আলুর প্রয়োজনীয় ১৬ উপকারিতা ও ০৭ অপকারিতা - আলু খাওয়ার নিয়ম
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। আলু আমাদের নিত্য দিনের
খাদ্য তালিকায় থাকা একটি সাধারণ সবজি। আলুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে।
পুষ্টিগুণ গুলো সঠিকভাবে পাওয়ার জন্য নিয়ম অনুযায়ী আলু খেতে হবে। তাই আমরা
আলোচনা করব আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আলু খাওয়ার নিয়ম গুলো কি কি।
আলু খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কোন নিয়মে আলু খেলে
উপকারিতা গুলো সঠিকভাবে পাওয়া যায় এবং অপকারিতা গুলো দূর করা যায় সেসব
সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য সম্পূর্ন আর্টিকেলটি
মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা - আলু খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি আলু খাওয়ার নিয়ম
আমরা অনেকেই মিষ্টি আলু খেতে খুব পছন্দ করি। আর পছন্দের খাবারটি আমরা এমন ভাবে
খায় যাতে করে আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আজকে আমরা
আলোচনা করব মিষ্টি আলু খাওয়ার নিয়ম। ধরুন আপনি মিষ্টি আলু খাওয়ার জন্য বাজার
থেকে কিনে নিয়ে এসেছে এরপর কাজ হবে মিষ্টি আলু খাওয়ার আগে আলু গুলো ভালোভাবে
রান্না করে খেতে হবে কাঁচা খাওয়া উচিত নয়। মিষ্টি আলু রান্না করলে এদের থাকা
পুষ্টি উপাদানগুলোর মান ঠিক রাখা যায়। আমরা যদি মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে খায়
তাহলে এতে থাকা ভিটামিন-এ বিটা ক্যারোটিন সহজে আমাদের হজম হয়।
আর আলুতে প্রচুর পরিমাণে সুগার থাকে সেই জন্য আমরা যদি মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে খাই
তাহলে আমাদের রক্তের সুগারের সংখ্যা পরিমান মত পৌঁছে যায়। যেহেতু গোলআলুর প্রায়
সকল উপকারী পুষ্টিগুণ মিষ্টি আলুতে রয়েছে। তাই এটি আমাদের শরীরের জন্য খুবই
পুষ্টিকর খাবার। যদি আপনি সঠিক নিয়ম মেনে মিষ্টি আলু গুলো খেতে পারেন। আর যেহেতু
আমাদের খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে রঙিন শাকসবজি রাখা উচিত তাই এই দিকটি
সঠিকভাবে পূরণ করতে সাহায্য করে। মিষ্টি আলুকে খুব বেশি পরিমাণে সেদ্ধ বা
অনেকক্ষণ রান্না করা উচিত নয় এতে করে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়।
মিষ্টি আলোর সাথে অবশ্যই আপনি কিছু পরিমাণ ফ্যাট খেতে পারেন এতে করে ভিটামিন-এ এর
মত ভিটামিন এবং ফ্যাট সলিউবল ভালোভাবে মিশে যেতে পারে। মিষ্টি আলোর সাথে সবচেয়ে
আদর্শ বা স্বাস্থ্যসম্মত কম্বিনেশন হল অলিভ অয়েল। এছাড়াও মিষ্টি আলোর সাথে আপনি
আরও কিছু যোগ করতে পারেন যেমন আখরোট, পিক্যান এবং অ্যাভোক্যাডো এর মত উপাদানসমূহ।
আপনি অবশ্যই রাতে মিষ্টি আলু খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন কারণ এটি ওজন বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে এছাড়া আপনার ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। মিষ্টি আলু
খাওয়ার সঠিক সময় হলো সকালের খাবারের সাথে খাওয়া যাতে করে সারাদিন আপনাকে শক্তি
যোগাতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করবে। মিষ্টি আলু আপনার হৃদপিণ্ড কিডনি এবং চোখ ভালো
রাখতে সাহায্য করে।
আলু খাওয়ার উপকারিতা
আলু পছন্দ না এমন মানুষ পাওয়া খুব দুষ্কর। এই যেমন ধরুন আপনি নিশ্চয়ই আলু
খেতে পছন্দ করেন? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে তাহলে আপনার জানা উচিত আলুর
উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি। আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন
