শহীদ আসাদের জীবনী - শহীদ আসাদের কবর
শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে আজকের এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। আমরা যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারনা রাখে তারা নিশ্চয়ই শহীদ আসাদ সম্পর্কে জানি। আপনারা যারা আমাদের এই আর্টিকেল পড়ছেন তারা নিশ্চয়ই শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে জানতে চান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সাথে আসাদ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এখন আমরা শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আপনি যদি শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে পড়ুন। তাহলে চলুন দেরি না করে শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেজ সূচিপত্রঃ শহীদ আসাদের জীবনী - শহীদ আসাদের কবর
শহীদ আসাদের জীবনী - শহীদ আসাদের কবরঃ উপস্থাপনা
প্রিয় বন্ধুরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক ছাত্র নেতা তাদের জীবন দিয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য। বাংলাদেশের মানুষের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য অনেকেই জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই। তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন শহীদ আসাদ।
আরো পড়ুনঃ জেল হত্যা দিবসের ইতিহাস - ৩ নভেম্বর জেল হত্যার পূর্বাপর
তিনি একজন ছাত্র নেতা ছিলেন। আজকের এই আর্টিকেলে শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এছাড়া শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায়? শহীদ আসাদের কবর এর সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
শহীদ আসাদের জীবনী
আমরা যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ অর্থাৎ বাংলাদেশের সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানি এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্পর্কে জানে তারা নিশ্চয়ই শহীদ আসাদকে চেনে। শহীদ আসাদের জীবনী নিচে তুলে ধরা হলো। শহীদ আসাদ এর পুরো নাম হল আমানুল্লাহ মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি হলেন একজন শহীদ ছাত্রনেতা।
জন্মঃ বাংলাদেশের মানুষ তাকে শহীদ আসাদ নামে চেনে কিন্তু তার সম্পূর্ণ নাম হল আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১০ জুন ১৯৪২ সালে নরসিংদী জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। তিনি একজন শহীদ ছাত্রনেতা ছিলেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অর্থাৎ আইয়ুব খানের পতনের দাবিতে তিনি রাজপথে আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন।
পরিবারঃ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামের হাতিরদিয়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ আবু তাহের বি.এ.বি.টি হাতিরদিয়া সাদত আলী হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা হেডমাষ্টার ছিলেন। আসাদের মায়ের নাম মতি জাহান খাদিজা খাতুন। তিনি নারায়নগঞ্জ আই.ই.টি গার্লস প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। আসাদের জন্মের পর তিনি শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। তাঁর ছয় পুত্র ও দুই কন্যার মধ্যে আসাদ ছিলেন চতুর্থ।
শিক্ষা জীবনঃ শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬০ সালে মাধ্যমিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চ শিক্ষার্থে জগন্নাথ কলেজ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এমসি কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ১৯৬৬ সালে বি.এ এবং ১৯৬৭ সালে এম.এ ডিগ্রী অর্জন করেন।
ঢাকা সিটি কলেজে তিনি ১৯৬৮ সালে আরও ভালো ফলাফলের জন্যে দ্বিতীয়বারের মতো এম.এ বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জনের জন্য চেষ্টা করছিলেন। ১৯৬৯ সালে মৃত্যুকালীন সময়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে এম.এ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।
রাজনীতি জীবনঃ শহীদ আসাদ তৎকালীন ঢাকা হল (বতর্মানে শহীদুল্লাহ হল) শাখার পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে এবং পূর্ব-পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশ সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস - সংবিধান প্রেরণের পদ্ধতি
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত প্রাণ আসাদুজ্জামান গরিব ও অসহায় ছাত্রদের শিক্ষার অধিকার বিষয়ে সর্বদাই সজাগ ছিলেন। তিনি শিবপুর নৈশ বিদ্যালয় নামে একটি নৈশ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং শিবপুর কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদেরকে সাথে নিয়ে আর্থিক তহবিল গড়ে তোলেন।
মৃত্যুঃ শহীদ আসাদ আইয়ুব খানের পতনের দাবীতে মিছিল করার সময় জানুয়ারি ২০, ১৯৬৯ সালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তবে তিনি সর্বসমক্ষে শহীদ আসাদ নামেই অধিক পরিচিত ব্যক্তিত্ব। শহীদ আসাদ হচ্ছেন ১৯৬৯ সালের গণ-আন্দোলনে পথিকৃৎ তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের তিন শহীদদের একজন অন্য দু'জন হচ্ছেন শহীদ রুস্তম শহীদ মতিউর। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে তিনি স্বাধীনতা পদক পান।
শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায়
প্রিয় বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা ইতিমধ্যেই শহীদ আসাদের জীবনী সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এখন আমাদের মধ্যে অনেকেই জানতে চাই শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায়? তাদের জন্য এখন আমরা শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায় এই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। তাহলে চলুন শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায় তা জেনে নেওয়া যাক।
শহীদ আসাদ একজন ছাত্র নেতা ছিলেন। আইয়ুব খানের স্বৈরশাসন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল শহীদ আসাদের। যিনি ওই আন্দোলনে মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশের মানুষ তাকে সারা জীবন মনে রেখেছে। শহীদ আসাদ ১৯৪২ সালের ১০ জুন নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
শহীদ আসাদের কবর
এখন আমরা শহীদ আসাদের কবর সম্পর্কে আলোচনা করব। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি স্বৈরাচারী আইয়ুব বিরোধী গণ আন্দোলনের সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা আসাদ। তাই তার স্মরণে প্রতি বছর এই দিনটিকে শহীদ আসাদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
আরো পড়ুনঃ মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় চার নেতার ভূমিকা
শহীদ আসাদ এর সম্পূর্ণ নাম হল আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর পরে তাকে গ্রামের বাড়ি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ধানুয়া গ্রাম সমাহিত করা হয়। কিন্তু বর্তমানে তার গ্রামের বাড়িতে তার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে কেউ থাকে না ফলে তার খবর অযত্নে এবং অবহেলায় পড়ে আছে।
শহীদ আসাদের জীবনী - শহীদ আসাদের কবরঃ শেষ কথা
শহীদ আসাদের জীবনী, শহীদ আসাদের কবর, শহীদ আসাদের বাড়ি কোথায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনি উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন যদি না জেনে থাকেন তাহলে সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন। এতক্ষন আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এরকম আর্টিকেল আরো পড়তে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন।১৬৮৩০
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url