OrdinaryITPostAd

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান - বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে অনেক। কিন্তু আমরা বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদানকে তেমন বড় করে দেখি না। তিনি নারীদের পক্ষ নিয়ে অনেকগুলো বই লিখেছেন। এবং তার কিছু কালজয়ী লেখা রয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদানঃ ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুরা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে চেনে না এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে যারা পড়াশোনা করে তারা নিশ্চয় বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কে চেনেন। কারণ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন হলেন নারী শিক্ষার জাগরণের অগ্রদূত। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে আলোচনা করব।

বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি?

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন নারীবাদী। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় নারীদের জন্য লড়াই করে গিয়েছেন। এছাড়া তিনি একজন সাহিত্যিক ছিলেন। তার স্বামীর অনুপ্রেরণায় তিনি সাহিত্য রচনা করেছিলেন অনেকগুলো। এখন আমরা বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি সম্পর্কে আলোচনা করব। তাহলে চলুন বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ কোনটি তা জেনে নেওয়া যাক।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশু দিবস রচনা - বিশ্ব শিশু দিবস অনুচ্ছেদ

বেগম রোকেয়া নারীবাদী চিন্তার প্রকাশ ঘটে ছিল মতিচুর প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে জার প্রথম খন্ড ১৯০৪ সালে প্রকাশিত হয় এবং দ্বিতীয় খন্ড ১৯২২ সালে। এছাড়া সুলতানার স্বপ্ন ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হয়। পদ্মরাগ ১৯২৪ এবং অবরোধবাসিনী ১৯৩১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এগুলো তার উল্লেখযোগ্য রচনা গুলোর মধ্যে অন্যতম।

বেগম রোকেয়ার শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হল সুলতানার স্বপ্ন। বিশ্বের নারীবাদী সাহিত্যে একটি মাইলফলক ধরা হয় এই গ্রন্থটি কে। গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হওয়ার আগে তার লেখাগুলো নবনূর, মোহাম্মদী ইত্যাদি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি নারীদের পক্ষ নিয়েই বেশি গল্প রচনা করেছেন।

সমাজ সংস্কারে বেগম রোকেয়ার অবদান

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে। তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন সমাজ কুসংস্কারের ডুবেছিল। তখনকার নারীরা কোন ধরনের শিক্ষার অধিকার পেত না। তারা শুধু কোরআন শরীফ শিক্ষা গ্রহণ করত এ ছাড়া অন্য কোন শিক্ষা গ্রহণের তাদের কোনো অধিকার ছিল না। যদিও বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পিতা একজন ভাষা পন্ডিত ছিলেন তার পরেও।

কিন্তু বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে তার বড় ভাই তাকে পড়াশোনা করাতেন। রাতে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পর লুকিয়ে লুকিয়ে তিনি শিক্ষা গ্রহণ করতেন। তিনি কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেননি তবুও তিনি যথেষ্ট পরিমাণে শিক্ষিত ছিলেন তার এই শিক্ষিত হওয়ার পেছনে তার বড় ভাই এবং বোন এর ভূমিকা সর্বাধিক।

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন চিন্তা করলেন যে সমাজে নারীরা শিক্ষার অধিকার পায় না সে সমাজ কখনো এগিয়ে যেতে পারে না। তাই তিনি নারী শিক্ষা এবং নারীদের নিয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন। তার স্বামী মৃত্যুবরণ করার পরে তিনি নারী শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ করেন এবং একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে তিনি নারীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।

তখনকার সময়ে কুসংস্কার ছিল মেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না তারা শুধু বাড়ির ভেতরে বসে থাকবে। এমনকি নারীরা সেই সময়ে বাইরে কারো সামনে যেতে পারত না। তাদের বাড়িতে বসে থাকা ছাড়া আর অন্য কোন কাজ ছিল না তিনি এ সকল কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তিনি নারী শিক্ষার জন্য লড়ে গিয়েছেন তার জীবদ্দশায়।

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন নারীবাদী। তিনি তাঁর জীবদ্দশায় নারীদের জন্য লড়ে গিয়েছেন। কারণ তিনি যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন নারীরা তাদের পূর্ণ অধিকার পেত না। নারীরা শিক্ষার অধিকার পেত না। যেহেতু নারীরা শিক্ষার অধিকার পেত না তাই তিনি সব সময় নারীদের শিক্ষার জন্য লড়াই করেছেন। তার সাথে তিনি একজন সাহিত্যিক ছিলেন।

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান রয়েছে মনে রাখার মত। তিনি নারীদের নিয়ে অনেকগুলো বই লিখেছেন। তার নারীবাদী প্রকাশ ঘটে প্রথম মতিচুর প্রবন্ধের মধ্যে দিয়ে। মতিচুরের প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় ১৯০৪ সালে এবং দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালে। সুলতানার স্বপ্ন ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হয়।পদ্মরাগ ১৯২৪ এবং অবরোধবাসিনী ১৯৩১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। বাংলা সাহিত্যে এখনো মনে রাখার মত গ্রন্থ।

বেগম রোকেয়ার শিক্ষা দর্শন

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাইনি। এর অন্যতম কারণ হলো বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যখন জন্মগ্রহণ করেন তখন সমাজে নারী শিক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। নারীদের শিক্ষা গ্রহণ করার অধিকার ছিলনা সেই অধিকার ছিল শুধু পুরুষদের। নারীরা শুধু কোরআন শরীফ শিক্ষা গ্রহণ করতেন।

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস কবে পালিত হয় - বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস ২০২২

