শ্রমিক শ্রেণির উত্থান শুরু হয়েছিল ১৭৬০ থেকে ১৮৪০ সালের মধ্যে। এরই মধ্যে যখন শ্রমিকরা তাদের শোষণ থেকে বাচার জন্য ছোটখাটো বিদ্রোহ শুরু করেছিল। এরপর ১৮১১ থেকে ১৮১৭ সালের মধ্যে শ্রমিকরা আন্দোলন করেন এবং অনেক মেশিন ভাঙচুর শুরু করে, কারণ তারা ভাবত মেশিনই তাদের কাজ কেড়ে নিচ্ছে। মূলত এখান থেকেই শ্রমিক বিপ্লবের সূচনার শুরু হয়।

যেভাবে আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনের শুরু হয়

ইংল্যান্ডের ১৮০০ সালের দিকে শিল্পবিপ্লব শুরু হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শিল্পবিপ্লব শুরু হওয়ার সাথে সাথে তৈরি হয় ধনী ও দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে ব্যবধান। শহরের শিল্প কল কারখানায় শ্রমিকদের বিনা বিশ্রামে দিনে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজ করিয়ে নেওয়া হতো। এর পাশাপাশি শিশু শ্রম সহ নারী শ্রমিকদের শোষণ ছিল সাধারণ ঘটনা। ধীরে ধীরে এই ঘটনা শুধু ইংল্যান্ড বা ইউরোপের দেশ গুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলো না বরং আমেরিকা সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে শ্রমিকদের উপর এই নির্যাতন চালিয়ে দাওয়া শুরু হয়েছিল।

এই নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য ১৮৬৪ সালে লন্ডনে ইন্টারন্যাশনাল ওয়ারকিং ম্যান অ্যাসোসিয়েশন নামক একটি সংগঠন তৈরি করা হয়। এই সংগোঠনের প্রধান চিন্তাবিদ ছিলেন কার্ল মার্কস যিনি ছিলেন একজন সমাজ চিন্তাবিদ। এই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংগঠন ও নেতাদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। মূলত এই সময় থেকেই শ্রমিকরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকারের জন্য কাজ করতে শুরু করে।
১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগোর হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন শুরু হয় ১ মে এবং ১ মে থেকে ৩ মে পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চললেও ৪ মে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। যার ভিত্তিতে পুলিশ আন্দোলনকারীদের উপর গুলি বর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে অনেক আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার ও ফাঁসি দেওয়া হয়। এই ঘটনা পরবর্তীতে সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে যা আন্তর্জাতিক শ্রমিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ঘটনা

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার ঘটনা ইতিহাসের পাতার স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শত শত শ্রমিক নেতার বিচার ছাড়াই গ্রাফতার ও ফাঁসি সহ হাজারও শ্রমিকের রক্তের বিনিময়ে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল। শ্রমিকদের মূল দাবি ছিল ৮ ঘণ্টা ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস হবে ও ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম এবং ৮ ঘণ্টা ব্যক্তিগত সময়। এই দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয় এক ঐতিহাসিক আন্দোলন। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে অনেক শ্রমিক নিহত হয় এবং বিচার ছাড়াই অনেক শ্রমিক নেতাদের গ্রেফতার ও ফাঁসি দেওয়া হয়। মূলত এই ঘটনা সারা বিশ্বের শ্রমিক থেকে সাধারণ মানুষদের সাড়া ফেলে দেয়।

এরপর ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় শ্রমিকদের আরো একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। যাকে বলা হয় সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল। এই দ্বিতীয় সম্মেলনে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর মূল লক্ষ্য ছিল হে মার্কেট আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ করা ও শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই চালিয়ে যাওয়া। এরপর ধীরে ধীরে বিশ্বে বিভিন্ন দেশ শ্রমিক দিবস হিসেবে ১ মে স্বীকৃতি দেয়। বাংলাদেশ, ভারত, চীন সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ও এই দিনটিকে সরকারি ছুটি দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক দিবস উদ্‌যাপিত হওয়ার ইতিহাস

