OrdinaryITPostAd

কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় - হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় আপনি কি জানতে চান? যদি না জেনেন তাহলে কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় এবং হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত জানতে নিচে পড়ুন। হজের মাধ্যমে আমরা আমাদের আগের পাপ সব মুছে ফেলতে পানি। তাই আমি আপনাদের কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় এবং হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত জানাবো।

হজ সর্বস্তরের মুসলমানদের একত্রিত করে এবং আল্লাহর দৃষ্টিতে আমরা সকলেই সমান তা স্মরণ করিয়ে দেয়। আপনার সংস্কৃতি, জাতি বা মর্যাদা যাই হোক না কেন যারা হজ করেন তারা সবাই একই আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য একত্রিত হন। হজ করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। চলুন নিচে দেখে নিন কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় এবং হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত।

সূচিপত্রঃ কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয়

কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয়

সকল মুসলমানদের হজ করার কথা বলা হয়েছে কিন্তু তার সাথে সাথে হজ ফরজ হওয়ার কিছু শর্ত রয়েছে। এখানে কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় তা জানবো এটা হজ ফরজ হওয়ার একটি শর্ত। হজ করতে যে পরিমাণ সম্পদ লাগে তা হল একজন মানুষের শরীর সুস্থ থাকতে হবে এবং হজে যাতায়াতের একটি মাধ্যম যার লাগবে যার সাহায্যে তিনি আল্লাহর পবিত্র ঘরে পৌঁছাতে পারেন যেমন একটি বিমান, একটি গাড়ি বা একটি চড়নকারী প্রাণী। 

যদি তার সেগুলির একটিকে ভাড়া দেওয়ার অর্থ থাকে অথবা তার হজে যাওয়া থেকে আসা পর্যন্ত তার সকল খরচ এবং তার পরিবারের সকল খরচের টাকা থাকে এই পরিমাণ সম্পদ থাকলে তিনি আল্লাহর ঘরে হজ করতে পারবেন। আরো ভালো করে বলতে গেলে একজন মানুষের তার এবং তার ওপর যাদের ভরনপোষণ এর দায়িত্ব আছে তাদের প্রয়োজন মিটানোর পরে তার কাছে যে সম্পদ আছে তা দিয়ে যদি হজের যাওয়া আসার খরচ থাকে তাহলেই তার হজ ফরজ হয়ে যাবে।

আরো পড়ুনঃ রমজানে ওমরাহ্‌ প্যাকেজ ২০২৩ - উমরাহ হজ্জ প্যাকেজ ২০২৩

উদাহরণ হল কারো যদি ৪টি বাড়ি থাকে তাহলে ৩টি বাড়ির আয়ে যদি তার সংসার চালানো হয়ে যায় আর বাকী একটি বাড়ির আয় যদি এত পরিমাণ হয় যে তার হজে যাতায়াতের খরচ হয়ে যাবে তাহলে সে হজ করতে পারবে। আবার এখন মহিলাদের কাছে অনেক গয়না থাকে তাদের গয়নার দাম যদি হজে যাওয়া আসার টাকার পরিমাণ হয়। তাহলে সেই মহিলার ওপর হজ ফরজ হয়ে যাবে। তবে তার মাহারাম থাকতে হবে।

নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যার ওপর হজ ফরজ হয়েছে সে তাড়াতাড়ি হজ করে নাও দেরি করনা। কারণ তোমার জীবনে ভবিষ্যতে কি হবে তুমি জানোনা। অন্য একটা হাদিসে বলেছেন যাদের হজ করার ইচ্ছা আছে তারা যেন খুব তাড়াতাড়ি হজ করে নেয়। কারণ সে কালকে অসুস্থ হয়ে মারাও যেতে পারে। এখান থেকে আমরা কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় তা ভালোভাবে জানতে পারি।

হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত

সকল মুসলমানদের ওপর হজ ফরজ হয় যদি তার হজের শর্ত গুলো মেনে হজ্জ করে। হজের শর্ত গুলো হল প্রথম তাকে মুসলিম হতে হবে যদি সে অন্য ধর্মের হয় তাহলে সে মক্কায় প্রবেশ করতে পারবেনা। ২য় শর্ত হল বুদ্ধি থাকতে হবে মানে একজন সুস্থ বুদ্ধির মানুষ হতে হবে তাকে পাগল হওয়া যাবে না। ৩য় শর্ত হল প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে শিশু অবস্থায় হজ হবে না। যদি কেউ শিশু বয়সে হজ করে তাহলে তার পাপ হবে না কিন্তু সেই হজ দিইয়ে তার ফরজ পালন হবে না।

হাদিসে আছে যদি শিশু অবস্থায় কেউ হজ করে তাহলে সে যখন প্রাপ্তবয়স্ক হবে তার জন্য আরো একটা হজ করা ফরজ হয়ে যাবে মানে তাকে আরো একটা হজ্জ করতে হবে। ৪র্থ শর্ত হল স্বাধীন হওয়া মানে কারো ক্রীতদাস বা গোলাম এর হজ্জ ফরজ নয়। শিশুদের মত তারাও যদি ক্রীতদাস থাকতে হজ্জ করে তাহলে সে মুক্ত হয়ে গেলে তার জন্য আর একটা হজ্জ ফরজ হয়ে যাবে। ৫ম শর্ত হল শারিরিক ও আর্থিক ভাবে সামর্থ্য থাকতে হবে।

আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসের রোজা রাখার ফজিলতের বিস্তারিত জেনে নিন

হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি কারণ নবী সাঃ বলেছেন যদি তুমি হজের এই ৫টি শর্ত মেনে হজ করতে পারো তাহলে তোমার ওপর হজ ফরজ তখন তুমি দেরি করনা যত তাড়াতাড়ি পারো হজ করে নাও। কিন্তু যদি এই ৫টি শর্তের মধ্যে একটি যদি তোমার পূরণ করার সামর্থ না থাকে তাহলে তোমার ওপর হজ ফরজ নয়। তারপরেও যদি কেউ হজ করে তাহলে তার হজ তো হবেই না বরং সে এই অবস্থায় হজ করলে পাপ করবে। তাই হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। আল্লাহ আমাদের হজের শর্ত মেনে হজ তৌফিক দান করুণ। আমিন

হজ করার ফজিলত বা উপকারিতা

হজের উপকারিতা অনেক। আমরা জীবনে যা পাপ করেছি হজের মাধ্যমে আল্লাহ তা মাপ করে দেন। তাই হজের গুরুত্ব অনেক বেশি। এখানে হজের ৫টি ফজিলত বা উপকারিতা আলোচনা করবো। উপরে আমরা কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় তা জেনেছি।

হজের সামাজিক প্রভাবঃ হজ বিশ্বের যে কোনো স্থানে মানুষের সবচেয়ে বড় বার্ষিক সমাবেশ। সমস্ত রঙ, পটভূমি এবং সম্পদের মানুষ তাদের স্রষ্টার সামনে সমান হিসাবে একত্রিত হয়। একবার আপনি সেখানে গেলে কোন সাদা, বাদামী বা কালো থাকবে না। কোন ধনী বা দরিদ্র থাকবে না থাকবে আছে মুসলিম। প্রত্যেকেই একই রকম ইহরাম বা কাপড় পরিধান করে বোঝানোর জন্য যে কেউ তার মুসলিম ভাইয়ের চেয়ে উত্তম নয়। এটি বিশ্বের মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করে, এটি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভ্রাতৃত্ব ও ভালবাসাকে লালন করে।

হজের আধ্যাত্মিক উপকারিতাঃ মুসলমান হিসেবে আমাদের জীবনের সব পর্যায়ে আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। আমরা আল্লাহকে আমাদের বাড়িতে, আমাদের ব্যবসায় এবং এমনকি রাস্তায় হাঁটতেও ভুলে যাব না। কিন্তু আমরা অধিকাংশই দুনিয়ার চাপের কাছে নতি স্বীকার করি এবং আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে ব্যর্থ হই। তাই হজ আল্লাহর স্মরণে করা হয়।

