শবে বরাতের ফজিলত - শবে বরাতে করনীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতের রোজা কয়টিশবে বরাতের ফজিলত অনেক বেশি। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত শবে বরাত আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস জেনে রাখা জরুরি।
ইতিমধ্যেই শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস রয়েছে যা আমরা অনেকেই জানিনা। এইবার আগে থেকেই শবে বরাতের ফজিলত কত গুরু রয়েছে এবং কত গুরুত্বপূর্ণ সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
সূচিপত্রঃ শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস গুলো বিস্তারিত জেনে নিন
- শবে বরাতের ফজিলত
- শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
- শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
- শবে বরাতে করনীয় ও বর্জনীয়
- শবে বরাতের রোজা পালনের নিয়ম
- শবে বরাতে কয়টি রোজা করতে হয়
- শবে বরাত এর ফজিলত আল কাউসার
- শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
- শবে বরাত পালন করা কি
- লেখক এর শেষ মন্তব্য
শবে বরাতের ফজিলত
শবে বরাতের ফজিলত জানা থাকলে এই দিনটিতে ইবাদত করা খুব সহজ হয়ে যায়। আমরা অনেকেই শবেবরাত সম্পর্কে জানি কিন্তু ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর ফজিলত কত বেশি এই সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। কয়েকটি দিন রয়েছে যেগুলো ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত এই দিন গুলোর মধ্যে শবে বরাত অন্যতম একটি।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের রোজা কবে থেকে
শবে বরাতকে বলা হয় ক্ষমার রাত। সাধারণত সাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে শবে বরাত অর্থাৎ লাইলাতুল বরাত বলা হয়ে থাকে। সারা বিশ্বের মুসলিমের কাছে এই রাতটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর অনেক গুলো হাদিস থেকে জানা যায় যে এই রাতটি মুসলিম উম্মার কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
সাধারণত হাদিস থেকে জানা যায় যে আল্লাহতালা এই রাতে তার সকল বান্দাকে ক্ষমা করে দেয় শুধু যারা আল্লাহ তায়ালার সাথে শিরক করে এবং যারা বিদ্বেষ পোষণ করে সাধারণত তাদের ব্যথিত। তাহলে আমরা শবে বরাত কে ক্ষমার রাত হিসেবে বিবেচনা করতেই পারি। বর্তমান সময়ে যে সকল মুসলিম রয়েছে সাধারণত তারা শবে বরাত অনেক আনন্দের সাথে এবং ইবাদাত বন্দেগীর সাথে পালন করে থাকে।
শবে বরাতে কোন ধরনের ইবাদত গুলো করতে হবে সাধারণত এই সম্পর্কে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা রয়েছে। অনেকেই বলে থাকে যে এই রাতে বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে হবে অর্থাৎ নফল সালাত আদায় করতে হবে। আল্লাহতায়ালার জিকির করতে হবে এবং পরের দিনে রোজা পালন করতে হবে। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই এই রাত থেকে অবহেলা করে অন্যান্য সকল রাতের মতো কাটিয়ে থাকে।
শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
শবে বরাত এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিস রয়েছে। সাধারণত আমাদের মধ্যে এমন কিছু ব্যাক্তি রয়েছে যারা সুনির্দিষ্ট হাদিস ছাড়া কোন কিছু বিশ্বাস করে না। আপনাদের জানার সুবিধার্থে বলে রাখি যে শবে বরাত এর বিষয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর সুনির্দিষ্ট কিছু হাদিস রয়েছে। এই হাদিস গুলো যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে আমরা খুব সহজেই এই রাতে এবাদত বন্দেগি পালন করতে পারব।
হজরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, "এমন ৫ টি রাত রয়েছে যেগুলোতে আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না। রাত গুলো হলো, জুমার রাত, রজবের প্রথম রাত, শাবানের ১৫ তারিখের রাত, দুই ঈদের রাত।" {সুনানে বায়হাকিঃ ৬০৮৭} তাহলে এই হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে শবে বরাতের রাত হল মুসলিম উম্মাহর কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা রাত্রে।
