ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় - ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার উপায়
ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে একটি মারাত্মক প্রাকৃতিক দূর্যোগ।আপনি কি এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।কেননা আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদের ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে,ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় এবং ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার উপায়সহ বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো।তাই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
নিচে ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে,ঘূর্ণিঝড় কেন হয় এবং ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয়সহ সকল কিছু ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে।যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।তাই দেরি না করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে জেনে নিন।
পেজ সূচিপত্রঃ ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় - ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার উপায়
ঘূর্ণিঝড় কাকে বলে
ঘূর্ণিঝড়কে বলা যায় এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যখন উচ্চচাপের বায়ু ও জলীয় বাষ্পের মিশ্রণ হয় তখন নিম্নচাপের স্থলভাগ অঞ্চলে প্রবল গতিতে চক্রাকারে ঘূর্ণন সৃষ্টি হয় একেই ঘূর্ণিঝড় বলা হয়। ঘূর্ণিঝড়কে আবার সাইক্লোনও বলা যায়। কখনো কখনো আবার এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে জলোচ্ছ্বাস হতে দেখা যায়।
ঘূর্ণিঝড় কেন হয়
মূলত ২ টি কারনে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। কারণ দুটির একটি হচ্ছে গভীর সমুদ্রের পানির উচ্চ তাপমাত্রা সৃষ্টি এবং অন্যটি হচ্ছে সমুদ্রে নিম্নচাপ সৃষ্টি। ঘূর্ণিঝড় হওয়ার ক্ষেত্রে এ দুটিই প্রধান কারণ। ঘূর্ণিঝড় হতে গেলে সাধারণত সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ৮০ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর বেশি হতে হয়। বঙ্গোপসাগরে প্রায় সবসময়ই এধরনের তাপমাত্রা থেকেই থাকে।
গভীর সমুদ্রে যখন নিম্নচাপ শুরু হয় তখন আশেপাশের ভারী বাতাস সেদিকে প্রচন্ড বেগে ছুটে আসে বা ধাবিত হয় এবং অতিরিক্ত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত হয়। ঘূর্ণন গতির প্রভাবে পৃথিবীর অক্ষ বরাবর সেই উত্তপ্ত বায়ু ঘুরতে ঘুরতে উপরের দিকে উঠে যায় এবং উপরের বাতাসের তাপমাত্রা কম থাকায় এবং জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব বেশি থাকায় তা ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত সৃষ্টি করে।
এই বৃষ্টিপাতের ফলে দেখা যায় যে জলীয় বাষ্প থেকে সুপ্ততাপ ছেড়ে দেয় যা বাষ্পীভবন বাড়িয়ে দেয়। তখন দেখা যায় এসব সুপ্ততাপের প্রভাবে সমুদ্রের যে বায়ুমণ্ডল তার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে বিশাল একটি আয়তন জুড়ে বায়ুমন্ডলের চাপ ও তাপমাত্রার একটি অস্থিতিশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এই সময় নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় যা হয় কেন্দ্রমুখী এবং চারদিক থেকে উঠে আসা বায়ু গুলো চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে এবং ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় সমুদ্রে বিশাল আকারের ঢেউ সৃষ্টি হয়। সমুদ্রের বিশাল ঢেউ যতই তীরের নিকটবর্তী হয় ততই তীব্র হতে থাকে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে। তাই আপনাদের অবশ্যই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে জানতে হবে। নিচের অংশে আমি ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয়
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় হচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জন্য একটি নির্দিষ্ট আশ্রয়স্থল তৈরি করতে হবে। যেন ঘূর্ণিঝড়ের আবহাওয়া পাওয়া সত্ত্বর সেখানে তারা আশ্রয় নিতে পারে। মানুষের গৃহপালিত পশু রাখার জন্য নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করতে হবে যেন সেগুলোকে নিরাপদে রাখা যায়। এই কাজগুলো পূর্বপরিকল্পিতভাবে দুর্যোগের আগেই করে রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মেঘ কিভাবে বৃষ্টিতে পরিণত হয়
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বাড়ির চারপাশ দিয়ে বড় বড় গাছ লাগাতে হবে। জনগণকে অধিকতর সচেতন করতে হবে। যারা সমুদ্রে মাছ ধরে বা সমুদ্রে নৌ চলাচল সবকিছু বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে হবে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় বাড়িতে শুকনো খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে হবে যেন দুর্যোগের সময় সেগুলো খেয়ে জীবন যাপন করা যায়। সবশেষে বলা যায় জনগণকে অত্যাধিক সচেতন থাকতে হবে তাহলে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করা সম্ভব।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার উপায়
আবহাওয়ার কারণে বা ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ একটি দুর্যোগ প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। আর বাংলাদেশের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থাকায় বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের মত দুর্যোগ প্রায়ই ঘটে থাকে। তাই ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে মানুষদেরকে বাঁচাতে হবে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করতে হবে। এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার উপায় গুলো হচ্ছে-
ঘূর্ণিঝড়ের আবহাওয়া পাওয়ার সাথে সাথে জনগণকে সতর্ক করে দিতে হবে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদেরকে অধিকতর গুরুত্বের সাথে সচেতন করতে হবে। আগে থেকেই নিম্ন এলাকার অঞ্চলের মানুষদের আশ্রয় নেওয়ার জন্য স্থান তৈরি করে রাখতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার সংগ্রহ করে রাখতে হবে। তুলনামূলক উঁচু স্থানে বসতবাড়ি স্থাপন করতে হবে এবং বসতবাড়ি যেন শক্তিশালী হয় সে ব্যাপারে নজর দিতে হবে। জেলেদের নিষেধ করতে হবে নদীতে বা সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়ের সময় চলাচল করতে। একমাত্র সচেতনতাই পারে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করতে। তাই আমাদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী করণীয়
ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের মাত্রা অনেক বেশি। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের ঘূর্ণি ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেজন্য ঘূর্ণিঝড়ের শেষে সেসব ক্ষয়ক্ষতিজনিত মানুষদের জন্য ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী করণীয় থাকা অবশ্যই প্রয়োজন। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী করণীয়গুলো হচ্ছে-
যেসব এলাকায় ঘূর্ণিঝড় হয়েছে সেসব এলাকায় মানুষদের ক্ষয়ক্ষতি জনিত বাড়িঘর পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘূর্ণিঝড় শেষে মানুষের স্বাস্থের জন্য প্রয়োজনীয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে ক্ষতিপূরণ এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ দিতে হবে। গরীব ও দরিদ্র মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় স্থল থেকে নিরাপদে সবাইকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হবে। এভাবে ঘূর্ণিঝড় দাঁড়া ক্ষয়ক্ষতি জনিত এলাকায় সরকারের ও জনগণের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
প্রিয় পাঠক, আশা করি আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়েছেন এবং ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। আজকের আর্টিকেলে শুধু ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে নয় বরং ঘূর্ণিঝড় কেন হয়, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী করণীয় ইত্যাদি সকল বিষয় জানতে পেরেছেন। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে। আজকের এই বিষয়ে আপনার কোন মন্তব্য থেকে থাকলে কমেন্টে অবশ্যই জানিয়ে দিবেন এবং এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করবেন, ধন্যবাদ।21021.
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url