রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা
প্রিয় বন্ধুরা রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। প্রতিটি মুসলিম নর নারী জানে রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে। তবুও অনেকেই রমজান মাসকে অবহেলার সাথে পার করে থাকে। তাই আমাদের উচিত রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে জানা।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
কনটেন্ট সূচিপত্রঃ রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত
- ভূমিকা
- রমজানকে রহমতের মাস বলা হয় কেন
- রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস
- রমজান রহমত মাগফিরাত নাজাত এর মাস হওয়ার কারণ
- উপসংহার
রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাতঃ ভূমিকা
প্রতিটি মুসলিম এর কাছে রমজান মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। কারণ আল্লাহ তায়ালার কাছে রমজান মাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। আল্লাহ তায়ালা যে কয়টি মাসকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তার মধ্যে রমজান মাস সবচেয়ে উপরে। তাই রমজান মাসে আমাদের উচিত অবহেলা না করে রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে জানা।
আরো পড়ুনঃ রমজানের গুরুত্বপূর্ণ ৮টি ইবাদাত - রমজানের ইবাদতের ফজিলত
সেই উদ্দেশ্যে আজকের এই আর্টিকেলে রমজানকে রহমতের মাস বলা হয় কেন? রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস, রমজান রহমত মাগফিরাত নাজাত এর মাস হওয়ার কারণ বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হবে।
রমজানকে রহমতের মাস বলা হয় কেন?
রমজান মাসের চাঁদ দেখার সাথে সাথে পৃথিবীজুড়ে নেমে এলো এক আধ্যাত্মিক স্পন্দন। বিশ্বের সব মুসলমানের চিত্ত হলো আলোকিত। রহমত, বরকত, নাজাতের পয়গান নিয়ে সূচিত হলো আত্মিক ও শারীরিক পরিশুদ্ধির মাস। হযরত মুহাম্মদ সাঃ দয়া ভরা আবেগ উচ্ছ্বাস নিয়ে রমজানকে স্বাগত জানাতেন।
রমজান মাস আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস। এগারো মাস জাগতিক স্বপ্ন স্বাদে ডুবে থাকা বেপথের মানুষটিও রমজানে খুঁজে পাবে আল্লাহর একান্ত রহমত। খুঁজে পাবে অতীতে পাপ মোচনের হীরকসন্ধান। মাহে রমজান এমন কল্যাণময় মাস, যার প্রথম দশদিন রহমত, দ্বিতীয় দশদিন বরকত ও শেষ দশদিন নাজাতের আলোয় দীপ্ত।
এ পবিত্র ও বরকতময় রমজান মাসের মধ্যে রয়েছে মহিমান্বিত লায়লাতুল কদর, যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম, শ্রেষ্ঠ। রয়েছে ইতিকাফের মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালার ইবাদতে নিবিড়ভাবে বিলীন হওয়ার অবারিত সুযোগ। পবিত্র কোরআন নাজিলের সম্মানিত মাসও রমজান। ফলে আল্লাহর নির্দেশ সম্বলিত আল কোরআনের সঙ্গে মুমিন মুসলমানের একাত্ম হওয়ার মাসও রমজান।
রমজান মাসের প্রতিটি মুহূর্ত মহামূল্যবান। দিন ও রাতের প্রতিটি ক্ষণ রোজা, নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, তাসবিহ, তাহলিলে পরিপূর্ণভাবে রমজানকে উদযাপন করাই প্রতিটি মুসলিম নারী পুরুষ অবশ্য কর্তব্য। ফরজ, ওয়াজিবের পাশাপাশি সুন্নতের অনুসরণ করে রমজানের প্রতিটি মুহূর্তকে সফল করা বিশ্বাসী মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব।
হজরত মুহাম্মদ সাঃ বলেন, "রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস আর রমজান আমার উম্মতের মাস।" এ হাদিসের ব্যাখ্যা হলো, রজব মাস জমি চাষ করার, শাবান মাস বীজ বপন করার আর রমজান মাসে ফল লাভ করার অফুরন্ত নেয়ামত পাওয়া যায়। আল্লাহতালা রমজান মাসে তার রহমতের চাদরে গোটা দুনিয়াকে ঢেকে দেয়।
রমজান মাসের প্রথম দশ দিন কে রহমত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বলা হয়ে থাকে রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের প্রতি রহমত নাযিল করে থাকেন। সাধারণত তাই রমজান মাসের মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস
আমাদের সকলের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন হল রহমত, দ্বিতীয় দশদিন হল মাগফিরাত এবং শেষের ১০ দিন হল নাজাত। সেই জন্য রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস হিসেবে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে প্রথম ১০ দিন আল্লাহতালার তাঁর বান্দাদের প্রতি রহমত ও দয়া বন্টন করে থাকেন। সাধারণত তাই রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত বলা হয়।
দ্বিতীয় দশদিন আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের ক্ষমা করে দেন এবং শেষ দশ দিন আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের জাহান্নাম থেকে নাজাত বা মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করান। রমজান মাস রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস এই বিষয়ে আমাদের সকলের জানা রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ রমজান মাসের সেরা ২০ টি আমল - রমজানের রোজার ফজিলত