মুআজ বিন জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবী সাঃ এরশাদ করেন, "আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে, অর্থাৎ শাবানের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে আল্লাহ তায়ালা তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দিয়ে থাকেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণ কারী ব্যতীত যারা আল্লাহ তাআলার ইবাদত পালন করেন সবাইকে ক্ষমা করে দেন।" {ইবনে হিব্বানঃ ৫৬৬৫}
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ফজিলত
শবে বরাতের ফজিলত প্রতিটি মুসলিমের জেনে থাকা উচিত। পরিবেশ কয়েকটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে শবে বরাত আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা যে রাতে আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন সেই রাতগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো শবে বরাত। শুধু আমাদেরকে আল্লাহ তালার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার কৌশল গুলো জেনে নিতে হবে।
লাইলাতুল বরাত হচ্ছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নেওয়ার রাত। সাধারণত এ রাতে অসংখ্য মানুষকে ক্ষমা করে দেওয়া হয় এবং এমন অনেক গুনাগার রয়েছে যারা সারা জীবন গুনাহ করেছে কিন্তু এই রাতে আল্লাহ তাআলার কাছে মন থেকে ক্ষমা চাওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলা তাকে মাফ করে দিয়েছেন। আল্লাহতালা এ রাতে প্রথম আসমানে চলে আসে এবং তার সকল বান্দাকে ডাকতে থাকে।
হজরত উসামা ইবনে জায়েদ রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত মোহাম্মদ সাঃ কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি আপনাকে শাবান মাস ব্যতীত অন্য কোনো মাসে এতো অধিক পরিমাণে রোজা রাখতে দেখিনি। তখন আর রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, "এটা ওই মাস যে মাস সম্পর্কে অধিকাংশ লোকই গাফেল থাকে। এটা রজব ও রমজান মাসের মধ্যবর্তী মাস।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস কারণ এই মাসে পৃথিবীর সকল মানুষের আমল সমূহ আল্লাহ তায়ালার কাছে পেশ করা হয়। আমার আকাঙ্ক্ষা যে, আমার আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে এ অবস্থায় পেশ করা হোক যে, আমি রোজাদার।" {নাসায়ি ও শোয়াবুল ঈমান} এই হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে শাবান মাসে বেশি বেশি রোজা পালন করতে হবে।
শবে বরাতে করনীয় ও বর্জনীয়
শবে বরাতে করনীয় ও বর্জনীয় একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে জেনে রাখা উচিত। যেহেতু শবে বরাতের রাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি মুসলিমের কাছে তাই এই রাতে কিছু করণীয় রয়েছে যেগুলো প্রতিটি মুসলমানের করা উচিত এবং কিছু বর্জনীয় কাজ রয়েছে যেগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকা উচিত। তাই এই মুহূর্তে চলুন শবে বরাতের করণীয় ও বর্জনীয় গুলো জেনে নেওয়া যাক।
করণীয়ঃ
- শবে বরাতের রাতে বেশি বেশি কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করতে হবে। যদি তেলাওয়াত করতেন না পারে তাহলে তেলাওয়াত শুনতে হবে।
- শবে বরাতের রাতে বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার জিকির-আজকার করতে হবে।
- একটু বেশি সময় নিয়ে বেশি করে নফল ইবাদত এর মধ্যে অন্যতম নফল সালাত আদায় করতে হবে।
- শবে বরাতের রাতে সালাতুত তাসবীহ পড়ার চেষ্টা করতে হবে।
- শবে বরাতের রাতে যত পারা যায় বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে।
- যত পরিমাণে পারা যায় আমাদের চোখ থেকে পানি বের করে আল্লাহ তায়ালার কাছে সকল মুসলিমের জন্য এবং আমাদের মৃত আত্মীয়-স্বজন এবং আমাদের নিজেদের পরিবারের জন্য দোয়া করতে হবে।
- শবে বরাতের পরের দিনে আমাদেরকে অবশ্যই সিয়াম পালন করতে হবে।
- যদি পরিবারের কোনো সদস্য মারা যায় তাহলে সম্ভব হলে শবে বরাতের রাতে একাকী কবর জিয়ারত করতে হবে।
বর্জনীয়ঃ
- শবে বরাতের রাত উপলক্ষে মসজিদে কোন ধরনের জনসমাগমের আয়োজন করা যাবে না সাধারণত এগুলো নিষিদ্ধ।
- শবে বরাতের রাত উপলক্ষে মসজিদে অথবা নিজের বাড়িতে কোন অতিরিক্ত লাইটিং করা যাবে না। ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এগুলো নিষিদ্ধ।
