বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার - বিশ্ব শিশু দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যেই বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়ে থাকে। নিচে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
পেজ সূচিপত্র: বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার
বিশ্ব শিশু দিবস এবং শিশু অধিকার সম্পর্কিত আলোচনা: ভূমিকা
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক শিশু তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিশুদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষাগত অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। কবে থেকে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়, এবং বিশ্ব শিশু দিবস পালন করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
নিচে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হবে। সেইসাথে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্কেও আলোচনা তুলে ধরা হবে। শিশুদের অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন। শিশুদের অধিকার সম্পর্কে আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করার ঘোষণা দেয়। ১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের এক বৈঠকে ২০ নভেম্বর বিশ্ব শিশু দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর নভেম্বরের ২০ তারিখে আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়।
তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করার আলাদা আলাদা তারিখ রয়েছে। যেমন: বাংলাদেশে বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস পালন করা হয় অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার। মেক্সিকোতে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয় এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে। আবার রাশিয়া সহ আশেপাশের আরো কয়েকটি রাষ্ট্রে জুন মাসের ১ তারিখে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। তবে জাতিসংঘ ঘোষিত তারিখ অর্থাৎ নভেম্বর মাসের ২০ তারিখে সার্বজনীনভাবে বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়।
এখন প্রশ্ন হলো: জাতীয় শিশু দিবস পালন করার কারণ কি? বা কি উদ্দেশ্যে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়। আপনি যদি একটু পিছনের দিকে ফিরে তাকান, তাহলে দেখতে পাবেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল শিশুরা। যুদ্ধের বিভীষিকা শিশুদের মারাত্মক ক্ষতি করেছিল। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাবে নিরপরাধ নিষ্পাপ শিশুদের কে যুদ্ধের ভয়াবহতা গ্রাস করেছিল। সর্বত্র শিশুদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছিল।
এই অবস্থা থেকে শিশুদের অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে, বিশ্ব নেতারা একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। জাতিসংঘের মাধ্যমে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ গৃহীত হয় যে সনদকে ইতিহাসের সর্বোত্তম একটি মানবাধিকার সনদ হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে।
আর সেই অধিকারের কথা পৃথিবীবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই মূলত বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয়। ঐতিহাসিক এই সনদের মাধ্যমে শিশুদের সব ধরনের অধিকার নিশ্চিত করা হয়। শিশুদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার ব্যাপারে সকলে ঐক্যমত পোষন করে। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। নিচে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্কে আলোচনা তুলে ধরা হলো।
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্কে আর্টিকেলের এই অংশে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো। বাংলাদেশে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ পালন করা হয়। আর সার্বজনীন বিশ্ব শিশু দিবস পালন করা হয় নভেম্বরের ২০ তারিখে। এই দিবসগুলো পালন করার উদ্দেশ্য হলো শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা।
তাই আমাদের সকলের উচিত হলো: শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাওয়া। দিবস পালন করা মুখ্য বিষয় নয়। যদি আপনি শিশুদের জন্য কিছু করতে না পারেন, তাহলে শুধুমাত্র দিবস পালন করে আপনার কোন লাভ হবে না। দিবস পালন করার উদ্দেশ্যেই হলো শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সকলকে স্মরন করিয়ে দেয়া। তাই শুধুমাত্র দিবস পালন করে কোন লাভ হবে না। শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্ক উপরে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্ব শিশু দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
উপরে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে বিশ্ব শিশু দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। জাতিসংঘ শিশু অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যে সনদ প্রণয়ন করে সেখানে শিশুদের মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো স্পেসিফিকভাবে উল্লেখ করা হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে যে সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে সেই বিষয়গুলো নিচে পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।
- ছেলে এবং মেয়ে শিশুর মধ্যে বৈষম্য না করা: বিশ্ব শিশু দিবস এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হলো ছেলে এবং মেয়ে শিশুর মধ্যে বৈষম্য রোধ করা। জাতিসংঘের শিশু অধিকার নিশ্চিত করার সনদে এই ব্যাপারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখনো অনেক জায়গায় এই ধরনের বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়।
- শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা: শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা শিশুদের অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। তাই অবশ্যই নিজ নিজ অবস্থান থেকে শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে না পারলে শিশুদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই অবশ্যই শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে।
- শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা: সকল শিশুকে শিক্ষা গ্রহণ করার সমান সুযোগ প্রদান করা, বিশ্ব শিশু দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহের অন্যতম একটি। তাই অবশ্যই শিশুদের সুশিক্ষার জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। শিশুদের জন্য শিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারলে, তারা পরবর্তীতে দেশ ও জাতির জন্য হুমকিস্বরূপ হতে পারে। পক্ষান্তরে যদি তাদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা যায় তাহলে তারা দেশের সম্পদে পরিণত হবে।
- সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: শিশুদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সমাজে বিভিন্ন ভাবে শিশুরা অনিরাপদ। বিশেষ করে শিশু শ্রম এবং শিশু যৌন নিপীড়ন এর মতো জঘন্য ঘটনা গুলো এখনো সমাজে বিদ্যমান রয়েছে। এই ধরনের নৃশংস ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আরো বিভিন্নভাবে শিশুরা সামাজিকভাবে হেনস্তার শিকার হয়। সামাজিকভাবে শিশুদের সুরক্ষা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
- জীবনযাপনের মান নিশ্চিত করা: শিশুদের জীবনযাপনের মান নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলো পূরণ করতে হবে। তাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য এবং লেখাপড়া করার জন্য যে সকল সরঞ্জামাদির প্রয়োজন হবে, সেগুলো অবশ্যই যথা সময়ে সরবরাহ করতে হবে। যথাসময়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ না করলে সুস্বাস্থ্য এবং সুশিক্ষা থেকে শিশুরা বঞ্চিত হতে পারে। শিশুদের জীবন মান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ পালন করা হয়
বিশ্ব শিশু দিবস এবং শিশু অধিকার সম্পর্কিত আলোচনা: উপসংহার
বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২২ সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়েছে। বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সম্পর্কেও উপরে যে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, আমাদের উচিত সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। প্রত্যেকেই যদি প্রত্যেকের অবস্থান থেকে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে, তাহলে খুব সহজেই সামাজিকভাবে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ১৬৪১৩
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url