শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস - শবে কদরের রাত চেনার উপায় কি
শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস এবং দোয়াশবে কদর সম্পর্কিত হাদিস থেকে জানা যায় মহান আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিন এই মহিমান্বিত রজনীতে সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানী কিতাব আল কোরআন নাযিল করেছেন। কোরআনের মর্যাদার জন্য আল্লাহ তার রহমত দিয়ে শবে কদরকে সাজিয়েছেন।
শবে কদরের মর্যাদাকে এতটাই বৃদ্ধি করে দিয়েছেন যে এই রাতে নফল এবাদত করার ফলে বান্দা নিষ্পাপ হয়ে যায়। এই রাত ইবাদতের জন্য শ্রেষ্ঠ রাত হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পেইজ সূচিপত্র
- শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস কোনগুলো
- শবে কদর হাদিসের আলোকে ফযীলত
- শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস
- শবে কদর বলতে হাদিসে কোন রাতকে নির্ধারণ করা হয়েছে
- শবে কদরের মর্যাদা হাদিসের দৃষ্টিতে কতটুকু
- শবে কদর নিয়ে হাদিস শরীফে রাসূলের বাণী
- শবে কদর কি শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে হয়
- শবে কদরের রাত চেনার উপায় কি
- শবে কদর রাতে কি ভাগ্য লেখা হয়
- শেষ মন্তব্য
শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস কোনগুলো
শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস এর মধ্যে আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয়ই আমি কুরআন মাজীদকে নাযিল করেছি শবে কদরের রাতে। তোমাকে কিসে জানাবে শবে কদর কি? শবে কদর হাজার সহস্র মাস অপেক্ষাও অধিকতর শ্রেষ্ট। এই রাতে ফেরেস্তা এবং রুহ গণ রবের অনুমতি নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং ফজরের শুরু পর্যন্ত শান্তি বিরাজ করতে থাকে। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন রাসূলকে তিনি বলতে শুনেছেন।
আরো পড়ুনঃ শবে কদরের নামাজ কি বিতরের আগে
লাইলাতুল কদরে অর্থাৎ শবে কদরের রাতে যেই ব্যক্তি ঈমানদার হওয়ার আশায় এবং সওয়াব পাওয়ার জন্য ইবাদত করবে, তার জীবনের পূর্বের সকল পাপকে মুছে দেয়া হবে। এই রাতের কল্যাণ তার উপর বর্ষিত হবে। এছাড়াও আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেছেন, রমজান মাস যখনই অতি নিকটবর্তী হয় তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদেরকে বলতেন, তোমাদের নিকট এই মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই মাস এমন একটি রাত রয়েছে যা এক হাজার মাসের চেয়েও অনেক বেশি উত্তম। যেই ব্যক্তি এই রাতে কল্যাণ এবং রহমত থেকে বঞ্চিত হয় সে প্রকৃতপক্ষে জীবনের সকল ধরনের কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়ে যায়। তাই যারা দুর্ভাগা তারা ব্যতীত এই রাতের কল্যাণ থেকে কেহই বঞ্চিত হয় না। প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর শবে কদরের রাতে ইবাদত বন্দেগী, জিকির আজকার, তাসবিহ এবং নেক আমল পাওয়ার মাধ্যমে রাত অতিবাহিত করা উচিত।
শবে কদর হাদিসের আলোকে ফযীলত
হাদিসের আলোকে শবে কদরের ফযীলত পাওয়ার আশায় যারা ঈমানের সাথে রোজা রাখে মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের পূর্ববর্তী জীবনের গুনাহ সমূহে মাফ করে দিয়ে নিষ্পাপ করে দেন। শুধু তাই নয় যেই ব্যক্তি সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল কদর অর্থাৎ শবে কদরের রাতে জেগে দাঁড়িয়ে কষ্ট করে সালাত আদায় করে, তার জীবনের সকল গুনাহ নিমিষেই মাফ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও শবে কদরে যেই সকল ফযীলত খুবই বরকতময়। চলুন সেই সম্পর্কে বিস্তারিত দেখে নেওয়া যাক।
১। শবে কদর বান্দার জন্য ভাগ্য রজনীর রাত। এই রাত এতটাই সম্মানিত রাত যা হাজার মাসের চেয়েও অনেক শ্রেষ্ঠ। পবিত্র কোরআনে নাযিল হয়েছে আল্লাহ বলেন, এই রাতকে তিনি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এবং অনেক বেশি মর্যাদা দান করেছেন।