হাদিসে রয়েছে, "প্রতিরাতে জাহান্নাম থেকে অসংখ্য মানুষকে মুক্ত করা হয় রমজানে।"{তিরমিজি} রহমত মাগফিরাত ও নাজাত ভাগ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি অনেকেই বুঝতে পারে না। রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন যেহেতু রহমতের বা দয়ার, সুতরাং এই ১০ দিন আমাদের করণীয় হলো আল্লাহ পাকের দয়া-মায়া সংক্রান্ত নামসমূহ হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব ও প্রভাব এবং বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা।
রমজান মাসের মধ্যের ১০ দিন যেহেতু মাগফিরাত বা ক্ষমার সুতরাং এই ১০ দিন আমাদের করণীয় হবে আল্লাহ পাকের ক্ষমাসংক্রান্ত নামগুলো হৃদয়ঙ্গম করে এর ভাব প্রভাব ও বৈশিষ্ট্য অর্জন ও অধিকার করে নিজের মধ্যে আত্মস্থ করার চেষ্টা করা এবং আজীবন তার ধারক বাহক হয়ে তা দান করা বা বিতরণ করা তথা আল্লাহর গুণাবলি নিজের মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির কাছে পৌঁছে দেওয়া।
রমজান মাসের শেষ ১০ দিন নাজাত বা মুক্তির, সুতরাং এই সময়ে আমাদের করণীয় হলো দুনিয়ার সবকিছুর আকর্ষণ ও মোহ থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর প্রেমে বিভোর হওয়া। রমজান মাসের শেষ দশ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ শেষ ১০ দিনের ভিডিও রাতগুলোতে সর্বোত্তম রাত লাইলাতুল কদর রয়েছে। এই দশ দিনে আল্লাহতালা তার বান্দাদেরকে নাজাত দিয়ে থাকেন।
রমজান রহমত মাগফিরাত নাজাত এর মাস হওয়ার কারণ
প্রতিটি মুসলিমের কাছে রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত পাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রমজান মাস হল আল্লাহতালার কাছে সবথেকে গ্রহণযোগ্য এবং আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তী যাওয়ার মাস। তাই রমজান মাস থেকে আমরা অবহেলার সাথে পার না করে আল্লাহতালার এবাদত পালনের মাধ্যমে পার করতে পারি। রমজান রহমত মাগফিরাত নাজাত এর মাস হওয়ার কারণ অনেকেই জানে।
রমজানের রোযা আল্লাহ প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরজ করেছেন। রমজানের রোজা সম্পর্কে আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, "হে মুমিনগন! তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হয়েছে। যেমন ফরজ করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের উপর। যাতে করে তোমরা তাকওয়া ও পরহেজগারী অর্জন করতে পারো।" {সূরা বাক্বারা, আয়াতঃ ১৮৩}
রহমত, মাগফেরাত আর নাজাতের বার্তা নিয়ে পবিত্র মাহে রমজান প্রতিবছর আমাদের মাঝে ফিরে আসে। নিঃসন্দেহে অন্যান্য মাস অপেক্ষা রমজান মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা অসীম। মহিমান্বিত মাসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ও গুরুত্বকে সঠিকভাবে অনুধাবন করা প্রতিটি মুমিনের উপর একান্ত অপরিহার্য। কারণ এই মাসে আল্লাহর নৈকট্য ও মানুষের পরিশুদ্ধতা অর্জনের রহস্য নিহিত।
হাদীসে রহমত-কে প্রথম দশকে, মাগফিরাত কে দ্বিতীয় দশকে আর মুক্তিলাভ-কে তৃতীয় দশকে আবদ্ধ করা হয়েছে। অথচ আমরা জানি আল্লাহ তাআলার রহমত ও মাগফিরাত ব্যাপক। এটা কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত। তাই আল্লাহ তাআলার ব্যাপক বিস্তৃত বিষয়কে সংকীর্ণ করে ফেলারঅধিকার আমাদের নেই। আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, রমজানের প্রতিটি দিন রহমত, মাগফিরা, বরকত ও নাজাত দিয়ে সমৃদ্ধ।
রমজান মাসের প্রথম রজনীর যখন আগমন ঘটে তখন শয়তান ও অসৎ জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এ মাসে একটি দরজাও খোলা হয় না। জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এ মাসে তা আর বন্ধ করা হয় না।
আরো পড়ুনঃ মসজিদে প্রবেশের দোয়া ও মসজিদ থেকে বের হওয়ার দোয়া
প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে ঘোষণা দিতে থাকে যে, "হে সৎকর্মের অনুসন্ধানকারী তুমি অগ্রসর হও হে অসৎ কাজের অনুসন্ধানকারী তুমি থেমে যাও" এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে বহু মানুষকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।
রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাতঃ উপসংহার
রমজানকে রহমতের মাস বলা হয় কেন? রমজান রহমত মাগফিরাত ও নাজাতের মাস, রমজান রহমত মাগফিরাত নাজাত এর মাস হওয়ার কারণ, রমজানের রহমত মাগফিরাত নাজাত সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত।
আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে এইরকম তথ্যমূলক নতুন কোন আর্টিকেলে। সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন ধন্যবাদ।২০৮৭৬
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url