১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত সেকেন্ড ইন্টারন্যাশনাল সম্মেলনে ১ মে দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হবে বলে প্রস্তাব পেশ করা হলে সকলে সম্মতি জানায়। আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক দিবস উদ্‌যাপন করার মূল লক্ষ্য ছিল শ্রমিকদের আত্মত্যাগ স্মরণ করা, ৮ ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া ও শ্রমিক ঐক্য গড়ে তোলা। আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক দিবস প্রথম যে দেশগুলো পালন করতে থাকে তারা হচ্ছে ইউরোপের কিছু দেশ যেমনঃ জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, স্পেন, ইতালি। 

এরপর ১৯১৭ সালের দিকে রাশিয়া শ্রমিক দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্‌যাপনের স্বীকৃতি দেয়। এরপর বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপাল সহ এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের পর এই দিনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক দিবস হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়। সর্বশেষে আমেরিকাতেও শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। যদিও এই দেশেই চলেছিল নির্মম হত্যাকাণ্ড। আমেরিকা শ্রমিক দিবস উদ্‌যাপন করলেও তারা ১ মে কে শ্রমিক দিবস হিসেবে মানে না। তারা সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সোমবারে শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করে। এভাবেই মূলত আন্তর্জাতিকভাবে শ্রমিক দিবস উদ্‌যাপিত হয়।

বাংলাদেশে প্রথম শ্রমিক দিবস পালন করার ইতিহাস

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা লাভ করার পর প্রথম বারের মতো ১৯৭২ সালে সরকারিভাবে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। সে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন এবং সরকারি ছুটি ও রাষ্ট্রীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ মে সরকারি ছুটি থাকে ও বিভিন্ন শ্রমিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ গণ এই দিনটি উদ্‌যাপন করে আসছে।

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে প্রথম  শ্রমিক দিবস পালন করা হয়েছিল দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক র‍্যালি, আলোচনা সভা, ও সংগঠনভিত্তিক সমাবেশের মাধ্যমে। বাংলাদেশে শ্রমিক দিবস শুধু মাত্র লোক দেখানোর জন্য বা অফিসিয়াল নিয়ম নীতি মানার জন্য পালন করা হয়না। বরং বাংলাদেশে শ্রমিক দিবস পালনের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকরা ঐক্য গঠন করা সহ নিজেরদের দাবি সংস্কার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারে। তাই এটি বলা যায় যে বাংলাদেশে শ্রমিক দিবস পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরের শ্রমিকদের মাঝে ঐক্য স্থাপন হয়।

শ্রমিক আন্দোলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের ভূমিকা

আপনি যদি মনে করেন শ্রমিক আন্দোলন সফল হয়েছে শুধু মাত্র শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে তাহলে আপনি ভুল ভেবেছেন। কারণ শ্রমিকদের দিনে ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজের ঘটনা কয়েক মাস বা বছরের ঘটনা নয় বরং শ্রমিকদের প্রতি এই অবিচার ও অত্যাচার ঘটে আসছিল কয়েক শতাব্দী ধরে। এই সময়কালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম নানান ভাবে শ্রমিকদের উপর হওয়া নির্যাতন সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরেছিল।
তাই বলা চলে যে শ্রমিক আন্দোলন কখনো সফল হতে পারতো না যদি এই আন্দোলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের ভূমিকা না থাকতো। বিশেষ করে ১৮৮৬ সালের ১ মে এর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর পুলিশ যেভাবে হত্যাকাণ্ড করেছিল এবং বিনা বিচারে অনেক শ্রমিককে গ্রেফতার ও ফাঁসি দিয়েছিল সেই চিত্র গুলো সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে গণমাধ্যম অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। বিশেষ করে এই কারণেই শ্রমিক আন্দোলন আমেরিকা থেকে বাহিরে এসে আন্তর্জাতিকভাবে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তাই শ্রমিক আন্দোলনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের ভূমিকা এক কথায় অতুলনীয়।