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পিতা একজন ভাষা পন্ডিত এবং শিক্ষক ছিলেন তার পরেও তার মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি উদাসীন ছিলেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কলকাতায় থাকাকালীন অবস্থায় এক মেম এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করার সুযোগ পেলেও পরে আত্মীয়-স্বজন এবং পরিবারের কটু কথা বন্ধ হয়ে যায়।

বেগম রোকেয়া পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ দেখে তার বড় ভাই তাকে পড়াশোনা করেছিলেন। রাতে সবাই ঘুমিয়ে যাওয়ার পরে তার বড় ভাই এবং বোন তাকে পড়াশোনা করাতেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন যতটুকু শিক্ষিত তার অন্যতম প্রধান দাবিদার হলো তার বড় ভাই এবং বোন। তাদের জন্যই তিনি শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছিলেন।

বেগম রোকেয়ার মৃত্যু সাল

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম এবং মৃত্যু দিবস একই দিনে। তাই প্রতিবছর ৯ সোমবার বেগম রোকেয়া দিবস পালন করা হয়।

বেগম রোকেয়ার বাবার নাম কি?

বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রা বন্দর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক জমিদার পরিবারে। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পিতার নাম ছিল আবু আলী হায়দার সাবের। বেগম রোকেয়া পিতা ছিলেন আরবি উর্দু ফার্সি বাংলা হিন্দি এবং ইংরেজি ভাষার পন্ডিত। কিন্তু মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তিনি খুবই উদাসীন ছিলেন।

প্রিয় বন্ধুরা আশাকরি আপনারা বেগম রোকেয়ার বাবার নাম কি? অর্থাৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের বাবার নাম আবু আলী হায়দার সাবের এটি জানতে পেরেছেন।

বেগম রোকেয়ার জীবনী pdf

প্রিয় বন্ধুরা আমরা বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদান সম্পর্কে উপরের আলোচনায় জেনে এসেছি। এখন আমরা বেগম রোকেয়ার জীবনী pdf সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি আপনি সম্পূর্ণ বেগম রোকেয়ার জীবনী মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

জন্ম ও পরিবারঃ বেগম রোকেয়া ১৮৮০ সালের ৯ রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোঃ আবু আলী হায়দার সাবের একজন শিক্ষিত জমিদার ছিলেন। বেগম রোকেয়ার মাতার নাম ছিল রাহাতুন্নেসা সাবেরা। বেগম রোকেয়ার দুই বোন যাদের নাম ছিল করিমুন্নেসা ও হুমায়রা। বেগম রোকেয়া তিন ভাই ছিল যাদের মধ্যে একজন ছোটতে মারা গিয়েছিলেন।

শিক্ষাজীবনঃ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের পিতা একজন ভাষা পন্ডিত ছিলেন তার পরেও তিনি মেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে খুবই উদাসীন ছিলেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের দুই ভাই খুবই মেধাবী ছিলেন। বেগম রোকেয়া শিক্ষিত হওয়া এবং সাহিত্যচর্চার পেছনে বড় দুই ভাই এবং বোন এর যথেষ্ট অবদান ছিল। কারণ তৎকালীন সময়ে মেয়েরা শিক্ষার অধিকার পেত না।

বেগম রোকেয়া ও ঠিক তেমন কোন ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অধিকার পায় নি কলকাতায় থাকাকালীন অবস্থায় তিনি একজন মেম এর কাছে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কিন্তু সমাজ এবং আত্মীয়-স্বজনদের কটুক্তি সহ্য করতে না পেরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবুও বেগম রোকেয়া দমে যায়নি তিনি তারপরও ভাইয়ের কাছে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন।

বিবাহিত জীবনঃ ১৮৯৮ বেগম রোকেয়ার বিয়ে হয় বিহারের ভাগলপুরের উর্দুভাষীঃ সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর শিক্ষিত হওয়ার পেছনে এবং সাহিত্যচর্চার পেছনে তার স্বামীর অবদান অনেক। তার সহযোগিতায় বেগম রোকেয়া দেশি-বিদেশি লেখকদের সঙ্গে নিবিড় ভাবে নিজেকে পরিচিত করে।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জাতীয় আয়কর দিবস কবে - আয়কর দিবস কেন পালিত হয়

১৯০৯ সালে সাখাওয়াত হোসেন মারা যায় এর আগে তাদের দুইটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে মৃত্যুবরণ করেছিলেন। তখন থেকে তিনি আবার নিঃসঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন এবং সাহিত্যচর্চা ও নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ওপর মনোনিবেশ করেছিলেন।

সাহিত্যচর্চাঃ বেগম রোকেয়া বিয়ে হওয়ার পরে তার স্বামী তাকে সাহিত্যচর্চার প্রতি অনুরাগী করে তোলে। তার সাহিত্য চর্চার পেছনে তার স্বামীর অনেক বড় অবদান রয়েছে। তিনি অনেকগুলো প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সাহিত্যিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল ১৯০২ সালে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত নব প্রভা পত্রিকায় ছাপা হয় পিপাসা।

এরপরে ১৯০৫ সালে ইংরেজি রচনা সুলতানাজ ড্রিম অর্থাৎ সুলতানার স্বপ্ন মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় ছাপা হয়। এভাবে তিনি একজন খ্যাতনামা সাহিত্যিক হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

মৃত্যুঃ নারী জাগরণের অগ্রদূত ছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদানঃ উপসংহার

বাংলা সাহিত্যে বেগম রোকেয়ার অবদানসহ আরো অনেকগুলো বিষয় আজকেরে আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশাকরি আপনি আজকের এই আর্টিকেল থেকে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আপনাকে উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানাতে পেরে আমরা অনেক আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।২০৮৭৬

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url