OrdinaryITPostAd

সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি তা জেনে নিন

সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি জানতে চান? তাহলে আজকে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা এই পোস্টে সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ পোস্ট থেকে আপনি সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি তা জানতে পারবেন।
ইসলামে সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি
সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি তা অনেকে জানে না। সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য আমাদের সকলের জানা দরকার। চলুন তাহলে আলোচনা থেকে জেনে নেয়া যাক সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি।

পোস্ট সূচীপত্রঃ সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি

ভূমিকা

আরবি ‘সিফর’ মূল ধাতু থেকে সফর শব্দটি এসেছে। আরবি মাসের দ্বিতীয় মাসের নাম হল সফর। সফর শব্দের অর্থ হল শূন্য করা, খালি করা। তৎকালীন সময়ে আরব দেশে গোত্রে গোত্রে লড়াই চলতো। মহররম মাস আসলে সে লড়াই বন্ধ থাকতো। যখন সফর মাস আসতো তখন এ লড়াই আবার শুরু হয়ে যেত। পুরুষরা দলে দলে সে লড়াই যোগ দিত। ফলে ঘর শূন্য হয়ে যেত। আর আরবিতে "সফরুল মাকান" বলতে মানুষ শূন্য এমন জায়গাকে বুঝতো। সে থেকে এই মাসের নামকরণ করা হয় সফর।

আরো পড়ুনঃ জিলকদ মাসের আমল জেনে নিন

অন্যভাবে, “সাফর” ক্রিয়ামূল থেকে সফর শব্দটি আসলে তার অর্থ হবে হলদেটে, তামাটে, ফ্যাকাশে, বিবর্ণ ইত্যাদি। এসময় আরব দেশে খরা, খাদ্যাভাব, আকাল ও মঙ্গাভাব দেখা দিত। এই মাসকে বলা হত ‘আস সাফারুল মুসাফফার’ এর অর্থ হলো বিবর্ণ সফর মাস। ওই সময় আরবরা সফর মাসের চাঁদ দেখাও পর্যন্ত বন্ধ করে দিত। আর অপেক্ষা করতো কখন সফর মাস শেষ হবে।

সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল

অনেকে সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল জানে না। এই আলোচনা থেকে আপনি সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল জানতে পারবেন। আরবে জাহেলি যুগে এ সফর মাস কে অমঙ্গলের মাস মনে করা হতো। এ সফর মাস কে অশুভ মাস মনে করা হতো। এটা ছিল আরবের একটি কুসংস্কার। ইসলামের বিশ্বাস মতে, সময়ের সঙ্গে মঙ্গল-অমঙ্গল এর কোনো সম্পর্ক নেই। আল্লাহর কাছে প্রতিটা দিন ও মাস অত্যন্ত মূল্যবান। ইসলামী বিশ্বাস মতে, মানুষের বিশ্বাস ও কর্মের উপর কল্যাণ ও অকল্যাণ সরাসরি নির্ভরশীল।

আরো পড়ুনঃ রমজানের ফজিলত জেনে নিন

এ বিষয়ে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রোগে সংক্রমিত হওয়া বলতে কিছু নেই, কোনো কিছু অশুভ নয়। প্যঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসে ও কোনো অশুভ কিছু নেই.....(বুখারী, হাদিস:৫৭৬৯)। পবিত্র কোরআন মাজীদে আল্লাহ বলেন, তোমাদের কর্ম দোষের দুর্ভাগ্য তোমাদের সঙ্গেই আছে..... (সূরা ইয়াসিন: আয়াত ১৯)। আল্লাহ আরো বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তির কল্যাণ ও অকল্যাণের পরোয়ানা আমি তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছি...(সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ১৩)। তাই আলোচনা থেকে বুঝা যায়, কল্যাণ অকল্যাণ সরাসরি নির্ভরশীল ব্যক্তির বিশ্বাস ও কর্মের উপর। সময়ের সাথে কল্যাণ অকল্যাণের কোনো সম্পর্ক নেই।

আমল: সফর মাসের আমল কি? সফর মাসে বিশেষ কোন আমল আছে কিনা তা অনেকে জানতে চাই। আল্লাহর কাছে প্রতিটা মাস অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ এবং বরকতময়। যেহেতু প্রতি চন্দ্র মাসে কিছু আমল থাকে ঠিক তদ্রুপ সফর মাসেও কিছু আমল করা যেতে পারে। সেগুলো হলোঃ

