ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে - হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তবলী
ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? এ বিষয়টি জানা অত্যন্ত জরুরি প্রতিটি হাজির জন্য। আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছর অনেক মানুষ আল্লাহ তায়ালা এবাদত পালন করার জন্য হজ করতে যায়। ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? এ বিষয়ে অনেকের জানা নেই। তাই আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলে ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
আপনি যদি ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? তা জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে
- ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে
- যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে
- হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তবলী
- ঋণের টাকায় হজ্জ করা যাবে কি
- শেষ কথা
ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে?
আমাদের অনেকের ঋণ থাকে তার পরেও আমরা হজ করতে চলে যায় সাধারণত এটি কতটুকু জায়েজ রয়েছে আমাদের অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত। ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? কিনা? এ বিষয়েও আমাদের ধারণা নিয়ে নিতে হবে। কারণ ইসলামে প্রতিটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট একটি সমাধান দেওয়া রয়েছে। আর এই বিষয়টির পক্ষে বিপক্ষে বিভিন্ন রকমের কথা রয়েছে। তাই অভিজ্ঞ ইসলামিক চিন্তাবিদগণ ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? এ প্রশ্নের উত্তর কি বলেন তা জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসে রোজা রাখার ফজিলত জেনে নিন
যে ব্যক্তি হজ আদায় করল কিন্তু তার দায়িত্বে অন্যের পাওনা অর্থাৎ ঋণ হিসেবে রয়ে গেল তার হজ সহিহ হবে। অভিজ্ঞ ইসলামিক চিন্তাবিদগণ বলে থাকেন হজ সহিহ হওয়ার সঙ্গে ঋণের কোন সম্পর্ক নেই। সাধারণত ওই ব্যক্তি যদি হজের রুকন ও শর্তগুলো পরিপূর্ণভাবে আদায় করে তবেই তার হজ আদায় হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে।
অনেকে মনে করে থাকে যদি হাজীগণের ঋণ থাকে তাহলে হয়তো বা তাদের হজ আল্লাহতালার কাছে কবুল হয় না। কিন্তু সম্পদের সঙ্গে বা ঋণের সঙ্গে হজের শুদ্ধতার কোন সম্পর্ক নেই বললেই চলে। তবে যে ব্যক্তির ঋণ আছে সে ব্যক্তির জন্য হজ না করা উত্তম। এক্ষেত্রে যে অর্থ সে হজ আদায় করতে খরচ করবে সে অর্থ দিয়ে তার ঋণ পরিশোধ করবে এটাই উত্তম।
ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? যারা এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন সাধারণত তাদের জন্য বলে রাখি হজের শুদ্ধতার সাথে ঋণ থাকুক বা না থাকুক এর কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের মনে রাখতে হবে হজ্ব ফরজ হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো সামর্থ্যবান হওয়া। সামর্থের মধ্যে রয়েছে আর্থিক সামর্থ। যে ব্যক্তির উপর ঋণ রয়েছে।
ঋণদাতা যদি ঋণ আদায় করার আগে হজ আদায় বাধা দেয় তাহলে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি হজ আদায় করবে না। এক্ষেত্রে প্রথমে অর্থাৎ হজ করার আগে ঋণগ্রস্ত হাজীকে ঋণ পরিশোধ করে নিতে হবে। হজ করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হবে সাধারণত সেই টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করে তারপরে অর্থাৎ পরবর্তী বছরে যেতে হবে। যদি ঋণদাতা বেশি চাপ না দিয়ে থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই।
যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে?
যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে? এ বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই একটা ধারণা পেয়েছি। আপনাদের জানিয়ে রাখি যে হজের শুদ্ধতার জন্য ঋণের কোন প্রভাব নেই। যদি হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্তগুলো সম্পূর্ণ হয়ে যায় তাহলে প্রতিটি ব্যক্তির জন্য হজ করা ফরজ। আর হজ ফরজ হওয়ার অন্যতম একটি শর্ত হলো সামর্থ্যবান হওয়া।
যদি কোন সামর্থ্যবান ব্যক্তির ঋণ থাকে এবং ওই ব্যক্তি হজ করতে যায় তাহলে অনেকেই যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে? এ ধরনের প্রশ্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে তাদের বলে রাখি হজ শুদ্ধ হওয়ার সাথে ঋণ করার কোনো সম্পর্ক নেই। যদি ঋণদাতা অনেক জোর করে ঋণের টাকার জন্য তাহলে এক্ষেত্রে আপনাকে হজ করতে যাওয়ার আগে ঋণ শোধ করতে হবে।
আর যদি ঋণ আদায়ে ঋণদাতা চাপ না দেয় মনে বিশ্বাস রাখে হজের বিষয়টি সহজ ভাবে নেই তাহলে তার জন্য হজ আদায় করা জায়েজ আছে। এমনটা হতে পারে হজ করার পরে তার হারিন আদায় করার জন্য কোন কল্যাণের পথ খুলে দেবে। তাই যারা মনে করে থাকে ঋণ পরিশোধ না করলে হজ কবুল হবে না এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসের ৫ আমল - জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল
যদি কেউ ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ দিয়ে থাকে তাহলে হজ করতে যাওয়ার আগে এক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ করে নিতে হবে। আর যদি ঋণদাতার বিশ্বাস থাকে যে তার টাকা তার কাছে ফেরত আসবে তাহলে এক্ষেত্রে হজ অশুদ্ধ হওয়ার কোন প্রশ্ন আসে না। হজের নিয়মগুলো সঠিকভাবে পালন করলে হজ অবশ্যই শুদ্ধ হবে। আশা করি যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে? এই বিষয়টি জানতে পেরেছেন।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তবলী
ইসলামের যে সকল গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত রয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হজ। ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মধ্যে হজ অন্যতম একটি। প্রতিটি মুসলমানের জন্য হজ পালন করা ফরজ নয় কিন্তু আল্লাহতালা যাদের সম্পদ দিয়েছে যারা সামর্থ্যবান সাধারণত প্রতিটি সামর্থ্যবান নারী পুরুষের উপর হজ করা ফরজ। এক্ষেত্রে হজ্ব ফরজ হওয়ার শর্ত বলি জেনে নেওয়া যাক।।
১। মুসলমান হওয়া।
২। জ্ঞানসম্পন্ন হওয়া।
৩। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া।
৪। স্বাধীন হওয়া।
৫। সামর্থ্য থাকা
জানা থাকা উচিত যে, অনেক ক্ষেত্রে কারও ওপর জাকাত ফরজ না হলেও হজ ফরজ হতে পারে। হজ ও জাকাতের ক্ষেত্রে আর্থিক সামর্থ্য থাকা আবশ্যক। তবে হজ ও জাকাতের কিছু পার্থক্য রয়েছে। জাকাতের সঙ্গে নিসাবের সম্পর্ক। যে পরিমাণ অর্থ থাকলে জাকাত ফরজ হয়, তাকে নিসাব বলে।
ঋণের টাকায় হজ্জ করা যাবে কি
উপরের আলোচনায় ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? এ বিষয়টি সম্পর্কে জানানো হয়েছে। হজ সম্পর্কে অনেকের ধারণা সুস্পষ্ট নয়। হজ সবার ওপর ফরজও নয়। যারা কাবা শরিফ যাওয়ার সার্মথ্য রাখে তাদের জন্য জীবনে একবার হজ করা ফরজ।
আল্লাহ তাআলা বলেন, "মানুষের মধ্যে যারা সেখানে (কাবা শরিফ) পৌঁছার সামর্থ্য রাখে, তাদের ওপর আল্লাহর জন্য এ ঘরের হজ করা ফরজ।" {সুরা আল-ইমরানঃ ৯৭} হ্যাঁ, ঋণ করে হজ করা যাবে। যদি এ ঋণ পরিশোধ করার সহজ উপায় থাকে। কিংবা যার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে, তার থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য তাগাদা না থাকে।
আরো পড়ুনঃ রমজানে ওমরা করার ফজিলত - রোজার মাসে ওমরা করার ফজিলত কি
অন্যথা ঋণ করে হজ না করাই ভালো। কারণ সম্ভবত ঋণ করার পর তা পরিশোধ করার সামর্থ্য নাও হতে পারে। আবার রোগাক্রান্ত বা মৃত্যু হলে এ ঋণ পরিশোধ নাও হতে পারে। অতএব হজ করার জন্য পূর্ণ সামর্থ্যবান হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করাই উত্তম।
ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবেঃ শেষ কথা
প্রিয় পাঠকগণ ঋণ থাকলে কি হজ্জ শুদ্ধ হবে? যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধ করেনি তার হজ্জ কি শুদ্ধ হবে? হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তবলী, ঋণের টাকায় হজ্জ করা যাবে কি? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই বক্তব্য বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরী।
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।১৬৮৩০
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url