রেশম চাষ পদ্ধতি - রেশম চাষ হয় কোন জেলায় - রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা
রেশম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে যদি আপনার বিস্তারিত জানা থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি রেশম চাষ পদ্ধতি অনুসরণ করে একজন সফল একজন উদ্যোক্তা হতে পারবেন। এবং রেশম চাষ করে মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। রেশম চাষ পদ্ধতি ও রেশম চাষ খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে শেষপর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র: রেশম চাষ পদ্ধতি - রেশম চাষ হয় কোন জেলায়
রেশম চাষ পদ্ধতি - রেশম চাষ খরচ
রেশম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে নিচে সবিস্তারে আলোচনা করা হবে। সেইসাথে রেশম চাষ খরচ কেমন? সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা, রেশম চাষ বিজ্ঞান ও রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে।
আপনি যদি রেশম চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে রেশম চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে। আপনি যদি রেশম চাষ পদ্ধতি ও রেশম চাষ খরচ সম্পর্কে না জানেন তাহলে কিন্তু রেশম চাষ করতে পারবেন না। নিচে বিস্তারিতভাবে রেশম চাষ পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।
তুঁত পাতা সংগ্রহ করা। রেশম চাষ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে তুঁত পাতা সংগ্রহ করতে হবে আপনি চাইলে নিজেও তুঁত গাছের বাগান লাগাতে পারেন। অথবা পাতা বাগান থেকে তুত পাতা ক্রয় করতে পারেন। নিজের বাগান করে হোক অথবা অন্যের বাগান থেকে ক্রয় করে হোক, যেভাবেই হোক মূল কথা হলো আপনাকে তুঁত পাতা সংগ্রহ করতে হবে। তুঁত কেননা পাতা সংগ্রহ না করে আপনি রেশম চাষ করতে পারবেন না।
রেশমের লার্ভা সংগ্রহ ও প্রতিপালন: আপনি যদি রেশম চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে রেশমের লার্ভা সংগ্রহ করতে হবে এবং সে গুলোকে পালন করতে হবে ভালো মানের রেশম লার্ভা সংগ্রহ করে তারপর সেগুলো কে পালন করতে হবে।
রেশমের লার্ভা পালন করার জন্য আপনাকে বিশেষ ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করতে হবে। শীতকালে ঘরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করার জন্য রুম হিটার অথবা চুলা ব্যবহার করতে হবে। ঘরের তাপমাত্রা সঠিক রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: নতুন বোরকা ডিজাইন ২০২২ ছবি ডাউনলোড করুন
ডিম ফোটানো। আপনি যদি ভালো মানের ডিম সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে সেই দিনগুলো থেকে ১০ থেকে ১১ দিনের মধ্যেই লার্ভা বা পুল বের হবে। ভালো মানের ডিম সংগ্রহ করার পর ২৫ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ৮০% আদ্রতায় রেখে দিতে হবে। ডিম গুলো শোধন করার জন্য পাঁচ মিনিট ফরমালিনযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৮/৯ দিনের মাথায় ডিম গুলো উপরে কালো সিট পড়বে। তখন ডিমগুলোকে ঢেকে রাখতে হবে। ১০/১১ দিনের মধ্যেই ডিম ফেটে লার্ভা বা পুল বের হয়ে আসবে।রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা ও রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
লার্ভা। ডিম থেকে লার্ভা বের হওয়ার পর ২০ থেকে ২৫ দিন সে অবস্থাতেই থাকবে এ সময় লার্ভা দেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে তুঁত গাছের পাতা খেতে দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যেই তারা চারবার খোলস বদলায়। লার্ভা অবস্থায় চারবার তাদের অবস্থান পরিবর্তন হয় চারবার অবস্থা পরিবর্তন হওয়ার পরে পঞ্চম বারে তারা কোকুন বা পিউপা বা পুত্তলি তৈরি করে।
পুত্তলি: পুত্তলির মধ্যে পিউপা চলাফেরা করতে পারে না এ অবস্থায় তার দেহ স্বচ্ছ হয়ে যায় মাতাল ছোট এবং শুরু হয় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে মাথা নাড়ে। ৯ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে খোকনের আক্রান্ত ছিদ্র করে পূর্ণাঙ্গ মথ বা প্রজাপতি বের হয়ে আসে।