শ্রমিক দিবসের ভূমিকা ও তাৎপর্য

শ্রমিকদের অধিকার আদায় ও ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা কাজের অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার যে লড়ায় হয়েছিল এটি থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার রয়েছে। এটি শুধু কোনো আন্দোলন ছিল না বরং এটি ছিল প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়নের স্বপ্ন। কয়েক শতাব্দী ধরে চলা এই আন্দোলন থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। শ্রমিক দিবসের ভূমিকা ও তাৎপর্য এখন আমরা সংক্ষেপে জানবো।
শ্রমিক-দিবসের-পেছনের-ইতিহাস-কী-ছিল
চাকরি ক্ষেত্রে অথবা বিভিন্ন কাজে শ্রমিক হিসেবে ১৮৮৬ সালের সেই শ্রমিক আন্দোলনের সুফল আমরা সকলে গ্রহণ করছি। দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের পাশাপাশি ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হয়েছে এই আন্দোলনের কারণে। এছাড়াও শিশু শ্রমের মতো ঘিন্ন কাজ সেই দিনের আন্দোলনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশু শ্রম নিষিদ্ধ করেছে এবং ধীরে ধীরে শিশু শ্রম নামক অমানবিক কার্যকলাপ পৃথিবীর বুক থেকে মুছে যাচ্ছে। তাই বলা যায় আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় শ্রমিক দিবসের ভূমিকা ও তাৎপর্য অপরিসীম।

শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন ও উত্তর

প্রশ্নঃ মে দিবস কত সাল থেকে পালিত হয়?
উত্তরঃ ১৮৮৯ সাল থেকে মে দিবস পালন করা হয়।

প্রশ্নঃ মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয়?
উত্তরঃ ১ মে ১৮৮৬, শিকাগো, যুক্তরাষ্ট্র প্রথম মে দিবস পালিত হয়।

প্রশ্নঃ প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস কবে পালিত হয়?
উত্তরঃ ১ মে ১৮৯০ সালে প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস পালিত হয়।

প্রশ্নঃ শ্রমিক দিবস কেন পালিত হয়?
উত্তরঃ শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রম দিবস পালন করা হয়।

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে প্রথম কবে শ্রম দিবস পালন করা হয়?
উত্তরঃ ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে প্রথম শ্রম দিবস পালন করা হয়।

প্রশ্নঃ শ্রমিক আন্দোলনে  শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের ভূমিকা কি ছিল?
উত্তরঃ সচেতনতা সৃষ্টি ও জনমত গঠনই ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের মুখ্য ভূমিকা।

প্রশ্নঃ মে দিবসের ইতিহাস কি ছিল?
উত্তরঃ মে দিবসের ইতিহাস ১৮৮৬ সালে শিকাগোতে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে শুরু হয়। যেখানে পুলিশ-শ্রমিক সংঘর্ষে অনেক শ্রমিক নিহত হন। এরপর ১৮৮৯ সালে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। 

প্রশ্নঃ মে দিবস কি এবং কেন?
উত্তরঃ মে দিবস হল ১ মে তারিখে পালিত একটি আন্তর্জাতিক দিবস যা শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য পালিত হয়। মে দিবসের ইতিহাস বিস্তারিত জানতে উপরে পড়ে আসতে পারেন।

প্রশ্নঃ সামাজিক জীবনে কি মে দিবসের কোনো প্রভাব আছে?
উত্তরঃ সামাজিক জীবনে সচেতনতা সৃষ্টি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ স্থাপনের জন্য মে দিবসের প্রভাব ইতিবাচক। 

প্রশ্নঃ বাংলাদেশে মে দিবস কে পালন করেন?
উত্তরঃ সিএনজি চালক, সাধারণত শ্রমিক, রাজনীতি দন ও সরকার কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে মে দিবস পালন করে থাকেন।

পরিশেষে - শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল

শ্রমিক দিবসের পেছনের ইতিহাস কী ছিল এটি আমরা উপরে বিস্তারিত জেনেছি। ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে হাজার হাজার শ্রমিকের আন্দোলন ও রক্তক্ষয়ী এক যাত্রার পর আমরা সারা বিশ্বের চাকরিরত অথবা শ্রমিক সকল মানুষ দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের পাশাপাশি ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম নিতে পারছি। আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় শ্রমিক দিবসের সেই রক্তাক্ষয়ী ইতিহাসের ঘটনা আজও সারা বিশ্বের মানুষের মনে জ্বালাময়ী অনুভব তৈরি করে।     250311

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url