২। রমজান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে যেকোন একটি রাত শবে কদর হিসেবে নির্ধারিত হয়। লাইলাতুল কদর প্রত্যেক মুসলিমের জন্য সম্মান এবং ভাগ্য নির্ধারণের রাত। এই রাতে মুসলমানগণ নিজেদের ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে সারারাত ইবাদত বন্দেগী করে থাকে।
৩। শবে কদরের রাতে পবিত্র কোরআন শরীফ নাযিল হয়। এই রাতে লাইলাতুল কদর হয় আল্লাহতায়ালা বলেন, নিশ্চয়ই আমি কোরআন সম্পূর্ণরূপে নাযিল করেছি এই মহিমান্বিত শবে কদরের রাতে।
৪। শবে কদরের রাত কি? এই সম্পর্কে আপনার কি কোন ধারনা আছে? সবচাইতে মর্যাদা এবং রহমতপূর্ণ মাস রমজান মাস। এর মধ্যে একটি রাত শবে কদরের রাত যা হাজার মাস থেকেও শ্রেষ্ঠ।
৫। শবে কদরের এই রাতে জিব্রাইল ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন। আল্লাহর নির্দেশ এবং অনুমতি নিয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে আসেন। এই শান্তির বার্তা ফজর পর্যন্ত একই ধারায় চলতে থাকে। আল কোরআন, সূরা: ৯৭, (আল কদর)।
৬। শবে কদরের রাতে পবিত্র মক্কা নগরীতে হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহর পক্ষ থেকে জিব্রাইল ফেরেশতা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল করেন।
৭। কুরআন মাজীদ নাজিল হওয়ার সম্মানার্থে শবে কদরের মর্যাদা আল্লাহ তায়ালা এতটাই বাড়িয়ে দিয়েছেন যে, তিনি ইবাদত বন্দেগী এবং আমলের সমপরিমাণ সওয়াব দান করে থাকেন। কোরআনে এই রাতকে খুবই বরকতময় রাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু হাদিস
শবে কদরের গুরুত্বপূর্ণ হাদিসগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে এই রাতে পবিত্র কোরআন মাজিদ নাযিল হয়। মুসলিমদের কাছে পবিত্র কোরআন শরীফ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গ্রন্থ। এর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা সমগ্র মুসলিম জাতির উপর বরকত এবং রহমত দান করে থাকেন। কোরআনে সুস্পষ্টভাবে এর কথা বলা হয়েছে। কুরআন নাযিল হয়েছে শবে কদরের মহিমান্বিত পবিত্র রাতে অর্থাৎ লাইলাতুল কদরে। যেই ব্যক্তি এই রাতে নিজের সবটুকু দিয়ে ইবাদত করার চেষ্টা করবে।
মহান আল্লাহ তাআলা তার জীবনকে নেয়ামতে ভরিয়ে দিবেন। রমজান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদর অনুসন্ধান করে খুঁজে পাওয়া যায়। যেহেতু রমজান মাসের ২৭ তম রাত খুবই পবিত্রতম একটি রাত। এই রাতে একজন মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে যা প্রার্থনা করে আল্লাহ তায়ালা তা কবুল করে থাকেন। তাই পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি রাখা উচিত। শবে কদরের রাতে আপনি আল্লাহর কাছে কি চাইবেন? হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একসময়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন।
হে আমার প্রিয় রাসূল, আপনি বলুন লাইলাতুল কদর কোন রাতে হতে পারে এবং সেই সময় আমি কোন দোয়াটি পড়তে পারি? এই সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এই রাতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া। আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফাফু আন্নি। অর্থাৎ হে আমার আল্লাহ, আপনি ক্ষমাশীল এবং ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। অতএব আমাকে দয়া করে ক্ষমা করে দিন। (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত শরীফ)।
শবে কদর বলতে হাদিসে কোন রাতকে নির্ধারণ করা হয়েছে
হাদিসে শবে কদরের রাতকে খুবই মহিমান্বিত রাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা কোরআন মাজীদকে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে নাযিল করেন। অন্য আরেকটি শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস থেকে পাওয়া যায়, এই শবে কদরের রাতেই পবিত্র কোরআন নাজিল করা হয়। পরবর্তীতে ২৩ বছরে বিভিন্ন সূরার অংশ বিভিন্ন সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নাযিল করা হয়। শবে কদরের রজনী হাজার মাসের ইবাদতের থেকেও শ্রেষ্ঠ। এই রাতকে নির্ধারণ করার বিষয়াবলি চলুন জেনে নিই।