ম্যাগনেসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম। এগুলো আপনার শরীরের হাড়কে শক্ত করতে ব্যাপক
ভাবে সাহায্য করে। এছাড়া আরো রয়েছে ভিটামিন-এ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আর যারা নিয়মিত আলু খায় যেমন আপনি অবশ্যই আপনার
দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার শরীরের সকল হাড় গুলোও
শক্তিশালী হবে। এছাড়াও আলু খাওয়ার আরো বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে চলুন সেগুলো
জেনে নিন।
- আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে। আপনার যদি হাই ব্লাড প্রেসার এর সমস্যা থাকে তাহলে তো বুঝতেই পারছেন আপনার জন্য আলু একটি চমৎকার সমাধান হতে পারে। আলু খাওয়ার সঠিক নিয়ম গুলো অবলম্বন করলে আপনি আলুর উপকারিতা গুলো খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন এর অপকারিতা গুলো থেকে বাঁচতে পারবেন।
- আমাদের হৃদযন্ত্র বা হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতে আলুর ভূমিকা অতুলনীয়। কেননা এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন বি-১২ যা আমাদের হৃদপিণ্ড কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে এবং আলু হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা কমিয়ে দেয়। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তারা আলু খাওয়ার নিয়ম গুলো সঠিকভাবে মেনটেন করে প্রতিদিন আলু খেলে হার্টের সমস্যা দূর হওয়ার সাথে সাথে হার্টের সমস্যার প্রবণতা একবারে কমিয়ে আনতে সাহায্য করবে। তাহলে আজকে থেকে শুরু করে দিন নিয়ম মেনে আলু খাওয়া।
- আমরা জানি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে ফাইবার অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। যেহেতু আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই এটি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য আলু একটি চমৎকার সমাধান। কেননা আলু কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করতে বেশ ভালো কার্যকরী একটি সমাধান। আপনি আলু খাওয়ার নিয়ম গুলো মেনে যদি আলু খাওয়া শুরু করেন তাহলে আলো খাওয়ার উপকারিতা গুলো খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। সাথে সাথে আপনার হজমের সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করবে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন-এ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই জরুরী । আর এই দুইটি শরীরের জন্য জরুরি উপাদান রয়েছে আলুতে। তাই প্রতিদিন আলু খাওয়া আমাদের সবার জন্য খুবই জরুরী। তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুব ভালো ভূমিকা পালন করে আলু। নিয়ম মেনে যদি আমরা রেগুলার আলু খেতে পারি তাহলে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে শরীরকে সুস্থ রাখতে পারব।
- আলুতে রয়েছে ভিটামিন-সি, পটাসিয়াম, ভিটামিন বি-৬ সহ বিভিন্ন শরীরের জন্য উপকারী উপাদান। এই উপাদানগুলো আমাদের খাদ্য হজমে সাহায্য করে এবং হজম জনিত সমস্যার কারণে পেটে প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হলে জালাপোড়া দুর করার জন্য আলু বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যাদের পেটে জ্বালা পড়ার সমস্যা রয়েছে তারা আজকে থেকে নিয়ম মেনে প্রতিদিন আলু খেতে পারেন। এতে করে আপনার পেটের জ্বালাপোড়া সমস্যার চমৎকার একটি সমাধান পেয়ে যাবেন। এছাড়া আপনার পরিবার বা বন্ধু আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে যদি এই সমস্যা কারো থেকে থাকে তাহলে তাকে সমাধান হিসেবে আলু খেতে বলতে পারেন।
