আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। মানবাধিকার আইন বলতে আমরা সকল মানুষের সমান অধিকার কে বুঝি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি রয়েছে তাই আজকের এই আর্টিকেলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতিঃ উপস্থাপনা
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন - মানবাধিকার কমিশন কি
- মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি
- যুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি
- মানবাধিকার অনুচ্ছেদ
- মানবাধিকারের প্রকারভেদ
- আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতিঃ শেষ কথা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতিঃ উপস্থাপনা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন হচ্ছে সে আইন যেটি যুদ্ধের আচরণবিধির নিয়ন্ত্রণ করে। এটি হলো আন্তর্জাতিক আইনের একটি শাখা যেটি যুদ্ধের উপায় এবং পদ্ধতিসমূহ কে সীমিত এবং নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে যেসব মানুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে রক্ষা করার জন্য সংঘাতের প্রভাব কমিয়ে আনার চেষ্টা করে।
আরো পড়ুনঃ বিশ্ব এইডস দিবস কবে - ১ ডিসেম্বর কি এইডস দিবস?
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনারা যদি সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন - মানবাধিকার কমিশন কি?
মানবাধিকার হচ্ছে কতগুলো সংবিধিবদ্ধ আইন বা নিয়মের সমষ্টি, মানবজাতির সদস্যদের আচার-আচরণ ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য কে বোঝায় ও আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা সুরক্ষিত ও মৌলিক অধিকারের অবিচ্ছেদ্য অংশ বিষয় হিসেবে কাজ করে। দৈনন্দিন জীবনের চলার জন্য মানুষের যে সকল অধিকার রাষ্ট্রের সংবিধান কর্তৃক দেওয়া হয় তাদেরকেই মানবাধিকার বলে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেসরকারি ও অলাভজনক সংস্থা হিসেবেই মানবাধিকার বিষয়ে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশনের কাজ হচ্ছে মানবাধিকার বিষয়ে গবেষণা পরামর্শ সমর্থন প্রদান করা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন এর সদরদপ্তর অর্থাৎ প্রধান কার্যালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশের একটি সাহিত্য শাসিত প্রজাতন্ত্রের সংস্থা। ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অস্তিত্ব লাভ করে। এটি বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিল। সংগঠন টি জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশের বিধানের অধীনে গঠিত হয়েছিল। এজাতীয় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো মান মর্যাদা ও অখণ্ডতার পথিক এবং গণতন্ত্রের মৌলিক অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের অবিচ্ছেদ্য মৌলিক মানবাধিকার সুরক্ষিত হয় এবং মানবাধিকারের মান উন্নত হয়।
মানবাধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ভূমিকা
১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সিদ্ধান্ত নং ২১৭ দাঁড়া বিশ্বজনীন মানবাধিকার সমূহ গ্রহণ ও ঘোষণা করে। যার শিরোনাম ছিল বিশ্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র। সারা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রে প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই এই প্রস্তাবনা প্রবর্তন করা হয়। এ কারণে বিশ্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেতে হলে আমাদের প্রস্তাবনা যথার্থভাবে বুঝতে হবে।
মানবাধিকার ঘোষণা দলিলের মোট অনুচ্ছেদ সংখ্যা ৩০ টি বিশ্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণাপত্র ত্রিশটি অনুচ্ছেদ মানুষের যে সকল অধিকারের কথা বলা হয়েছে সেগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো।
- জন্মগতভাবে সমমর্যাদা লাভের অধিকার
- জীবনের অধিকার
- স্বাধীনতার অধিকার
- ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অধিকার
- দাসত্বের না থাকার অধিকার
- নির্যাতিত এবং নিষ্ঠুরতার শিকার না হওয়ার অধিকার
- আইনের দ্বারা সমভাবে রক্ষিত হওয়ার অধিকার
- পরিবার ও বসতবাড়ি নিরাপত্তার' অধিকার
- সম্মান ও সুনাম রক্ষার অধিকার
- দেশত্যাগ ও স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অধিকার
- চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার অধিকার
- মতামত প্রকাশের অধিকার
- সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার
- সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার
- খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান চিকিৎসা শিক্ষার অধিকার
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন হচ্ছে সে আইন যেটি যুদ্ধের আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি হল আন্তর্জাতিক আইনের একটি শাখা যেটি যুদ্ধের উপায় এবং পদ্ধতিসমূহকে সীমিত এবং নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে যেসব মানুষ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে না তাদেরকে রক্ষা করার মাধ্যমে সশস্ত্র সংঘাতের প্রভাব কমিয়ে আনার চেষ্টা করে।
মানবতা এবং মানব-কষ্ট প্রশমনের গুরুত্ব উপলব্ধির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুপ্রাণিত হয়। এটি কিছু নিয়ম নীতি এবং প্রতিষ্ঠিত চুক্তি বা প্রথা নিয়ে গঠিত হয় যেগুলো সশস্ত্র সংঘাতের সময় যেসব পক্ষ থাকে তাদের যুদ্ধের পছন্দের পদ্ধতি ও উপায়সমূহকে সীমিত করার মাধ্যমে ব্যক্তি ও সম্পদ বা বস্তু যেগুলা সংঘাতের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদেরকে রক্ষা করার প্রয়াস চালায়
