দুশ্চিন্তা দূর করার কার্যকরী ২০ উপায় - দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ১০টি হাদিসদুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ এর নাম অনেকেই জানতে চাই। আমরা মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেই বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকি। তাই আমাদের দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে রাখা জরুরী।
আপনি যদি বিভিন্ন ধরনের চিন্তায় পড়ে থাকেন এবং দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেল আপনার জন্য। এখানে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
সূচিপত্রঃ দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার ঔষধ - দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
- দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ
- দুশ্চিন্তার ফলে কোন ক্ষতি হয়ে থাকে
- দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
- ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ঔষধ
- দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়
- দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া
- হতাশা দূর করার উপায়
- দুশ্চিন্তায় পড়লে করণীয়
- মানসিক শান্তি পাওয়ার দোয়া
- লেখকের শেষ মন্তব্য
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে অবশ্যই দুশ্চিন্তা কেন হয় এই বিষয়টি ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। দুশ্চিন্তা হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে মানুষ বিভিন্ন কারণে দুশ্চিন্তায় পড়ে থাকে। তবে দুশ্চিন্তার কোন ওষুধ নেই আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে মানসিক ভাবে ভালো থাকতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ঘুম থেকে উঠার পরে বুক ধরফর করার ১৮ টি কারণ
দুশ্চিন্তার একমাত্র ওষুধ হলো আপনি যে কারণে দুশ্চিন্তা করছেন সে কারণটি বের করা এবং সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে আসা। অনেক সময় আমরা একলা থাকি যার ফলে আরো বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই। তাই নিজের মনের কথাগুলো অন্যকে শেয়ার করা এতে করে দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যায় কারণ আমরা আমাদের মনের ভাবগুলো অন্যকে প্রকাশ করতে পারি।
দুশ্চিন্তার অন্যতম প্রধান ওষুধ হলো নিজেকে সবসময় অন্য কাজে ব্যস্ত রাখা। আমরা অনেকে আছি যারা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করি এর অন্যতম কারণ হলো সব সময় কাজ না করে বসে থাকা। যদি আপনি এমনটা করেন তাহলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবেন। তাই নিজেকে সবসময় যে কোন কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করবেন তাহলে দুশ্চিন্তা ভুলে থাকতে পারবেন।
যেহেতু দুশ্চিন্তা একটি মনের ব্যাপার তাই কোন ধরনের ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়। আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণ চিন্তা হয়ে থাকে তাহলে আপনি একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। নিজে নিজে কোন ধরনের ওষুধ নির্বাচন করে খাওয়া ঠিক নয় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাবেন তাহলে এই সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন।
দুশ্চিন্তার ফলে কোন ক্ষতি হয়ে থাকে
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে যেহেতু আলোচনা করছি তাই আমাদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে কোন ধরনের ক্ষতিগুলো হয়ে থাকে এ বিষয়টি সম্পর্কে একটা ধারণা রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সামান্য বিষয় নিয়ে অনেক বেশি দুঃচিন্তা করে থাকে। এই দুশ্চিন্তা গুলো করার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি হয় যা আমরা নিজেরাও জানিনা।
- ঘুমের সমস্যা হওয়া
- হরমোন ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যাওয়া
- রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
- হৃদরোগ হওয়া
- বদমেজাজি হয়ে যাওয়া
ঘুমের সমস্যা হওয়া -- যদি আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি তাহলে প্রথম যে সমস্যাটি দেখা দেবে সেটা হল ঘুমের সমস্যা। সুস্থ থাকার জন্য আমাদের কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। কিন্তু অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার ফলে এই সময়টুকু ঘুমানো হয় না যার ফলে ঘুমের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
হরমোন ব্যালান্স নষ্ট হয়ে যাওয়া -- আমাদের শরীরে হরমোন ব্যালেন্স অবস্থায় থাকে। তবে আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি তাহলে এই ব্যালেন্স অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা হলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্ষতি হয়ে থাকে।