- দ্রুত মোটা হতে চান? রোগা পাতলা শরীর থেকে স্বাস্থবান দেহের অধিকারী হতে চান? তাহলে আপনার জন্য খুবই উপকারী খাদ্য হিসেবে খাদ্য তালিকার এক নম্বরে স্থান পাওয়ার যোগ্য সেটি হল আলু। কারণ আলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।
- কিডনিতে পাথর হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি যেই জিনিসটি দায়ী সেটি হল প্রোটিনযুক্ত খাবার। শরীরে ইউরিক এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে হাই প্রোটিন যুক্ত খাবার গুলো। আলু জাতীয় সবজি এই পাথর জমতে বাধা প্রদান করেন। যেহেতু ক্যালসিয়াম জমে পাথর হয় আলু ম্যাগনেসিয়াম এর দরুন এই পাথর গলাতে সাহায্য করে। যেহেতু বর্তমান সময়ে কিডনির পাথর খুবই একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজের কিডনির পাথর এবং পরিবার অথবা বন্ধু-বান্ধবের যদি কারো এই সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তাকে সমাধান হিসেবে আলু খাওয়ার নিয়ম গুলো বলে দিতে পারেন যাতে তারাও আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো বুঝতে পারে এবং নিজেদেরকে সুস্থ রাখতে পারে।
- আমরা ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে অনেক ক্রিম,ফেসপ্যাক সহ ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকি। তবে আমরা যদি আলোর সাথে মধু মিশিয়ে পেস্ট করে নিয়মিত আমাদের ত্বকে ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমাদের ত্বক খুব দ্রুত সময়ে উজ্জলতা ফিরে পাবে। কেননা আলোচনা হয়েছে ফসফরাস ম্যাগনেসিয়াম পটাশিয়াম এর মত ত্বক উজ্জল কারী পদার্থ। যেহেতু আমরা ত্বকের জন্য প্রচুর পরিমাণ অর্থ খরচ করি। এখন থেকে যদি আমরা রেগুলার আলুর এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমাদের অর্থ বেঁচে যাবে সাথে সাথে একটি হাইজেনিক উপায়ে নিজের ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব হবে। এখনই আপনার পরিচিত বন্ধুবান্ধব কাছের মানুষদেরকে এই টিপসটি জানিয়ে দিন যাতে করে তারাও রেগুলার তাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারে।
আলু খাওয়ার অপকারিতা
আমাদের নিত্যদিনের সবজি এর তালিকায় সবচেয়ে বেশি যেটি ব্যবহার করা হয় সেটি হল
আলু। বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণে আলু গোটা বিশ্বের একটি বিশেষ খাবার হিসেবে
ব্যবহার করা হয়। আলু সবচেয়ে বেশি পেরু, ভারত এবং বলিভিয়াতে উৎপাদন হয়। আলু
যেহেতু প্রতিটি পরিবারের নিত্যদিনের এবং খুবই সুস্বাদু একটি খাবার। বিশেষ করে
বাচ্চাদের এবং বড়দেরও যেমন আপনার আমারও পছন্দ। যেহেতু আমরা নিয়মিত আলু খেয়ে
থাকি তাই স্বাভাবিক সবার মনে একটি প্রশ্ন জাগে আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো
কি কি? আলু খেলে কি কোন ক্ষতি হয়? আপনার মনে যদি এই প্রশ্নগুলো এসে থাকে তাহলে
এর উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ আমরা যদি রেগুলার বেশি পরিমানে আলু খেতে থাকে তাহলে
আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক আলু খেলে কি
হয় বা আলু খাওয়ার অপকারিতা গুলো কি কি।
- আলুতে যেমন রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান এবং আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। অতিরিক্ত আলু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে সবচেয়ে ভয়াবহ যে এই সমস্যাটি তৈরি হয় সেটি হচ্ছে ডায়রিয়া। কেননা আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে উচ্চ গ্লাইসেমিক যা রক্তের শর্করার ওপর বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।
