জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত
জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে আমরা অনেকে অবগত নয়। জিলহজ্জ মাস হলো হিজরী বর্ষের সর্বশেষ মাস। আল্লাহতায়ালার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মাসের মধ্যে জিলহজ্জ মাস একটি তাই জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত রয়েছে অনেকগুলো। আজকের এই আর্টিকেল থেকে জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানব।
আপনি যদি জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল জুড়ে আমাদের সঙ্গে থাকুন। তাহলে চলুন দেরি না করে জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত
- জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত
- জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি
- জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা রাখা সুন্নাত
- জিলহজ্জের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
- শেষ কথা
জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত
ইংরেজি বছরের মত হিজরী বছরেও বারোটি মাস রয়েছে এর মধ্যে সর্বশেষ মাস হল জিলহজ মাস। হজ করার সর্বোত্তম কয়েকটি মাসের মধ্যে অন্যতম হলো জিলহজ মাস। আমরা মুসলিম হিসেবে অনেকেই জানি যে আল্লাহতালার কাছে চারটি মাস সর্বোত্তম এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ তার মধ্যে জিলহজ মাস রয়েছে। কিন্তু আমরা জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা রাখি না।
আরো পড়ুনঃ জিলহাদ মাসের ১০ দিনের ফজিলত আমল এবং রোজা
কিন্তু একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানতে হবে কারণ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস এই মাসে রোজা করা অনেক ফজিলতপূর্ণ। জিলহজ মাস অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। জিলহজ মাসের নবম দিন ও রাত আল্লাহ তায়ালার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
কারণ নবম দিন আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়ার দিন এবং রাত হল মুজদালিফায় অবস্থান করার রাত। তাই সবাই এই দিনটিতে রোজা রেখে থাকে। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ রোজা করার ব্যাপারে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ সবচেয়ে বেশি আশাবাদী ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, 'যে আরাফার দিনে রোজা রাখল অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা তার এক বছর পূর্বের এবং এক বছর পরের তথা দুই বছরের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন।'{মুসলিম}
আমরা অনেকেই মনে করি শুধুমাত্র যারা হজ করতে আরাফার ময়দানে অবস্থান করে সাধারণত তাদের জন্য এই বিধান কিন্তু তা নয়। এই বিধান সকলের জন্য প্রযোজ্য। শুধুমাত্র যারা আরাফাতে অবস্থান করবে তাদের জন্য এই বিধান প্রযোজ্য হবে না। কারণ আমাদের প্রিয় নবী সাঃ আরাফায় অবস্থানকালে এ রোজা করতেন না।
জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ বলেন, এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদতের থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজ মাসের প্রথম দশকের প্রত্যেকদিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। আর প্রতিটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের সমতুল্য। {তিরমিজি}
জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি
জিলহজ মাসে রোজা করতে হবে এই বিষয়ে আমরা অনেকেই জানি কিন্তু জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি? এ বিষয়ে তেমন কোন ধারণা নেই। যেহেতু এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত এবং আল্লাহ তালার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি? সে সম্পর্কেও আমাদের অবশ্যই ধারণা রাখা উচিত।
জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর থেকে অর্থাৎ জিলহজ্ব মাসের ১ তারিখ থেকে ৯ জিলহজ তারিখ পর্যন্ত দিনে রোজা রাখা এবং রাতে বেশি বেশি ইবাদত করার একজন মুসলমানের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, 'এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদতের থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজ মাসের প্রথম দশকের প্রত্যেকদিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য। আর প্রতিটি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের সমতুল্য।'{তিরমিজি}
জিলহজ মাসের ১ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত রাতে নফল নামাজ কোরআন তেলাওয়াত আল্লাহ তায়ালার জিকির তাওয়াস্তেগফার ইত্যাদি বেশি বেশি করে করতে হবে। রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন, ' আমার প্রতি ঈদুল আযহার দিন অর্থাৎ ১০ জিলহজ ঈদ পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা আল্লাহ এই মতের জন্য নির্দেশ দিয়েছে।'
তখন এক ব্যক্তির জিজ্ঞেস করলেন হে আল্লাহর নবী বলেন, যদি আমার কোরবানি করা সামর্থ্য না থাকে কিন্তু আমার কাছে এমন উট বা বকরি আসে যার দুধ পান করা ও মাল বহন করার জন্য তা পালন করি আমি কি তা কুরবানী করতে পারব? আল্লাহর নবী বলেন, না বরং তুমি তোমার মাথার চুল ও গোঁফ কেটে ফেলো এবং নাভির নিচে চুল পরিষ্কার করো। এগুলো আল্লাহর নিকট তোমার কোরবানি।
জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা রাখা সুন্নাত
জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানার পরে অবশ্যই আমাদের আল্লাহ তাআলার ইবাদত পোষণ করার জন্য রোজা করা উচিত। এর জন্য জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা রাখা সুন্নাত সে সম্পর্কে জানাটাও জরুরী। জিলহজ মাসের রোজার অনেক ফজিলত রয়েছে। জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা রাখা সুন্নাত? তা নিচে উল্লেখ করা হলো।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ্জ মাসের ১২ টি ফজিলত - জিলহজ্জ মাসের গুরুত্ব
জিলহজ মাসের রোজা ৯টি। জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা অর্থাৎ ১ তারিখ থেকে শুরু করে ৯ তারিখ পর্যন্ত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ রোজা রাখতেন। তাই একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের সঠিকভাবে ইবাদত পালন করার জন্য জিলহজ মাসের শুরু থেকে নয় তারিখ পর্যন্ত রোজা রাখা সুন্নত। কারণ আমাদের প্রিয় নবী রোজা রেখেছেন।
বিশেষ করে আরাফাতের দিন রোজা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যারা হজ পালনের জন্য আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে তাদের জন্য রোজা রাখা উচিত নয়। আমাদের প্রিয় নবী বলেন, জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেকদিন রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য এবং প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।
জিলহজ্জের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস
জিলহজ্জের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস উল্লেখ করা হলো। জিলহজ্জ মাসের ৯ তারিখ রোজা রাখার ব্যাপারে আমাদের প্রিয় নবী বলেছেন, ' যে আরাফার দিন রোজা রাখল অবশ্যই আল্লাহ তা'আলা তার এক বছর পূর্বের এবং এক বছর পরের তথা দুই বছরের পাপগুলো ক্ষমা করে দেবেন'{মুসলিম} যারা হজ আদায়ের জন্য আরাফায় অবস্থান করবে তাদের জন্য এই বিধান নয়।
জিলহজ মাসের প্রথম ১০ দিনের ফজিলত সম্পর্কে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ বলেন, এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের প্রথম দশকের ইবাদত থেকে অধিক প্রিয়। জিলহজের প্রথম দশকের প্রত্যেকদিনের রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য এবং প্রত্যেক রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের সমতুল্য।{ তিরমিজি}
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, এমন কোন দিন নেই যে দিনগুলোতে ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশকের ইবাদতের থেকে অধিক প্রিয়। তাহলে আমরা উপরের হাদিসগুলো থেকে বুঝতে পারি যে জিলহজ মাসের রোজা রাখার ফজিলত কত বেশি। আশা করি জিলহজ্জের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলতঃ শেষ কথা
জিলহজ্জ মাসের রোজা রাখার ফজিলত, জিলহজ্জ মাসের রোজা কয়টি? জিলহজ্জ মাসে কয়টি রোজা রাখা সুন্নাত, জিলহজ্জের রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস। সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। একজন প্রকৃত মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে জানা উচিত।
আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসের রোজা রাখার ফজিলত সম্পর্কে জানুন
এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।১৬৮৩০
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url