- লাইলাতুল কদরে ঈমান এবং সওয়াব লাভের আশায় আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণ নফল নামাজ আদায় করেন।
- এই রাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করার মাধ্যমে পূর্বের সকল ছোট বড় গুনাহ আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চায়।
- পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসে দুনিয়ায় কল্যাণ, বরকত এবং রহমত বর্ষিত হতে থাকে।
- রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।
- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেই ব্যক্তি এই শবে কদরের রাত অন্বেষণ করতে চায় সে যেন রমজানের শেষ বেজোড় সাত রাতের মধ্যে অন্বেষণ করে।
- যদি কেউ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে চায় তাহলে কদরের রাত অনুসন্ধান যেন করে থাকে।
- এই রাতকে অস্পষ্ট করে গোপন রাখা হয়েছে যেন ঈমানদারগণ তার যোগ্য পুরস্কার পায়।
শবে কদরের মর্যাদা হাদিসের দৃষ্টিতে কতটুকু
শবে কদরের মর্যাদা সম্পর্কে হাদিসে খুবই স্পষ্টভাবে রয়েছে যে, শবে কদর খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি রাত। এই রাতে পবিত্র কোরআন মাজীদ নাযিল হয়। এই রাতে অসংখ্য ফেরেশতা পৃথিবীতে অবতরণ করেন এবং আল্লাহর অনুমতি ক্রমে দুনিয়ায় কল্যাণ এবং বরকত বর্ষণ করতে থাকেন। এটি এমন একটি রাত যেখানে সকাল হওয়া পর্যন্ত শান্তি বর্ষিত হতে থাকে। ঈমানদার বান্দাগণ এই রাতে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে তৃপ্তি লাভ করে।
কোন ঈমানদার বান্দাকে ইচ্ছা করলে স্বপ্নের মাধ্যমে শবে কদরের রাত সম্পর্কে জানিয়েও দিতে পারেন। শবে কদরের রাত অতিক্রম হয়ে যখন সকাল হয়, তখন হালকা আলোকরশ্মি দেখা যায়। হাদিসে লাইলাতুল কদরের মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই মাস খুবই মহিমান্বিত একটি মাস। শবে কদরের রজনী হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। যেই ব্যক্তি শবে কদরের কল্যাণ এবং বরকত থেকে বঞ্চিত হয় সে সকল কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হয়ে যায়। শুধুমাত্র হতভাগা যারা তারা এই কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হয়।
শবে কদর নিয়ে হাদিস শরীফে রাসূলের বাণী
শবে কদর নিয়ে হাদিস শরীফে রাসূলের বাণীগুলো খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝতে পারবেন। রাসূল আমাদের কাছে কত বড় একটি নিয়ামত রেখে গিয়েছেন। যিনি অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে চৌদ্দ বছর হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন ছিলেন। শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস শরীফে রাসূলের বাণীগুলো নিম্নরূপে দেখুন।
- আবদুল্লাহ বিন ওমর থেকে বর্ণিত রাসূল বলেছেন, যেই ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে চায় সে যেন রমজানের ২৭ তম রাত অনুসন্ধান করে।
- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, রমজানের শেষ দশ দিনে তোমরা কদরের রাতকে তালাশ করতে থাকো।
- হাদীস শরীফে আছে এই শবে কদরের রাতটি রমজান মাসে প্রতিবছরই আসে।
- সেই সাথে এই শবে কদরের রাতের ফযীলত কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীতে জারি থাকবে।
- রাসূলুল্লাহ বলেছেন, যেই ব্যক্তি ঈমান এবং সওয়াব পাওয়ার আশায় নফল ইবাদত করবে। আল্লাহ তাকে অনেক নেয়ামত দান করবেন।
- শবে কদরের রাতে নফল নামাজ আদায় করার মাধ্যমে একজন মুমিন তার অতীতের সকল গুনাহ থেকে পবিত্র হয়ে যায়।
শবে কদর কি শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে হয়
শবে কদর রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে তালাশ করতে হয়। কারণ এই বেজোড় রাতেই শবে কদরের অনুসন্ধান করা যায়। রমজান মাসের শেষ বেজোড় রাতের মধ্যে আপনি খুব ভালোভাবেই তালাশ করলে বুঝতে পারবেন। শবে কদর সম্পর্কিত হাদিস এর মধ্যে এই রাতের কিছুটা আভাস পাওয়া যায়। যদিও আপনি বুঝতে পারবেন এই কদরের রাতে গরমও লাগছে না ঠান্ডাও লাগছে না। এছাড়াও শবে কদরের রাতে আবহাওয়া খুবই প্রশান্তির থাকে।