রক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া -- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করতে যে সমস্যাটি বেশি দেখা যায় সেটি হল অতিরিক্ত রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া। রক্তচাপ সব সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে কিন্তু আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে চিন্তা করি যার ফলে আমাদের রক্তচাপ অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে।
হৃদরোগ হওয়া -- অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলে মানুষের হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে যাদের হাঁটার সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণের দুশ্চিন্তা করা।
বদমেজাজি হয়ে যাওয়া -- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার ফলে আমরা আমাদের স্বাভাবিক কাজের কথা ভুলে যায়। অন্যদিকে দুশ্চিন্তা করার ফলে আমরা যাকে তাকে রাগ দেখায়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার ফলে যে ক্ষতিগুলো হয়ে থাকে এগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি।
দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়
দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় সম্পর্কে জানা অত্যন্ত জরুরী। চিন্তা হলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতি করার একটি বিষয়। আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা গুলো সমাধানের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। এখন আমরা কিন্তু চিন্তা দূর করার উপায় জানব।
- খাদ্য তালিকা ঠিক রাখা
- প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া
- মেডিটেশন করা
- সকালে ঘুম থেকে ওঠা
- সকালবেলা হাটাহাটি করা
- নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা
- টেনশন হলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া
- হাসার চেষ্টা করা
- সবার সাথে কথা বলা
খাদ্য তালিকা ঠিক রাখা -- অনেক সময় আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি এবং এই দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায় যদি আমরা সঠিক খাবার না খাই তাহলে। নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই খাদ্য তালিকা ঠিক রাখতে হবে।
প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া -- খাদ্য তালিকা ঠিক করার সময় অবশ্যই আমাদেরকে প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। আমাদের শরীরে প্রোটিনের অভাব হলে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় এবং আমরা এটি নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করি তাই প্রোটিন যুক্ত খাবার খেতে হবে।
মেডিটেশন করা -- কিন্তু চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার আরো একটি অন্যতম প্রধান উপায় হল মেডিটেশন করা। মেডিটেশন হল এক ধরনের ব্যায়াম। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত যে আপনি যদি দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত মেডিটেশন করতে হবে।
সকালে ঘুম থেকে ওঠা -- অনেক সময় আমরা রাতে সঠিক ভাবে ঘুমায় না এবং সকালে সঠিক সময়ে ঘুম থেকে উঠে না যার ফলে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণে অসুস্থ হয়ে যায়। এটি হচ্ছে দুশ্চিন্তা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ তাই সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে হবে।
সকালবেলা হাটাহাটি করা -- সকাল বেলা হাটাহাটি করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। যদি আমরা সকালবেলার আবহাওয়ায় কিছুক্ষণ হাঁটতে পারি তাহলে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। তাই সকালবেলা হাটাহাটির অভ্যাস করতে হবে।
নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা -- খালি বসে থাকার কারণে অনেক সময় আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণের দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে। কারণ আমাদের কাছে অন্যান্য কোন কাজ থাকে না তাই এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে হবে।
টেনশন হলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া -- যদি আপনার ওপরের কাজ গুলো করার পরে টেনশন মুক্ত না হয় তাহলে অবশ্যই টেনশন দূর করার জন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের উপরে আসতে হবে। বাংলাদেশে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেমন কক্সবাজার, সাজেক ঘুরে আসতে পারেন।
হাসার চেষ্টা করা -- অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলে আমাদের মুখ দিয়ে হাসি বের হয় না। সাধারণত তাই আমরা আরো বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। যদি আপনি দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই হাসার চেষ্টা করতে হবে।
সবার সাথে কথা বলা -- মানুষের সাথে কথা বললে আমাদের মনের ভাবগুলো মানুষকে বলতে পারলে অনেক সময় আমাদের কিন্তু চিন্তা দূর হয়। বিশেষ করে পরিবারের মধ্যে বাবা-মা অথবা বিয়ে হলে স্ত্রীকে নিজের মনের কথাগুলো বলতে হবে তাহলে অনেকটাই দুশ্চিন্তা দূর হবে।
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ঔষধ
ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে জানতে চান আমরা ইতিমধ্যেই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কোন ধরনের তৈরি করা ওষুধ খেলে দুশ্চিন্তা দূর হবে না আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই মন থেকে দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে। ইতিমধ্যে দুশ্চিন্তা দূর করার বেশ কিছু উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে তাও যদি না হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক আপনার সমস্যাগুলো শুনবে তারপরে সমস্যার সমাধানের জন্য ওষুধ লিখে দিবে। নিজে থেকে কখনোই কোন ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। ডিপ্রেস ৫এম জি ট্যাবলেট নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নেওয়া হয়ে থাকে।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন। ইসলাম এর মধ্যে সকল বিষয়ের সমাধান দেওয়া রয়েছে। কোন কারণে যদি আপনার অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই নিজেকে এই দুশ্চিন্তা গুলো থেকে মুক্ত করতে পারবেন। সেই জন্য আপনাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়ার ইসলামিক উপায় গুলো জানতে হবে।
- তাকদিরের ওপর বিশ্বাস
- পরকালের কথা স্মরণ
- ধৈর্য ধারণ করা
- কোরআন শরীফ পাঠ করা
- তেলাওয়াত শোনা
- আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করা
- বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা
- নামাজ আদায় করা
তাকদিরের ওপর বিশ্বাস -- দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই তাকদীরের উপর বিশ্বাস করতে হবে। অনেক সময় আমরা নিজের অজান্তে তাকদিরের ওপর অবিশ্বাস করে ফেলি যার ফলে আরো বেশি দুশ্চিন্তায় চলে যায়।
পরকালের কথা স্মরণ -- আমরা যখন কোন বিপদের মধ্যে পড়ি সাধারণত তখন পরকালের কথা ভুলে যায়। এ বিষয়টি একেবারেই করা উচিত নয়। যদি দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে চাই তাহলে আমাদের অবশ্য পরকালের কথা চিন্তা করতে হবে।
ধৈর্য ধারণ করা -- দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হওয়ার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে ধৈর্য ধারণ করা। ধৈর্য হচ্ছে সকল সফলতার চাবিকাঠি। আপনি যদি ধৈর্য ধারণ করতে পারেন যেকোনো কাজে এবং দুশ্চিন্তা না করে আল্লাহর উপর ছেড়ে দেন তাহলে সকল কাজে সফল হবেন।
কোরআন শরীফ পাঠ করা -- যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তায় ভুগে থাকেন তাহলে কোরআন শরীফ পাঠ করুন। কোরআন হলো আল্লাহ তালার কেতাব। এর মধ্যে রয়েছে সকল সমস্যার সমাধান তাই নিয়মিত কোরআন পাঠ করুন।
তেলাওয়াত শোনা -- আমরা অনেকেই কোরআন তেলাওয়াত করতে পারি না এতে কোন সমস্যা নেই যদি আপনি দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তাহলে গান না শুনে কোরআন তেলাওয়াত শুনুন। এতে করে আপনার নেকি হবে এবং কোরআন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আল্লাহ তায়ালার ব্যাপারে সুধারণা পোষণ করা -- আমরা যখন কোন বিপদের মধ্যে পড়ে যায় সাধারণত তখন আল্লাহতালার ব্যাপারে খারাপ চিন্তা মাথায় আসে। এই কাজ কখনোই করা যাবে না কারণ আল্লাহতালা আমাদের পরীক্ষা করে। সবসময় আল্লাহতালার ব্যাপারে সুধারণা করতে হবে।
বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা -- নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করা আরও একটি অন্যতম প্রধান উপায় হল বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়তে হবে। আমরা আমাদের অজান্তে এবং জেনে বিভিন্ন ধরনের পাপ কাজ করে থাকি। সবসময় আল্লাহ তায়ালার কাছে ইস্তেগফার অর্থাৎ ক্ষমা চাইতে হবে।
নামাজ আদায় করা -- একটি ফরজ ইবাদত হল নামাজ। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই নামাজ আদায় করা উচিত। তাই আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করে দিন।
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সেবন করে কোন লাভ নেই অবশ্যই আমাদেরকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে হলে আল্লাহতালার কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে হবে। একমাত্র আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে এই সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারবে। বেশ কিছু দোয়া রয়েছে যেগুলো করলে আমরা নিজেকে আমরা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করতে পারব।
হাদিসে রাসুল সাঃ বলেন, এমন একটি দোয়া সম্পর্কে আমি অবগত আছি যেটি কোনো বিপদগ্রস্ত ব্যক্তি পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তার বিপদ থেকে মুক্ত করবেন। এই দোয়াটি হযরত ইউনুস আঃ এর দোয়া। দোয়াটি নিজে উল্লেখ করা হলো।
আরবিঃ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ، إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ
উচ্চারণঃ লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই, আমি আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি নিজের প্রতি অবিচার করেছি। {তিরমিজিঃ ৩৫০৫}
হতাশা দূর করার উপায়
