হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত
আপনি কি হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কেননা আজকের আর্টিকেলটিতে হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত সে সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নিচে আপনাদের জন্য মহিলাদের ইহরামের কাপড়, হজ্জে মহিলাদের পর্দা এবং হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত সে সম্পর্কে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যেখান থেকে খুব সহজেই হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জানতে পারবেন। তাই দেরি না করে হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত
মহিলাদের ইহরামের কাপড়
মহিলাদের ইহরামের কাপড় পুরুষদের ন্যায় না করে ভিন্ন করা হয়েছে। মহিলাদের ইহরামের কাপড় সেলাইযুক্ত যেকোন রঙের হতে পারবে। তবে তারা এমন পোশাক পরবে যাতে পর্দার খেলাপ না হয় এবং ফেতনা ও কুদৃষ্টির আশংকা না থাকে। আর ইহরামের সময় মহিলাদের মুখে অর্থাৎ চেহারায় কাপড় লাগিয়ে রাখা নিষেধ।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ্জ মাসে রোজা রাখার ফজিলত
ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো নিষেধ কিন্তু ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো আর গায়রে মাহরামের সামনে ইচ্ছে করে মুখ খোলা রাখা আরেক বিষয়। "হযরত আয়েশা রা. বলেন, ইহরামের হালতে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তো আমরা আমাদের চাদর মাথার সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। চলে যাওয়ার পর সরিয়ে ফেলতাম।" -সুনানে আবু দাউদ।
মহিলা হাজির সঙ্গী হতে পারবেন কে
মহিলা হাজির সঙ্গী হতে পারবেন কে এই বিষয়ে অবশ্যই জানা জরুরি। কেননা যে কাউকে নিয়ে একজন মহিলা হজ্জ আদায় করতে পারবে না। মহিলাদের হজ্জ আদায়ের পূর্বে তাই এ বিষয়ে অবশ্যই জেনে নিতে হবে যে সে কার কার সাথে হজ্জ আদায় করতে পারবে বা মহিলা হাজির সঙ্গী হতে পারবেন কে।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিনের আমল
মহিলারা হজে যাওয়ার সময় সঙ্গী হিসেবে মাহরাম পুরুষের সাথে যেতে পারবে। অর্থাৎ যাদের সাথে বিয়ে জায়েজ নেই তাদের সাথে যেতে পারবে। স্বামী, সন্তান, ভাই, পিতা, শশুর, জামাই ইত্যাদি। তবে একা দুধভাইয়ের সাথে এবং যুবতি শাশুড়ি জামাতার সঙ্গে যেতে পারবে না। তবে যদি মাহরাম না থাকে তাহলে মাহরাম না হওয়া পর্যন্ত হজে যাওয়া শরীয়তসম্মত হবে না।
হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত
হজ্ব মহিলাদের ওপরেও ফরজ করা হয়েছে। যেসব মহিলা হজ্ব আদায়ে সামর্থ্যবান তাদের অবশ্যই হজ্ব আদায় করতে হবে। তবে পুরুষদের থেকে মহিলাদের হজ্ব আদায়ের বিষয়টি একটু ভিন্ন ধরণের।মহিলাদের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো হজ পালনের পূর্বে অবশ্যই জানতে হবে। চলুন তাহলে হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জেনে নিন।
বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত হওয়া অবস্থায় হজঃ স্বামীর তালাক দেওয়ার অথবা মৃত্যুর ইদ্দত পালনকারী মহিলার জন্য হজ্বে যাওয়ার অনুমতি নেই। এই বিষয়ে সুরা বাকারার ২৩৪ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তা-আলা বলেন যে, "তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যাবে, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন অপেক্ষা করবে।" তবে ইদ্দত শেষ হলে সামর্থ যদি থাকে তাহলে পরে হজ পালন করবে। আর হজের টাকা জমা দেওয়ার পর যদি স্বামী মারা যায় বা তালাকপ্রাপ্ত হয় তাহলে সেই টাকা অপচয় না করার উদ্দেশ্যে হজে যাওর অনুমতি রয়েছে বলে অনেক ইসলামিক স্কলাররা বলেছেন।