- আলু আমাদের শরীরের শর্করা এবং ইনসুলিন মাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করতে সক্ষম। আর আমরা সবাই জানি শরীরে শর্করা এবং ইনসুলিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াবেটিকস রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। ফলে আপনি ঠিকই বুঝতে পেরেছেন আপনাকে পরিমান মত আলু খেতে হবে। আর আপনার পরিবারের বা আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে আলু খাওয়া থেকে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে।
আরও পড়ুনঃ আম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- কিছু আলু যেমন সবুজ রঙের এবং গা কুঁচকে যাওয়া আলু গুলোতে রয়েছে বিশেষ এক ধরনের বিষাক্ত যৌগ পদার্থ। বিষাক্ত জৈব পদার্থ শরীরের শ্বাসকষ্ট, রক্তসঞ্চালন, মাথাব্যথা সহ বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করতে পারে। তাই আলু কেনার সময় এবং খাওয়ার আগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা বাঞ্ছনীয়।
- গর্ভবতী মহিলাদের জন্য আলু না খাওয়াই উত্তম। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে। তবে সেদ্ধ অথবা ভাজা আলু খেতে পারবে সমস্যা নেই।
- আপনি যদি স্বাস্থ্যবান মানুষ হয়ে থাকেন। আর আপনি চাচ্ছেন আপনার ওজনটা একটু কমাবেন তাহলে আপনার আলো খাওয়া কোনোক্রমেই উচিত হবে না। কেননা আলু ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
সেদ্ধ আলুর উপকারিতা
আলু নিয়ে মনে যদি অনেক প্রশ্ন থেকে থাকে যেমন, আলু খেলে কি প্রেসার বাড়ে? আলু
খেলে কি গ্যাস হয়? সেদ্ধ আলুর উপকারিতা কি? আলু সিদ্ধ করে খাবো নাকি ভেঁজে
খাবো? আলু খেলে কি মোটা হয়ে যাব নাকি চিকন হয়ে যাব ইত্যাদি। আপনার এই সকল
প্রশ্নের উত্তর আমাদের এই আর্টিকেলটিতে আমরা বিস্তারিত ভাবে উপস্থাপন করেছি।
সেই ধারাবাহিকতায় এখন আমরা আলোচনা করব সেদ্ধ আলু খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি!
যেহেতু আমিও আপনার মত একজন আলু প্রেমী মানুষ তাই আপনার মত আমারও অনেক প্রশ্ন
ছিল যেগুলো আমি নিজে জেনেছি এবং আপনাকেও জানতে সাহায্য করছি তো চলুন জেনে নেই
সেদ্ধ আলুর উপকারিতা গুলো কি কি।
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ- সিদ্ধ আলু আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক
ভূমিকা পালন করে। আপনার যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খেয়ে থাকেন তাহলে
আপনার জন্য একটি উপকারী খাদ্য হিসাবে সেদ্ধ আলু খাদ্য তালিকায় প্রথমে স্থান
দেওয়া উচিত। এছাড়া সেদ্ধ আলু আপনার শরীর খারাপ কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতেও
ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়।
২. শরীরের চাহিদা মেটাবে- স্বাভাবিকভাবে একটি আলোতে প্রায়ই ২ গ্রামের
মত ফাইবার থাকে। আমাদের শরীরের প্রায় ৮ শতাংশ পূরণ করতে সাহায্য করে। শরীরে
যদি ফাইবারের ঘাটতি দেখা দেয় তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফাইবারের
চাহিদা মিটিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে আলুর বিকল্প নেই।
৩. ব্রেনের কার্যকারী ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়- আপনি যদি প্রতিদিন নিয়ম করে
সিদ্ধ আলু খেতে পারেন তাহলে আপনার ব্রেনের কার্যক্ষমতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে
থাকে। এছাড়াও আপনার মানসিক ক্লান্তি দূর করতেও এটি ব্যাপক ভাবে সাহায্য করে।
৪. ভিটামিন-সি পরিমাণ ঠিক রাখে- আমাদের শরীর কে সুস্থ রাখতে সবচেয়ে
বেশি যে ভিটামিন এরপর প্রয়োজন সেটি হল ভিটামিন-সি। আর আমাদের শরীরে ভিটামিন সি
এর ঘাটতি পূরণ করতে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করে সিদ্ধ আলু। এছাড়া সুস্থতা বৃদ্ধি
করে সেদ্ধ আলু।