- শবে বরাতের রাত উপলক্ষে ইবাদত মনে করে হালুয়া-রুটি তৈরি করা এবং সবার মাঝে বিলিয়ে দেওয়া যাবে না এগুলো বিদআত।
- শবে বরাতের রাতে ইবাদত মনে করে গরু অথবা খাসি জবেহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- শবে বরাতের রাতে কোন ধরনের আতশবাজি,পটকা ফোটানো যাবে না। সাধারণত এগুলো হারাম।
- এই রাতে এবাদত বন্দেগি বাদ দিয়ে ঘোরাফেরা করা যাবে না। অশ্লীল এবং অপরাধ কাজ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
- শবে বরাতের রাতে অনেক জন মিলে একসাথে কবরস্থানে যাওয়া যাবেনা।
শবে বরাতের রোজা পালনের নিয়ম
শবে বরাতের ফজিলত ইতিমধ্যে জেনেছেন এর সাথে অবশ্যই আপনাকে শবে বরাতের রোজা পালনের নিয়ম গুলো জেনে রাখতে হবে। সাধারণত আল্লাহতালার সন্তুষ্ট অর্জন করার জন্য আমাদেরকে শবে বরাতের দিবাগত রাত্রে ইবাদত পালনের পরের দিনে আমাদেরকে সিয়াম পালন করতে হয়। শবে বরাতের রোজা পালনের বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে চলুন সেই নিয়মগুলো জেনে নেওয়া যাক।
রমজান মাসের রোজা যেভাবে পালন করে থাকেন ঠিক একই নিয়মে শবে বরাত সহ অন্যান্য সকল রোজা রয়েছে সবগুলোই পালন করতে হয়। মানুষের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্ধে রয়েছে যে শবে বরাতের কোন দিনে রোজা পালন করতে হয় এবং কয়টি রোজা পালন করতে হয়? হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, "যখন শাবান মাসের মধ্য দিবস আসে তখন রাত্রে ইবাদত পালন করো এবং দিনের বেলায় সিয়াম পালন কর।" {সুনানে ইবনে মাজাহ}
শবে বরাতের রোজা পালন করতে হবে এরকম কোন দিকনির্দেশনা নেই। সাধারণত এটি আপনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। যদি আপনি চান তাহলে শবে বরাতের রোজা পালন করতে পারেন আপনি অনেক বেশি সব পাবেন যদি কোন কারণে বাদ দিতে চান তাহলে বা দিতে পারেন এতে আপনার কোন গুনাহ হবে না। এ রোজা রাখার কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই স্বাভাবিক যেভাবে রোজা পালন করতে হয় সেভাবেই করতে হবে।
শবে বরাতে কয়টি রোজা করতে হয়
শবে বরাতে কয়টি রোজা করতে হয়? সাধারণত এরকম প্রশ্ন যখন শবে বরাতের দিন আসে তখন করা হয়ে থাকে। কারণ অনেক মুসলিম রয়েছে যারা জানে না শবে বরাতের কয়টি রোজা পালন করতে হয়। এ বিষয়টির মধ্যে মানুষের মত বিভেদ রয়েছে। কারণ অনেকেই বলে থাকে যে শবে বরাতের রোজা একটি পালন করলে যথেষ্ট আবার অনেকেই বলে থাকে যে তিনটি পালন করতে হবে।
শবে বরাত উপলক্ষে আমাদেরকে অবশ্যই রাতের বেলায় আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগী পালন করতে হবে এবং দিনের বেলায় সিয়াম পালন করতে হবে এটি আমার প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর নির্দেশনা। সাধারণত এই দিনটিতে রোজা রাখার বিশেষ কিছু ফজিলত পাওয়া যায়। তবে এটি ফরজ রোজা নয় তাই আপনি যদি না চান তাহলে রোজা পালন করা থেকে বিরত থাকতে পারেন।
হজরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, ১৫ শাবানের রাত অর্থাৎ ১৪ তারিখ দিবাগত রাত যখন আসে তখন তোমরা সেই রাত্রিকে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালন করো এবং পরদিন রোজা রাখ। {ইবনে মাজাঃ ১৩৮৪} বেশির ভাগ হাদিস থেকেই জানা যায় যে একটি দিন রোজা করাই যথেষ্ট। তাই শবে বরাতের পরের দিন আমাদেরকে সিয়াম পালন করতে হবে।
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিন তোমাদের মাঝে আসে তখন তোমরা রাতের বেলায় নফল ইবাদত পালন করো এবং দিনে রোজা পালন কর। তাছাড়া প্রতি হিজরী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামে বিজের নফল রোজা গুলো রয়েছে। সাধারণত এর রোজাগুলো আমাদের আদি পিতা হজরত আদম আঃ পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী সাঃ পালন করেছেন।
শবে বরাত এর ফজিলত আল কাউসার
শবে বরাত এর ফজিলত আল কাউসার কি বলে? চলুন জেনে নেওয়া যাক। আমরা ইতিমধ্যেই শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনেছি। প্রতিটি মুসলিমের জন্য এই রাতটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আল্লাহতালা এই রাতে আমাদেরকে প্রত্যেককে ক্ষমা করে থাকেন। আমাদের সকলের উচিত এ রাতে এবাদত পালন করে জীবনের সকল গুনাহ গুলোকে মাফ করে নেওয়া।
হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে আছে, নবী সাঃ রমযান ছাড়া শাবান মাসে সর্বাধিক রোযা রাখতেন। আয়েশা রাঃ বলেন, "আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রমযান ছাড়া অন্য কোনো মাসে পূর্ণ মাস রোযা রাখতে দেখিনি। আর আমি তাঁকে হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে রমযান ছাড়া শাবান মাস অপেক্ষা অধিক রোযা রাখতে আর কোনো মাসে দেখিনি।" {সহীহ বুখারীঃ ১৯৬৯}
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন, " শাবান মাস হল রজব মাস এবং রমজানের মধ্যবর্তী মাস। শাবান মাসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য সম্পর্কে অনেক মানুষ গাফেল থাকে। যার ফলে তারা সঠিক ইবাদত পালন করতে পারে না। হিজরী বছরের শাবান মাসটি এমন একটি মাস এই মাসে আল্লাহ তা'আলার কাছে বান্দার সকল আমল পেশ করা হয়। তাই আমি চাই যে রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমল গুলো (আল্লাহতালার কাছে পেশ করা হোক।" {মুসনাদে আহমাদঃ ২১৭৫৩}
শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনের আয়াত
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেছেন কিন্তু এই সম্পর্কে কোরআনের কোন আয়াত আছে কিনা চলুন জেনে নেওয়া যাক। আমরা জানি যে কোরআন হলো পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব। এমন কোন বিষয় নেই যেগুলো কোরআনে উল্লেখ করা নেই। আল্লাহ তাআলা তার বান্দার জন্য সকল বিষয়ে কোরআনে উল্লেখ করেছেন। শবে বরাত সম্পর্কে কোরআনে কি বলা আছে? চলুন জেনে নেই।
মহান আল্লাহ বলেন, "হা-মীম, এ স্পষ্ট কিতাবের শপথ! নিশ্চয়ই আমি তা বরকতময় রাতে অবতীর্ণ করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী। এ রাতে বন্টন করে দেওয়া হয় প্রত্যেক হিকমতের কাজ" {সূরা দুখানঃ ১-৪} আল্লাহতালা এই আয়াতে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন যে তিনি তার বান্দাকে ক্ষমা করার জন্যই এরকম বরকতময় রাত অবতীর্ণ করেছেন।
হজরত মুআজ ইবনে জাবাল রাঃ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন, "আল্লাহ তাআলা অর্ধ শাবানের রাতে তার সকল মাখলুকের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন এবং পৃথিবীতে যে সকল মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী রয়েছে তাদের ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন।" {ইবনে হিব্বানঃ ৫৬৬৫, ইবনে মাজাহঃ ১৩৯০}
শবে বরাত পালন করা কি
শবে বরাত পালন করা কি জায়েজ কিনা? আমাদের অনেকের মাঝেই দ্বিধা দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে বেশিরভাগ মানুষ মনে করে থাকে যে শবে বরাত পালন করা জায়েজ। কিন্তু শবে বরাতের নামে বিভিন্ন ধরনের বিদআত রয়েছে এগুলো পালন করা জায়েজ নয়। যেমন আমাদের সমাজে দেখা যায় যে শবে বরাত উপলক্ষে অনেকে হালুয়া রুটি করে থাকে কিন্তু এমনটা বিদআত।
আরো পড়ুনঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়
কারণ আমাদের উপমহাদেশের কিছু মানুষ মনে করে থাকে যে আমাদের নবীজির শবে বরাতের দিনে তায়েফবাসীর অত্যাচারের কারণে দাঁত হারিয়ে ফেলবেন সাধারণত এ কারণে তিনি হালুয়া রুটি খেয়েছিলেন তাই শবে বরাতে কিছু মানুষ হালুয়া রুটি খেয়ে থাকে এই কাজগুলো করা সম্পূর্ণ বিদআত। তাই নিজেকে বিদআত থেকে বিরত রেখে নফল ইবাদত করা এবং আল্লাহতালার নামে জিকির করা এবং দিনের বেলায় রোজা পালন করা জায়েজ।
লেখক এর শেষ মন্তব্য
শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা শুরু করে শবে বরাত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়ে গিয়েছে। আপনার যদি শবে বরাত সম্পর্কে কোন ধরনের ধারণা না থাকে তাহলে এই আর্টিকেল আপনার জন্যই। সাধারণত এই আর্টিকেল পড়ে আপনি শবে বরাতের ফজিলত এবং শবে শবে বরাতের কোন ইবাদত গুলো পালন করতে হয় এই বিষয়ে জানতে পারবেন।
আশা করি আপনারা ইতিমধ্যেই বিষয় গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। এতক্ষন আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। যদি এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক বিষয় জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। 20791
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url