আরো পড়ুনঃ ঈদুল আজহা ২০২৩ কত তারিখ
ঋতুকালীন অবস্থায় হজ্বঃ মহিলাদের যদি হজের দিন নামাজ না পড়ার ওজর থাকে তাহলে মিনা, আরাফা ও মুজদালিফার যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো আদায় করবে। শুধু তাওয়ায়াফে জিয়ারত করা স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ ঋতুকালীন অবস্থায় তাওয়াফ জিয়ারতের কাজ ব্যতীত সকল কাজই করতে পারবে।
ইহরাম অবস্থায় পর্দাঃ ইহরাম অবস্থায় পর্দার বিষয়ে বলা হয়েছে যে ইহরাম অবস্থায় নারীরা মুখমণ্ডল ঢেকে রাখতে পারবেনা। ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো নিষেধ কিন্তু ইহরামের সময় মুখমন্ডলে কাপড় লাগানো আর গায়রে মাহরামের সামনে ইচ্ছে করে মুখ খোলা রাখা আরেক বিষয়। "হযরত আয়েশা রা. বলেন, ইহরামের হালতে আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। লোকেরা যখন আমাদের নিকট দিয়ে অতিক্রম করত তো আমরা আমাদের চাদর মাথার সামনে ঝুলিয়ে দিতাম। চলে যাওয়ার পর সরিয়ে ফেলতাম।" -সুনানে আবু দাউদ।
ইহরামের পোশাকঃ মহিলাদের ইহরামের কাপড় পুরুষদের ন্যায় না করে ভিন্ন করা হয়েছে। মহিলাদের ইহরামের কাপড় সেলাইযুক্ত যেকোন রঙের হতে পারবে। তবে তারা এমন পোশাক পরবে যাতে পর্দার খেলাপ না হয় এবং ফেতনা ও কুদৃষ্টির আশংকা না থাকে। আর ইহরামের সময় মহিলাদের মুখে অর্থাৎ চেহারায় কাপড় লাগিয়ে রাখা নিষেধ।
ইজতিবা ও রমলঃ যখন তাওয়াফের সময় হবে তখন রমল ও সাঈর সময় সবুজ দুই পিলারের মধ্যবর্তী স্থান দৌড়ে অতিক্রম করতে পারবে না। এই কয়েকটি বিষয়ে মহিলাদের হজ্বে যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। আশা করি হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জানতে পেরেছেন।
হজ্জে মহিলাদের পর্দা
হজ্জে মহিলাদের পর্দা অবশ্যই করতে হবে। বেগানা পুরুষরা যেন চেহারা না দেখতে পায় এবং শরীরের কোন অংশ বোঝা না যায় সেধরণের কাপড় পরিধান করতে হবে। আর ইহরামের সময় মুখ খোলা রাখতে হবে তবে বেগানা পুরুষদের দেখলে মুখ ঢেকে ফেলতে পারবে। পরে আড়াল হলে আবার মুখমন্ডল খুলে দিতে হবে। হজ্জে মহিলাদের পর্দা অবশ্যই করতে হবে।
মাহরাম পুরুষ কে কে
মাহরাম শব্দটি হারাম শব্দ থেকে এসেছে। মাহরাম শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় যে যাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম এবং দেখা করা ও দেখা দেওয়া বা কথা বলা জায়েজ। চলুন তাহলে একজন নারীর জন্য মাহরাম পুরুষ কে কে জেনে নিন। মাহরাম পুরুষ হচ্ছে- দাদা, বাবা, ভাই, শশুর, স্বামী, ছেলে, দুধ ছেলে, নাতী, চাচা, ভাই বা বোনের ছেলে, নানা, মামা, মেয়ের জামাই। এই ১৪ জন হচ্ছে মহিলাদের জন্য মাহরাম পুরুষ। অর্থাৎ এদের সাথে বিবাহ জায়েজ না। আর এদের সাথে দেখা করা ও দেখা দেওয়া যাবে।
আশা করি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত তা জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি পড়ে হজ্ব পালনের আগে মহিলাদের যে বিষয়গুলো জানা উচিত ছাড়াও মাহরাম পুরুষ কে কে, মহিলা হাজির সঙ্গী হতে পারবেন কে ইত্যাদি বিষয় জানতে পেরেছেন। আশা করি এসকল তথ্যগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। তাই এধরণের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেশি বেশি জানতে ও পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন, ধন্যবাদ। 21021.
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url