OrdinaryITPostAd

নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় - নারীদের হজের কিছু মাসআলা

নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় এটা সম্পর্কে আপনি কি জানেন? যদি নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় জানতে চান তাহলে আপনি ঠিক জায়গাতেই আছেন। হজের যে শর্ত গুলো রয়েছে তার বাহিরেই নারীদের জন্য কিছু বেশি নিয়ম রয়েছে। আমি আজ আপনাদের নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় তা বিস্তারিত জানাবো।

সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য হজ যাত্রা করা ইসলামে আজীবনের সুযোগ এবং একটি পবিত্র দায়িত্ব। হজ নারী পুরুষ সবার ওপর ফরজ যদি সে হজের সব নিয়ম মেনে হজ করতে পারে। তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয়।

সূচিপত্রঃ নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয়

মাহরাম কি?

মাহরাম একটি আরবি শব্দ যা একজন মহিলার পুরুষ আত্মীয়কে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। এটা স্বামী হতে পারে আর যদি স্বামী না থাকে তাহলে যার সাথে বিয়ে করা হারাম তাকে বোঝায়। একজন নারী বিয়ে করলে তার স্বামীও তার মাহরাম হয়ে যায়।

একজন মাহরাম হল যে কোন পুরুষ আত্মীয় তারা হতে পারেঃ

  • সবাই সরাসরি বংশধর
  • ভাইবোন
  • পিতামাতার ভাইবোন, দাদা-দাদি 
  • সন্তান এবং ভাইবোনের আরও বংশধর
  • একজনের স্ত্রীর সমস্ত বংশধর
  • যারা সরাসরি পূর্বপুরুষকে বিয়ে কর
  • যারা সরাসরি বংশধরকে বিয়ে করে
  • পালক মা, পালক ভাই

নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয়

নারী ও পুরুষ সবার ওপর হজ ফরজ হওয়ার শর্ত গুলো একইরকম কিন্তু মেয়েদের আরো কিছু শর্ত রয়েছে হজ ফরজ হওয়ার। হজের শর্ত গুলো হল মুসলিম হওয়া, পাগল না হওয়া, স্বাধীন হওয়া বা কারো ক্রীতদাস না হওয়া, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া এবং শারীরিক ও আর্থিক ভাবে সচ্ছল হওয়া। নারীদের ওপর এই শর্ত গুলো ফরজ কিন্তু তার পরেও অতিরুক্ত কিছু শর্ত আছে যা হজ করতে হলে নারীদের মানতে হবে।
কোনো নারী যদি হজ করতে চায় তাহলে তাহলে তার মাহরাম দরকার। মাহরাম না থাকলে একজন নারীর যতই টাকা থাকনা কেন তার হজ জায়েজ হবে না। কারণ ইসলামে নারীকে একা কোথাও যাওয়ার অনুমতি দেয় না। তাই নারীদের হজের প্রথম শর্ত হল তার সাথে মাহরাম থাকতে হবে।

তারপর নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় জানেন যখন নারীরা নিজে ইনকাম করে এবং সেই ইনকাম দিয়ে সে নিজের এবং তার মাহরামের হজে যাওয়া আসার খরচ যোগাতে পারে তাহলে তার ওপর হজ ফরজ হয়ে যাবে। এছাড়া এখন মহিলাদের কাছে অনেক সোনার গহনা থাকে। সেই গহনার দাম দিয়ে যদি একটা হজ করার মত হয় তাহলে তার ওপর ও হজ ফরজ হয়ে যাবে। 

নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় এক কথায় বলতে গেলেঃ
  • যদি নারীর নিজের এবং তার মাহরামের খরচের ব্যবস্থা থাকে।
  • তার সাথে যাওয়ার জন্য মাহরাম থাকলে
  • নারীদের ঘর থেকে বাহিরে যেতে যদি অন্য কোনো নিষেধ না থাকে

নারীদের হজের কিছু মাসআলা

আগেই বলেছি পুরুষদের হজের থেকে নারীদের হজ একটু বেশি কষ্টের বা বেশি নিয়ম রয়েছে। নিয়মের বাহিরেও নারীদের হজ করার কিছু মাসআলা রয়েছে। নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় তখন যখন নারীরা এই সব নিয়ম ও মাসআলা মেনে হজ করতে যায়। নিচে কিছু হজের মাসআলা দেখুনঃ