আলু খেলে কি গ্যাস হয়
আলু খেলেই যে গ্যাস হয় বিষয়টি এমন নয়। মূলত আমরা এসিডিটি কে গ্যাসের সমস্যা
হিসাবে বলে থাকি। আপনার যদি আগে থেকেই এসিডিটি বা গ্যাসের সমস্যা হয়ে থাকে
তাহলে আলুর তরকারি বা আলুর ভাজি খেলে গ্যাস হতে পারে। তবে আলোর ঝোল/রসালো
তরকারি খেলে গ্যাসের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে। তবে যাদের অধিক
পরিমাণে অ্যাসিডিটির সমস্যা বা গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তাদের অল্প পরিমাণে আলুর
তরকারি খাওয়াই ভালো।
আলু খেলে কি প্রেসার বাড়ে
আমাদের অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে, আলু খেলে কি প্রেসার বাড়ে? আপনার মনে যদি
এইরকম প্রশ্ন এসে থাকে তো চলুন জেনে নেই আসলেই আলু খেলে কি প্রেসার বাড়ে কিনা।
গবেষণায় দেখা গেছে একটি সাধারণ মানের আলুতে প্রায় ৪২১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম
থাকে উচ্চ রক্তচাপ প্রেসার কমাতে দারুন ভাবে উপকারী। আর সাধারণত যে সকল রোগীর
হাই প্রেসার সমস্যা থাকে তাদের সাধারণত মানসিক চাপ বেশি থাকে। আর আলু চাপ
কমাতেও সহায়তা করে। আলুর সাদা অংশে অ্যামিনো এসিড থাকে যা সব সময় নার্ভকে
শান্ত রাখতে সাহায্য করে। তবে আপনি যদি মাত্রাতিক্ত ভাবে আলো খেয়ে থাকেন তাহলে
আপনার প্রেসার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আলু খেলে কি ওজন বাড়ে
আপনি যদি আলু প্রেমী মানুষ হয়ে থাকেন এবং সাথে করে আপনার মনে যদি এই প্রশ্ন
এসে থাকে যে, আলু খেলে কি ওজন বাড়ে? তাহলে আপনি আপনার প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি
পেতে চলেছেন। কেননা আমরা এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কি হবে অর্থাৎ আসলেই কি ওজন
বাড়ে ভালো খেলে সেটা বিস্তারিত তুলে ধরেছি। গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন আপনি
যদি সবসময় খাদ্যতালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার গুলো কে সবার প্রথমে স্থান
দিয়েছেন তাহলে আলু আপনার জন্য ওজন কমানোর জন্য ভূমিকা পালন করবে। আবার আপনি
যদি আলু মাখন,পনির, ক্রিম ইত্যাদি ক্রিম জাতীয় খাবারের সাথে খেয়ে থাকেন তাহলে
অবশ্যই এটি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
যুক্তরাজ্যের কৃষি বিভাগ এর গবেষণা অনুযায়ী 100 গ্রাম সাদা আলোতে ফাইবার থাকে
2 গ্রাম প্রোটিন থাকে 2 গ্রাম এবং এতে প্রায় ক্যালরি থাকে 77 গ্রাম। যেহেতু
আলোতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে। এছাড়াও প্যাকেটজাত আলুর চিপস যাতে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে যা
খেলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ আলু খেলে আপনার ওজন বাড়বে কিনা এটা নির্ভর
করে আপনি আলু কিভাবে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করছেন তার ওপর। কেননা যখন আপনি বাহিরের
বা বাজারের ফাস্টফুড দোকান থেকে হাইড্রোজেনেটেড তেলেভাজা বিভিন্ন মুখরোচক খাবার
নিয়মিত খেতে শুরু করলে আলুর সঙ্গে কিছুটা এই বিষাক্ত তেল আপনার পেটে যাওয়া
শুরু করবে যা তার ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী।
আলু খেলে কি মোটা হয়
আলু খেলে কি মোটা হয়? বহুল জিজ্ঞাসিত এই প্রশ্নের আজকে আমরা সঠিক উত্তরটি
দেয়ার চেষ্টা করব। আমরা বাঙ্গালীদের প্রধান যে খাবারগুলো আছে তার মধ্যে
অন্যতম। আমরা প্রায়ই সকল সবচেয়ে সাথেই প্রতিদিন আলু খেয়ে থাকি। কিন্তু সবার
মনে এই প্রশ্নই থেকে থাকে আলু খেলে কি মানুষ মোটা হয়ে যায়। এর উত্তর হলো না।
আপনি শুধু আলু খেলে মোটা হবেন বিষয়টি এমন না তবে আপনি কি নিয়মে আলু খাচ্ছেন
সেটা এখানে বেশি ম্যাটার করে।