এটিতে রয়েছে জেনেভা কনভেনশন এবং হেগ কনভেনশন সেই সাথে সংশ্লিষ্ট পরবর্তী চুক্তিসমূহ মামলা থেকে উদ্ভূত আইন এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইন। এটি যুদ্ধরত দেশসমূহ নিরপেক্ষ দেশসমূহ এবং একক ব্যক্তিসমূহ যারা যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে তাদের একে অন্যের প্রতি এবং সুরক্ষিত ব্যক্তিদের প্রতি যে আচরণবিধি এবং দায়িত্ব রয়েছে সেগুলোকে সংজ্ঞায়িত করে।
মানবিক উদ্বেগ এবং সামরিক প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপনই হল আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের উদ্দেশ্য। এটি যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাব সীমিতকরণ এবং মানব কষ্ট প্রশমণের মাধ্যমে যুদ্ধকে আইনের শাসনের গন্ডির মধ্যে নিয়ে আসে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘনকে বলা হয় যুদ্ধাপরাধ।
আন্তর্জাতিক মানবিক আইন যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত সামরিক শক্তিসমূহের আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি jus ad bellum থেকে পৃথক যেটি যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘাতে লিপ্ত হওয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং শান্তি বিরোধী অপরাধ এবং আগ্রাসী যুদ্ধ যেটির গন্ডিভুক্ত। jus in bello এবং jus ad bellum একত্রে সমর আইনের দুইটি সূত্র গঠন করে এবং আন্তর্জাতিক সশস্ত্র সংঘাতসমূহের সকল দিক নিয়ন্ত্রণ করে।
যুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছে ইতিমধ্যে আমরা উক্ত বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা করে এসেছি। এখন আমরা যুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন যুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি সম্পর্কে জানা যাক।
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল ১৯১৪-১৯১৮ সেখানে ঐতিহাসিক সিমলা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ইন্দিরা গান্ধী ও জুলফিকার আলী ভুট্টো।
- যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরের নৌবাহিনীর বন্দর পার্ল হারবার আক্রমণ করে ১৯১৪ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৩ সালে পিএলও ইসরাইল পারস্পরিক স্বীকৃতি দলিলে স্বাক্ষর করে।
- প্রথম জেনেভা কনভেনশন সম্পাদিত হয় ১৮৬৪ সালে যার লক্ষ্য ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে আহত অসুস্থদের অবস্থার সার্বিক উন্নতি।
- দ্বিতীয় জেনেভা কনভেনশন সম্পাদিত হয় ১৯০৬ সালে সমুদ্রের যুদ্ধক্ষেত্রে আহত অসুস্থ এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত জাহাজের সৈন্যদের অবস্থার সার্বিক উন্নতির লক্ষ্যে।
মানবাধিকার অনুচ্ছেদ
একজন মানুষ ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য যেসব অধিকার প্রয়োজন তাকে মানব অধিকার বলে। একজন মানুষ হিসেবে আমাদের সকলেরই সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। এজন্য মানুষের কিছু সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন হয় যেমন লেখাপড়া করার অধিকার মতামত প্রকাশের অধিকার প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার এছাড়া আরো অনেক অধিকার রয়েছে।
আমরা সমাজে মানুষ যারা বসবাস করি তারা সকলেই একে অপরকে বিভিন্ন রকম সাহায্য সহযোগিতা করে বসবাস করি। আমাদের মধ্যে একটা সম্পর্ক রয়েছে যা সকলকে একসাথে যুক্ত করে। কিন্তু দেখা যায় যে বিভিন্ন জায়গার মানুষ তাদের অধিকার পাইনা। দেশের সরকার থেকে হোক অথবা কোন অঞ্চলের প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে।
জাতিসংঘ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মানুষের প্রয়োজনীয় এসব অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে অনুমোদন করেছে মানবাধিকার সার্বজনীন ঘোষণাপত্র। যেখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ বয়স নারী পুরুষ আর্থিক অবস্থার বিশ্বের সব দেশেই সকল ধরনের মানুষের মানবাধিকার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। মানবাধিকার মানুষের জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
মানবাধিকারের প্রকারভেদ
মানবাধিকার ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্বের প্রতিটি মানুষের প্রয়োজনীয় প্রয়োজনীয় সব অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘ অনুমোদন ঘোষণা করেছিল। জাতীয়তা জাতি-ধর্ম ভাষা ভেদে সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করাই মানবাধিকার সংস্থার প্রধান কাজ। এখন আমরা মানবাধিকারের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করব। নিচে মানবাধিকারের প্রকারভেদ দেওয়া হল।
আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশু দিবস কবে - বিশ্ব শিশু দিবস ২০২২
- সামাজিক বা নাগরিক মানবাধিকার
- রাজনৈতিক মানবাধিকার
- অর্থনৈতিক মানবাধিকার
- সাংস্কৃতিক মানবাধিকার
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতিঃ শেষ কথা
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রধান প্রধান মূলনীতি, যুদ্ধ সংক্রান্ত বিভিন্ন চুক্তি সহ আরো অনেকগুলো বিষয় আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম পোস্ট আরও পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। ১৬৮৩০
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url