পাপ থেকে মুক্তিঃ আমরা সবাই পাপী এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। হজ পালনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। হজের সর্বোত্তম দিক হল যে মুমিনের হজ কবুল হয় তার আগের যত গুনাহ সব সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়। আমাদের প্রভু কত দয়ালু।

চরিত্রে হজের তাৎপর্যঃ হজ হজযাত্রীর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে একটি কঠিন সময় এবং এর শেষে আপনি আল্লাহর কাছাকাছি চলে যান এবং আপনার সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যায় মাশাআল্লাহ! হজ্জ এমন একটি অভিজ্ঞতা যা আপনাকে আরও ভালোর দিকে নিয়ে যায়। হজ আপনাকে ধৈর্য, শৃঙ্খলা শেখায় এবং আপনার সাথের মুসলিমদের মধ্যে বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করে।

আরো পড়ুনঃ জিলহজ মাসে চুল নক কাটা যাবে কিনা জেনে নিন

হজ্জের চূড়ান্ত সুবিধাঃ মুসলমান হিসেবে একটা লক্ষ্য আছে যেটার দিকে আমরা সবাই আমাদের সারাজীবনের জন্য চেষ্টা করি। আমরা বিশ্বাস করি যে এই পৃথিবীটি একটি বিশ্রামের স্থান নয়, কেবল একটি ক্ষণস্থায়ী এবং জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে আমাদের জায়গা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের যা করতে পারি তা করতে হবে। আর জান্নাতই হল হজের চূড়ান্ত পুরস্কার। তাহলে হজের সকল শর্থ এবং কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় তা জেনে আমরা হজ্জ করবো ইনশাআল্লাহ।

অনুদান নিয়ে হজ করা কি জায়েজ

মিশরের প্রাক্তন মুফতি ডক্টর নাসর ফরিদ ওয়াসিল হজ সম্পর্কে বলেছেন যে একটি কোম্পানির কাছ থেকে তার কর্মচারীদের বা কিছু ধনী থেকে দরিদ্রদের জন্য অনুদান সম্পর্কে। ইসলামের আইনবিদগণ একমত যে ব্যক্তির যদি অর্থ না থাকে তবে সে হজ করতে বাধ্য নয়। যদি কোন অপরিচিত ব্যক্তি তাকে হজ্জ করার জন্য অর্থ প্রদান করে, তবে সে যদি না চায় তাহলে তাকে সেই টানা নিতে হবে। 

কিন্তু যদি সে সেই টাকা হজ করার জন্য নিয়ে থাকে এবং সেই টাকা দিয়ে হজ্জ পালন করে তবে তার হজ বৈধ এবং এটি তার জন্য ফরজ হজ্জ আদায় করে। হজ সবসময় জায়েয যদি অর্থ বৈধভাবে অর্জিত হয় তা সে ব্যক্তির নিজের অর্থই হোক বা অন্যের অর্থ যা স্বেচ্ছায় ও সহজে দান করাই হোক।

কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় - শেষ কথা

ইবাদতের ওপর ভিত্তি করে ইসলামের বিভিন্ন স্তম্ভ রয়েছে। হজ হল ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি যা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তাদের জীবনে অন্তত একবার করার কথা বলা হয়েছে। 628 খ্রিস্টাব্দে যখন নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তার প্রথম হজ করেন, তখন তিনি পবিত্র হজ যাত্রার ভিত্তি স্থাপন করেন এবং হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর ঐতিহ্যকে আবার শুরু করেন। সকল মানুষের হজ করার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে এই শর্ত গুলো মেনে সবার হজ করা উচিত। উপরে আমরা হজের সকল শর্তের সাথে সাথে কি পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয় এবং হজ ফরজ হওয়ার গুরুত্ব ও ফজিলত আলোচনা করেছি। [জব আইডি=২২৪৯৮]

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url