এই রাতে চাঁদ খুবই উজ্জ্বল হয় এবং স্বচ্ছ থাকে। কোন রকমের উল্কাপিন্ড আকাশে দেখা যায় না। রাতের চাঁদের মতই সকালের সূর্য দেখা যায়। অন্য সময় সূর্য সকালবেলা উঠে যেই রকম উজ্জ্বল আলো দেখা যায় ঠিক এই রকম মনে হয় না। এই শবে কদরের রাতে শয়তান কোনোভাবেই বের হতে পারে না। তীব্র কোন ধরনের আলোকরশ্মি দেখা যায় না। এই রাত খুবই প্রফুল্লময় হয়। আবহাওয়া খুবই প্রশান্তি থাকায় ঠান্ডা বা গরম কোনটাই অনুভব করা যায় না। ছোট্ট নুড়ি পাথরের চেয়েও অসংখ্য ফেরেশতা পৃথিবীতে নেমে আসে।
শবে কদরের রাত চেনার উপায় কি
শবে কদরের রাত চেনার উপায় অর্থাৎ কিছু আলামত রয়েছে যা দেখে আপনি খুব সহজেই বুঝতে পারবেন এই রাত্রি শবে কদরের রাত। শবে কদরের রাতে যেই বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলে আপনি বুঝতে পারবেন এই রাত্রি লাইলাতুল কদরের রাত। যেই সকল বিষয় দেখে এই শ্রেষ্ঠ রাতকে তালাশ করে আপনি নির্ধারণ করতে পারবেন চলুন সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
- হাদিসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেন, এই রাতের আলামত হলো রজনীর শেষের দিক।
- অর্থাৎ সকাল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত রাত অনেক উজ্জ্বল মনে হবে।
- কিন্তু সকালে যখন সূর্য উদয় হবে, তখন কোন ধরনের তীব্র কোন আলো দেখা যাবে না।
- যতটুকু দিনের আলো উজ্জ্বল থাকে ঠিক ততটুকু থাকবে না।
- আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলকে বলতে শুনেছেন লাইলাতুল কদরের রাত খুবই প্রফুল্লময় হবে।
- এটি খুব বেশি ঠান্ডা বা গরম হবে না। সূর্য যখন সকালে উদয় হবে তখন অনেকটা লাল বর্ণের হবে।
- আল্লাহ তায়ালা এই রাতে ঈমানদার বান্দাগণের সকল পাপ ক্ষমা করে দিবেন।
- এই রাতের চাঁদ অনেক উজ্জ্বল হবে এবং সকাল হওয়া পর্যন্ত আকাশে এই রাতের চাঁদ অনেক উজ্জ্বল হবে।
- শয়তান এই রাতে বের হতে পারে না অর্থাৎ এই রাতে নুড়ি পাথরের চেয়েও অনেক বেশি সংখ্যক ফেরেশতা পৃথিবীতে নেমে আসে।
শবে কদর রাতে কি ভাগ্য লেখা হয়
শবে কদরের রাত ভাগ্য রজনীর রাত যা প্রত্যেক মুসলিম নর নারীর জীবনের নতুন উদয়। এই রাতে ইবাদত বন্দেগি, জিকির, তেলাওয়াত, তওবা, ইস্তেগফার বেশি বেশি করলে আল্লাহ তায়ালা খুবই খুশি হোন। সুবহে সাদিক পর্যন্ত যেই সকল বান্দারা ইবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকে, মহান আল্লাহ তায়ালা তাদের সকল নেয়ামত দান করেন। সেই সাথে তাদের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন হয়। ভাগ্যলিপি এমনই এক জিনিস যদি আপনার ভাগ্যে ভালো কিছু লেখা হয় তাহলে আপনার জীবন সুন্দর এবং পূণ্যময় হবে।
আরো পড়ুনঃ রমজানের শেষ ১০ দিনের আমল কি
আর যদি আপনি এই রাতকে অবহেলা করেন এবং রাতে নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হোন, তাহলে আপনার চেয়ে দুর্ভাগা আর কেউ হবে না। আপনি যেই রকম মূল্যায়ন এই রাতকে করবেন আপনার জীবন সেই রকমই হবে। যেহেতু এটি একটি বরকতময় রজনী। তাই এই মহিমান্বিত রাতে রহমত এবং করুণা বর্ষিত হয়। যেই ব্যক্তি ঈমানের সাথে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রেখে লাইলাতুল কদরে ইবাদত বন্দেগী করবে, আল্লাহ তার জীবনের সমস্ত গুনাহকে ক্ষমা করে দিয়ে তাকে নিষ্পাপ করে দিবেন। শবে কদরে কিয়াম এর মাধ্যমে ইবাদত বন্দেগি করলে বান্দার গুনাহ খুব তাড়াতাড়ি মাফ হয়ে যায়।
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক, এক মহিমান্বিত রজনী শবে কদর যা হাজার বছরের চেয়ে পূণ্যময় রাত। শবে কদর সম্পর্কিত হাদিসগুলো আর্টিকেল থেকে পড়ার পর যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আশেপাশের সকল বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে পারেন। এই রাতের অন্বেষণে যারা আগ্রহী হয় তারা খুবই বরকতময় নেয়ামত পায়। আপনার মূল্যবান মতামত দিতে পোস্টের নিচে মন্তব্য করুন। ধন্যবাদ। 25275
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url