OrdinaryITPostAd

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম আমরা অনেকেই জানতে চায়। শবে বরাত হল মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। তাই এ রাতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ নামাজ আদায় করে থাকে। কিন্তু অনেকেই শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানেনা। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

আপনি যদি শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

পেজ সূচিপত্রঃ শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

পবিত্র শবে বরাত কি

আমরা যারা ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মানুষ রয়েছে সাধারণত তারা পবিত্র শবে বরাত এই কথাটির সাথে পরিচিত। কারণ পবিত্র শবে বরাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন আমাদের ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। তার আগে প্রথমে আমাদের পবিত্র শবে বরাত কি? এই বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। তাই আপনাদের সুবিধার্থে এখন আমরা পবিত্র শবে বরাত কি? তা জানবো।

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসের ফজিলত - শাবান মাসের দোয়া - সাবান মাসের রোজা

পবিত্র শবে বরাত অর্থাৎ লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরি সাবান মাসের ১৪, ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে পালিত মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। বাংলাদেশে এই রাতটিকে শবে বরাত নামে অভিহিত করা হয়। ইসলামী বিশ্বাস মতে এই রাতে আল্লাহ তাআলা বান্দাকে বিশেষভাবে ক্ষমা করে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের অনেক মুসলমান নফল ইবাদতের মাধ্যমে এই রাতটিকে উদযাপন করে থাকে।

এই রাতে মুসল্লীগণ আল্লাহ তায়ালার কাছে নফল ইবাদত করে ক্ষমা চায় এবং তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য ও আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চাই। শবে বরাত একটি ফারসি শব্দ শবে বরাত নামে কোন শব্দ আরবিতে নেই। তবে শাবান মাসের গুরুত্ব রয়েছে শাবান মাসের মধ্যে তারিখের গুরুত্ব রয়েছে যাকে লাইলাতুল বরাত হিসেবে অভিহিত করা হয়।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম - পবিত্র শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই আল্লাহ তাআলার ইবাদত করতে হবে। আল্লাহ তাআলার ইবাদত ছাড়া আমাদের অন্য কোন বিকল্প নেই। পবিত্র শবে বরাতের নফল নামাজ আদায় করি কিন্তু অনেকে আছে পবিত্র শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানেনা। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলে আমরা এখন পবিত্র শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

শব শব্দের অর্থ হলো রাত এবং বারাত শব্দের অর্থ হলো সৌভাগ্য। তাহলে শবে বরাত শব্দের অর্থ হলো সৌভাগ্যের রজনী বা রাত। হিজরি বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত্রি বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ও মহিমান্বিত একটি রাত। মহান আল্লাহতালা এই রাতে বান্দাদের জন্য তার অবশেষ রহমতের দরজা খুলে দেয়।

ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা এই রাতে তাদের সকল ভুল ভ্রান্তি পাপ কাজের গভীর অনুশোচনা করে মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে। নফল নামাজ, জিকির, কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত সহ বিভিন্ন এবাদত করে রাত্রিকে উদযাপন করে থাকে। বেশিরভাগ সময়ে মুসল্লিগণ নামাজ পড়ে এ রাত থেকে পালন করে।

শবে বরাতের নামাজ দুই রাকাত করে যত বেশি পড়া যায় তত বেশি সওয়াব পাওয়া যাবে। আপনি যদি সারারাত নামাজ পড়েন তাহলে আপনি সারারাত নামাজ পড়ার নেকি পাবেন। কেউ যদি নামাজ আদায় না করে অর্থাৎ ২ রাকাত নামাজ আদায় করে তাহলে সে অনুযায়ী সওয়াব পাবে। আর কেউ যদি নামাজ আদায় না করে তাহলে তার কোন গুনাহ হবে না কারণ এটি নফল ইবাদত।

শবে বরাতের নামাজের নিয়ম হলো আপনাকে প্রথমে শবে বরাতের নামাজের নিয়ত করতে হবে। আমরা জানি যে নিয়ত হল অন্তরের একটি কাজ। মুখে বলে নিয়ত করতে হবে এমন কোন কথা নেই আপনি অন্তরে নিয়ত করবেন শবে বরাতের নফল নামাজের। এরপরে নিয়মিত নামাজে যেভাবে কেবলামুখী হয়ে তাকবীরে তাহরীমা সানা পড়েন ওভাবে পড়তে হবে।

এরপরে নিয়মিত নামাজের মত দুই রাকাত দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করতে হবে। আপনি দুই রাকাত দুই রাকাত করে আপনার ইচ্ছা মত যত ইচ্ছা নামাজ পড়তে পারেন। যত বেশি নামাজ পড়বেন তত বেশি সওয়াব এর অংশীদার হবেন।

শবে বরাতের ফজিলত

প্রিয় বন্ধুরা আমরা অনেকেই শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জানিনা। তাই এই দিনটিকে ততটা গুরুত্ব না দিয়ে গুরুত্বহীনভাবে পালন করে থাকি। আপনি যদি শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জানেন তাহলে এই দিনটিতে এবাদত করতে বাধ্য হবেন। তাহলে চলুন শবে বরাতের ফজিলত সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ শাবান মাসে রোজা কয়টি - শাবান মাসে রোজা রাখার নিয়ম