  • সফর মাসের ১৩, ১৪, ১৫ তারিখে আইয়ামে বিজের ৩টি রোজা রাখা।
  • আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.) বর্ণিত রাসুল (সাঃ) বলেন, “প্রতি মাসে ৩ টি করে সিয়াম পালন, সারা বছর ধরে সিয়াম পালনের সমান”। (বুখারীঃ১১৫৯, ১৯৭৫)।
  • রাসুল (সাঃ) প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতি রোজা রাখতেন। কেননা, প্রতি সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর দরবারে বান্দার আমলনামা উপস্থাপন করা হয়। আর আমি চাই আমার আমল পেশ করার সময় আমি যেন রোজা অবস্থায় থাকি (সুনানে নাসায়ী: ২৩৫৮)।
  • তাছাড়া সর্ব অবস্থায় ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নত আমল গুলো যথাযথভাবে আদায় করা।
আশা করি পুরা প্যারাটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন এবং সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল, সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।

সফর মাসের ফজিলত

সফর মাসের ফজিলত আমাদের জানা দরকার। আল্লাহর কাছে  প্রতিটা মাস অত্যন্ত ফজিলত পূর্ণ। সফর মাস এর বাইরে নয়। ইসলাম আসার পূর্বে আরবে সফর মাসকে অকল্যাণকর মাস বলে চিহ্নিত করা হত। রাসুল (সা) বলেন, যে ব্যাক্তি আমাকে সফর মাস শেষ হওয়ার সংবাদ দিবে আমি তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিব। এই হাদিস নিয়ে ইসলামী চিন্তাবিদদের দুটি মত রয়েছে। প্রথমমত, এটা জাল হাদিস। যারা হাদিস বর্ণনা করেছেন তাদের কেউ হাদিস সংরক্ষণকারী নয়। দ্বিতীয়মত, হাদিসটি সহিহ। এ হাদিসটি বর্ণনা করা হয়েছে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে।

আরো পড়ুনঃ শাওয়াল মাসের ফজিলত জেনে নিন

সেই ঘটনাটি ছিল রাসুল(সাঃ) প্রিয় সাহাবী আবু বক্কর সিদ্দিক(রাঃ) ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দূরের এক জনপদে সফর করেন। সেখান থেকে ফিরতে তার দেরি হচ্ছিল। রাসুল (সাঃ) তার প্রিয় সাহাবীর জন্য চিহ্নিত হয়ে পড়লেন। এমনতাবস্থায় চিঠি এলো, চিঠিতে আবু বক্কর সিদ্দিক (রাঃ) লিখেন তিনি সফর মাস শেষে মদিনায় ফিরবেন। তখনও সফর মাসের আরও কিছুদিন বাকী ছিলো। সুতারাং কল্যাণ অকল্যাণ প্রতিট বিষয় নির্ভর করে আমাদের কর্ম ও বিশ্বাসের উপর। সে বিষয়টি মাথায় রেখে এই সফর মাসে ফরজ,ওয়াজিব, সুন্নাত আমলগুলো বেশি বেশি করা উচিত। পাশাপাশি উপরের প্যারায় বর্ণিত আমলগুলো আমাদের করা দরকার।

সফর মাসে করণীয়

অনেকে সফর মাসে করণীয় কি তা জানতে চাই। সফর মাসের করণীয় কি তা এই প্যারা থেকে জানতে পারবেন। আল্লাহর কাছে প্রতিটা মাস, প্রতিটা দিন বরকতময়। অনেকে জাহেলি যুগের মতো বর্তমান সময়ে এসেও সফর মাসকে অকল্যাণের মাস বলে। অনেকে মনে করে এসময় বিবাহ শাদী করা থেকে বিরত থাকা উচিত। এগুলো সব ভ্রান্ত ধারণা। তাই আমাদের উচিত সফর মাসকে অকল্যাণের মাস মনে না করে ইহা বরকতময় মাস মনে করা। এটা চিন্তা করা যে প্রতিটা দিন, প্রতিটা মাস বরকতময়। সে অনুযায়ী আমাদের সৎকর্ম গুলো নিয়মিত করা উচিত। উপরে বর্ণিত আমলগুলো করতে থাকা। আমাদের মনে রাখা উচিত কল্যাণ অকল্যাণ সবকিছু নির্ভর করে বিশ্বাস ও কর্মের উপর।

উপসংহার

প্রিয় পাঠক আশা করি পুরো আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। এই পোস্ট থেকে আপনি আশা করি সফর মাসে যে সকল কুসংস্কার রয়েছে সেগুলো বিষয়ে অবগত হয়েছেন। আল্লাহর কাছে প্রতিটি দিন, মাস যে বরকতময় সে বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পেয়েছেন। আলোচনা থেকে আরও জানতে পেরেছেন সফর মাসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য কি, সফর মাসের তাৎপর্য ও আমল, সফর মাসের ফজিলত, সফর মাসে করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। আজকের এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আমাদের ওয়েবসাইটে এ ধরনের সুন্দর ‍সুন্দর ব্লগ পোস্ট করা হয়। আপনার সুস্থতা কামনা করে এখানে শেষ করছি। আমাদের সাথেই থাকুন। ২৪৭২৯

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url