অর্থাৎ আপনি যদি নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় স্বাস্থ্যকর খাবার গুলো
প্রাধান্য দিয়ে থাকেন তাহলে এই আলো আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে ওজন বাড়াতে
নায়। আপনার খাদ্য তালিকায় যদি অতিরিক্ত মাত্রায় জাঙ্ক সহ বাহিরের
অস্বাস্থ্যকর খাবার অতি মাত্রায় গ্রহণ করে থাকেন তাহলে এই আলু খেলেই আপনার ওজন
বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি মোটা হয়ে যাবেন।
কেশর আলু খাওয়ার উপকারিতা
কেশর আলু হল সেই আলু যদি রান্না না করে খাওয়া যায়। আর এই কেশর আলু খাওয়ার
রয়েছে অনেক উপকারিতা। আজকে সেই উপকারিতা গুলো নিয়ে আলোচনা করব। কিশোর আলো
পুষ্টির দিক দিয়ে অনেক পুষ্টিকর একটি ফল। কেশর আলুতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ
আমিষ থাকে। কেশর আলু খাওয়ার উপকারিতা গুলো নিচে তুলে ধরা হলোঃ
২. ত্বকের যত্নে- ত্বকের যত্নে ব্যাপকভাবে ব্যবহার ব্যবহৃত হয় কেশর আলু। ত্বকে ব্যবহার করার জন্য কেশর আলু কে সর্বনিম্ন তিন থেকে চার ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর সেই পানি দিয়ে মুখে মেসেজ করতে হবে মিনিমাম 10 থেকে 15 মিনিট। কিছুক্ষণ পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন ব্যবহার করে নিজের স্কিন টোনের পরিবর্তন হয়ে যাবে।
রাঙা আলু খাওয়ার উপকারিতা
রাঙা আলু খাওয়ার উপকারিতা গুলোর মধ্যে প্রথমে যে কথা বলতে হয় সেটা হলো রাঙা
আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, এবং ফাইবার সহ
আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম এর মত অনেক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ পদার্থ। এই
পদার্থগুলো আমাদের শরীরের নানাভাবে শারীরিক গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কে
বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সময় আমাদের দেহের ভেতরে ইনফরমেশনের মাত্রা বৃদ্ধি
পায়। যার ফলে দেহের প্রদাহের সৃষ্টি হয় এবং বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দেয়। এই
সকল রোগ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় যোগ করতে হবে
রাঙা আলুকে। রাঙা আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। এই খনিজ পদার্থটি
আমাদের হৃৎপিণ্ড এবং পেশির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে সাথে করে স্টেজ
কমাতেও ব্যাপকভাবে ভূমিকা পালন করে।
লেখক এর মন্তব্যঃ আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা - আলু খাওয়ার নিয়ম
আশা করি আপনি আলো নিয়ে আপনার মনে যত প্রশ্ন ছিল সেগুলো বিস্তারিত ভাবে জানতে
পেরেছেন। আলো খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো কি কি এবং আলো খাওয়ার নিয়ম
সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন। যেহেতু বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যের মধ্যে আলো একটি
খাদ্য। আমরা যদি আলু খাওয়ার নিয়ম গুলো ভালোভাবে মেনটেইন করে আলো খেতে পারি
তাহলে আলোর উপকারিতা গুলো আমাদের কাজে আসবে। সাথে করে যে সকল অপকারিতার কথাগুলো
বলা হয়েছে সেগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন।
প্রিয় পাঠক উক্ত পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার পরিচিত
জনদের সাথে শেয়ার করুন যাতে করে তারাও এই সকল টিপস গুলো মেনে চলতে পারে। সবাই
ভালো থাকবেন আর নিয়মিত আমাদের পোস্টগুলো করতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন।
সবার জন্য শুভকামনা। আজকে এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ। @20210000
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url