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, ১৪ শাবান দিবাগত রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাত ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো।

কেননা এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন, "কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছো কি? আমি ক্ষমা করব কোনো রিজিক প্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব।" এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। {ইবনে মাজাহঃ ১৩৮৪}

এ ছাড়া প্রতি মাসের ৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামেবিদের নফল রোজা তো আছেই, যা হজরত আদম (আঃ) পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ)ও পালন করতেন যা মূলত সুন্নাত। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব (রাঃ) বলেন, এদিনের রোজা আইয়ামেবিদের রোজার অন্তর্ভুক্ত। {লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠাঃ ১৫১}

এ ছাড়া মাসের প্রথম তারিখ, মধ্য তারিখ ও শেষ তারিখ নফল রোজা গুরুত্বপূর্ণ। শবে বরাতের রোজা এর আওতায়ও পড়ে। সওমে দাউদি পদ্ধতিতে এক দিন পর এক দিন রোজা পালন করলেও প্রতিটি বিজোড় তারিখ রোজা হয় এবং শবে বরাতের রোজার শামিল হয়ে যায়।

আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বেশি বেশি নফল ইবাদত করতেন। শাবান মাসে কখনো ১০টি, ১৫টি, ২০টি নফল রোজা কখনো এর থেকে বেশি বেশি রাখতেন। এমনকি উম্মুহাতুল মুমিনিনগণ বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) শাবান মাসে এভাবে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন, মনে হতো, তিনি আর কখনো রোজা ছাড়বেন না। (মুসলিম)

সংগ্রহঃ প্রথম আলো

শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত

শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত? এ বিষয়ে অনেকেই জানতে চায়। আমরা অনেকেই শবে বরাত উপলক্ষে নামাজ আদায় করে থাকি। সাধারণত এই নামাজ পড়লে অনেক সওয়াব পাওয়া যায় কিন্তু না করলে কোন গুনাহ হয় না। উপরের আলোচনায় আমরা শবে বরাতের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। এখন শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত? এ বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব।

শবে বরাতের নির্দিষ্ট কোন নামাজ কোরআন বা হাদিসে উল্লেখ করা নেয়। তবে হাদিসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যখন শাবান মাসের মধ্য দিবস আসবে তখন তোমরা রাতে নফল নামাজ পড়বে এবং দিনে রোজা পালন করবে। ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হলো নামাজ। সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ { ইবনে মাজাহ শরীফঃ ১৩৮৪}

যেহেতু হাদিসে বা কুরআনে কোথাও শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হবে তা উল্লেখ করা নেই তাই এই রাতে দুই রাকাত করে আপনার যত খুশি নামাজ আদায় করতে পারবেন। যার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। আপনি চাইলে ২ রাকাত পড়তে পারেন আবার চাইলে ১০ রাকাত পড়তে পারেন অথবা মন চাইলে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করতে পারেন। সেটা আপনার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। আশা করি শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত? বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়?

প্রিয় বন্ধুরা শবে বরাত সম্পর্কে এমন কোন মুসলমান নেই যে জানে না। এখন আমরা শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়? এ বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করব। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়? জানে না। তাদের জন্য চলুন শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়? জেনে নেওয়া যাক।

শবে বরাত হচ্ছে ইবাদতের একটি রাত। এই দিনে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। শবে বরাতের নামাজ হচ্ছে নফল নামাজ। আপনি যদি এই নামাজ আদায় করেন তাহলে অনেক সওয়াব পাবেন আর যদি আদায় না করেন তাহলে কোন গুনাহ হবে না। আপনি প্রতিনিয়ত যে নামাজ আদায় করেন ওই নামাজ এবং নফল নামাজের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

আরো পড়ুনঃ ঈদুল ফিতর ২০২৩ কত তারিখ বাংলাদেশ - ২০২৩ সালে রোজার ঈদ

কোরআন এবং হাদিসে শবে বরাতে কত রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে এই বিষয় সম্পর্কে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা নেই। তাই আপনি যদি বেশি সওয়াব পেতে চান তাহলে যত ইচ্ছা নামাজ পড়তে পারেন। কিন্তু নফল নামাজ পড়ার নিয়ম হচ্ছে দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা রাকাত নামাজ আদায় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি ৮ রাকাত ১০ রাকাত, ১২ রাকাত, ১৬ রাকাত, ২০ রাকাত নামাজ আদায় করতে পারেন।

শবে বরাতের নামাজের নিয়মঃ শেষ কথা

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে, পবিত্র শবে বরাত কি? পবিত্র শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, শবে বরাতের ফজিলত, শবে বরাতের নামাজে কত রাকাত? শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত পড়তে হয়? এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয় গুলো জানতে পেরেছেন। এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। ১৬৮৩০

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url