হতাশা দূর করার উপায় সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি উপরের আলোচনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে কিভাবে নিজেকে হতাশা থেকে মুক্ত করবেন এই বিষয় গুলো জানতে পেরেছেন। দুশ্চিন্তা থেকে আমাদের মনে হতাশা চলে আসে সাধারণত আমরা যখন কোন কাজ করতে পারি না তখন হতাশ হয়ে যায়।
অথবা আমরা যে কাজটি করতে পারিনি অন্য কেউ যদি ওই কাজটি করে ফেলে তখন আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে হতাশ হয়ে যায়। এখন এই হতাশা থেকে মুক্তি হতে হলে আমাদেরকে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। আমরা আগেই মনে করে নেই যে আমরা এই কাজটি করতে পারব না যার ফলে সেই কাজটি করতে পারিনা।
তাই হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলা। এরপরে যে বিষয়ের উপরে আমরা হতাশ হচ্ছি সেই বিষয়টি নির্ণয় করা। নিজেকে হতাশ হওয়া থেকে মুক্ত করার জন্য সে কাজটি বাদ দেওয়া এবং অন্য কাজের দিকে মনোযোগী হওয়া। এ ছাড়া বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে আমরা হতাশ মুক্ত হতে পারবো।
দুশ্চিন্তায় পড়লে করণীয়
দুশ্চিন্তায় পড়লে করণীয় এগুলো সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি একজন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাকারী মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওপরে আলোচনা করা উপায় গুলো অবলম্বন করে নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করতে হবে। কিন্তু চিন্তা হলো আমাদের প্রধান শত্রু। তাই কখনো দুশ্চিন্তাকে নিজের মনের ভেতরের পোষণ করা যাবে না।
যদি অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে তাহলে কি কারণে দুশ্চিন্তা করছি সে কারণটি আগে খুঁজে বের করতে হবে এরপরে নিজেকে সেখান থেকে বের করতে হবে। এখন আপনি যদি নিজেকে সেই দুশ্চিন্তার জায়গা থেকে বের করতে চান তাহলে অন্য কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। সব সময় বসে থাকার কারণে শুধু চিন্তা আর আমাদের ভেতরে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরনের বিপদ হতে পারে।
তাই তো চিন্তা মুক্ত করার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। খাদ্য তালিকা ঠিক রাখতে হবে এবং খাদ্য তালিকায় প্রোটিন সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান রাখতে হবে। দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য বাইরে থেকে ঘুরে আসতে হবে। কারণ আমরা যখন বাইরে যাবো ঘোরাফেরা করবো তখন অনেকটাই আমাদের দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে।
মানসিক শান্তি পাওয়ার দোয়া
মানসিক শান্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য মানুষের শান্তি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যদি মানসিক শান্তি না থাকে তাহলে আমরা কখনোই ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবো না। এই মানসিক শান্তি না থাকলে বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা মাথায় চেপে বসে। এখন আপনি যদি মানসিক শান্তি পেতে চান তাহলে আপনাকে বেশ কিছু কাজ করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ শিশুর জ্বর হলে করণীয় - শিশুর জ্বর কমানোর ২০টি উপায়
মানসিক শান্তি পেতে হলে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া চাইতে হবে। আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়ার মাধ্যমে নিজের মানুষকে শান্তি ফিরে পেতে পারি। কারণ ইসলামে সব কিছুর সমাধান দেওয়া রয়েছে।
আরবিঃ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَالعَجزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخلِ وَالجُبنِ، وَضَلَعِ الدَّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ
বাংলা উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি, ওয়া আউজু বিকা মিনাল আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজু বিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।
বাংলা অর্থঃ হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন, পীড়ন থেকে আপনার আশ্রয় নিচ্ছি। হযরত আনাস রাঃ বর্ণনা করেন, রাসুল সাঃ চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় এই দোয়া পড়তেন। {বুখারিঃ ২৮৯৩}
লেখকের শেষ মন্তব্য
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করে থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো কোনো ধরনের ওষুধ খাবেন না। ওষুধ না খেয়ে যে সকল উপায়ে নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করা যায় সেই উপায়গুলো অবলম্বন করবেন। আশা করি এই বিষয়গুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজে নিজেকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করতে পারবেন।
দুশ্চিন্তা হলো আমাদের প্রধান শত্রু। যার ভেতরে একবার দুশ্চিন্তার ঢুকে গেছে সাধারণত এই দুশ্চিন্তা বের করা খুবই কঠিন। এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনি যদি এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত জানতে চান তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। 20791
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url