১ নং মাসআলাঃ নারীদের ওপর হজ ফরজ হলে যদি তার স্বামী তাকে হজে যেতে বাধা দেয় তাহলে তা শুনতে হবে না। কারণ হজ ফরজ হলে খুব তাড়াতাড়ি হজ করতে বলেছেন মহানবী সাঃ তাই এই ক্ষেত্রে স্বামী বাঁধা দিলেও হজ হবে। কিন্তু নফল ইবাদাত হিসেবে স্বামীর অনুমতি নেওয়া ভালো।
২ নং মাসআলাঃ কোনো নারীর যদি হজে যাওয়ার মত টাকা থাকে কিন্তু হজে যাওয়ার মত কোনো মাহরাম বা স্বামী না থেকে তাহলে সে মাহরামের অভাবে হজে যেতে পারবে ন। তখন সে মরার আগে বদলি হজের অসিয়ত করে যাবে। তার মরে যাওয়ার পর তার সম্পদের তিন ভাগের এক ভাগ দিয়ে অন্য কেউ হজ পালন করবে।

৩ নং মাসআলাঃ কোনো নারী অন্য কোনো নারীর সাথেও হজ করতে পারবে না। সে নিজের মা হোক না কেন। অন্য নারী তো দূরের কথা কোনো নারী মাহরাম হতে পারবে না। হজরত মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোনো নারী পুরুষ মাহরাম ছাড়া হজ করতে পারবে না। যদি জানতে চান নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় এর উত্তর হল হজ করার মত পর্যাপ্ত টাকা এবং মাহরাম থাকলেই নারীদের ওপর হজ ফরজ হয়ে যাবে।

নারীদের হজ করার উপকারিতা

একজন মহিলার হজের চ্যালেঞ্জ এবং পুরস্কারকে জিহাদের সাথে তুলনা করা হয়েছে। কারণ নারীদের হজ করতে অনেক কঠিন পথ দিয়ে যেতে হবে। মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ভ্রমণগুলির মধ্যে একটি হল হজ যা একজন বিশ্বাসী জীবনে অন্তত একবার করতে বাধ্য। এই হজ পালনে নারীরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয় তা পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি।

অনেক বাঁধা সত্তেও ইসলামের উত্থানের পর থেকে বার্ষিক হজে নারীদের অংশগ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। তবে আধুনিক যুগে তা উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহিলাদের হজ পালনে অনেক বাঁধা অতিক্রম করে যখন একজন মহিলা সব নিয়মের মধ্যে দিয়ে হজ পালন করে তাহলে আল্লাহ সেই মহিলাকে অনেক বড় পুরষ্কার দান করেন।
মহা নবী সাঃ মিরাজে গিয়ে দেখে এসেছিলেন যে জাহান্নামে বেশিরভাগ ছিল মহিলারা। এখান থেকে বোঝা যায় মহিলারা বেশি জাহান্নামে যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। তাই একজন মহিলার জন্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা খুব দরকার। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য হজ একটা খুব ভালো উপায়। তাই নারীদের জন্য হজ করার উপকারিতা অনেক বেশি। তাই নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় তার সব কিছু যেনে হজ করবেন।

মাহরাম ছাড়া ওমরাহ বা হজ করার বিধান

কিছু আলেমগন মনে করেন যে মহিলারা মাহরাম ছাড়া ওমরাহ বা হজ করতে ইচ্ছুক হলে যদি তিনি কোনও দলের বিশ্বস্ত সংস্থায় থাকেন বা ভ্রমণের পথগুলি নিরাপদ থাকে তবে তা করতে পারেন। যাইহোক মাহরামের প্রয়োজনীয়তার হুকুম নিয়ে আলেমগণ মতভেদ করেছেন। অনেক বলেছেন মাহরাম ছাড়া কিছু নিয়মে নারীরা হজ করতে পারবে। কিন্তু অনেকে বলেছেন মাহরাম ছাড়া নারীদের হজ করা যাবেনা।

তবে অনেক হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে মহিলারা মাহরাম ছাড়া হজ করতে পারবেনা। কারণ মহানবী সাঃ নিজে বলেছেন, নারীরা মাহরাম ছাড়া হজ করতে পারবে না। কারণ মহিলাদের ঘর থেকে একা একা বের হওয়ার কোনো অনুমতি নেই। তাই মহিলাদের জন্য সবথেকে ভালো হবে যে মাহরাম সহ হজ পালন করা।

নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় - শেষ কথা

নারীর হজ জায়েজ হওয়ার বৈধতার অন্যতম শর্ত হল হজের সময় তার সাথে একজন মাহরাম উপস্থিত থাকা। সুতরাং যে মহিলার সাথে হজ করার জন্য মাহরাম নেই তার ক্ষেত্রে মাহরাম না পাওয়া পর্যন্ত হজ এর ফরজ মাফ হয়ে যায়। উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারেন নারীদের ওপর কখন হজ ফরজ হয় সেই সম্পর্কে। যখন একজন মহিলার হজে যাওয়ার মত তার নিজের এবং মাহরামের জন্য পর্যাপ্ত টাকা থাকে তাহলে সেই নারীর ওপর হজ ফরজ হয়ে যাবে।[জব আইডি=২২৪৯৮]

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url