গুটি সংগ্রহ: টোকা চন্দ্র খেতে যাওয়ার পরে তিন-চার দিন পরে পরীক্ষা করে নিতে হবে যে গুটি তৈরি হয়েছে কিনা। এই সময় সাধারনত গুলোতে খটখট শব্দ শোনা যায়। যখন গুটি পরিপূর্ণতা লাভ করে তখন গরম তাপ এর মাধ্যমে ভিতরে পোকা মেরে ফেলে এ রেশম গুটি সংগ্রহ করতে হয়। রেশম চাষ খরচ কেমন করে সে সম্পর্কে উপড়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। রেশম চাষ হয় কোন জেলায়, ও রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।
রেশম চাষ হয় কোন জেলায়
বাংলাদেশের সব জেলাতেই রেশম চাষ হয়ে থাকে। তবে রেশম চাষের জন্য বেশি বিখ্যাত জেলা রাজশাহী। বাংলাদেশের সিংহভাগ রেশন রাজশাহীতে চাষ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও গাজীপুর জেলায় রেশম চাষ হয়ে থাকে।
রাজশাহীতে সরকারিভাবে রেশমের কাপড় তৈরি করার কারখানা রয়েছে। যা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৮ সালে আবার চালু করা হয়। সারাবছর রাজশাহী থেকে সারাদেশে বিপুল পরিমাণে রেশমের কাপড় সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে ঈদ সহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানগুলোতে রেশমের কাপড় এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
সঠিক গুণগতমানসম্পন্ন রেশমের কাপড় কেনার জন্য কেউ কেউ সরাসরি রাজশাহী শহরে চলে আসে। রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা, রেশম চাষ বিজ্ঞান ও সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা - রেশম চাষ বিজ্ঞান
আপনি যদি বাণিজ্যিকভাবে রেশম চাষ করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা বা রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা বা রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকলে আপনি রেশম চাষ করে প্রফিট করতে পারবেন না। তাই রেশম চাষ করার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা বা রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা বা রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে ইতোমধ্যেই উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত রেশম চাষ পদ্ধতি ভালো ভাবে অনুসরণ করলেই আপনি রেশম চাষ করতে পারবেন। রেশম চাষ হয় কোন জেলায় ও রেশম চাষ খরচ সম্পর্কের মধ্যে আলোচনা করা হয়েছে। নিচে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব তুলে ধরা হবে।
রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব
রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে দারিদ্রতা বিমোচনে রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অত্যাধিক। সঠিকভাবে রেশম চাষের বিস্তার ঘটাতে পারলে গ্রামবাংলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষের উচিত প্রান্তিক পর্যায়ের জনগোষ্ঠীর কাছে এটা বিস্তৃত করা।
অল্প কিছু টাকা ইনভেস্ট করার মাধ্যমে খুব সহজেই রেশম চাষ করা যায়। মাত্র ১ থেকে ৪ হাজার টাকা দিয়ে রেশমের গুটি উৎপাদন করা সম্ভব আর আপনি যদি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেন তাহলে রেশমের সুতো প্রদান করতে পারবেন আর ১৫ থেকে ২০হাজার টাকা ইনভেস্ট করলে কাপড় উৎপাদন করা যায়। সুতরাং বুঝতেই পারছেন রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব কত বেশি।
রেশম চাষ পদ্ধতি - রেশম চাষ খরচ: শেষ কথা
রেশম চাষ সংক্রান্ত বিদ্যা, রেশম চাষ খরচ ও রেশম চাষ বিজ্ঞান সম্পর্কে উপরে সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি রেশম চাষের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও রেশম চাষ হয় কোন জেলায়? সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। উপরোল্লিখিত আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url