OrdinaryITPostAd

আখেরি চাহার সোম্বা কি? - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি?

আখেরি চাহার সোম্বা কি?(akheri chahar somba ki) আখেরি চাহার সোম্বা হলো হিজরি সনের সফর মাসের শেষ বুধবার। আখেরি চাহার সোম্বা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি? তা জানতে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।

আখেরি চাহার সোম্বা কি? - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি?: পেজ সূচিপত্র

আখেরি চাহার সোম্বা কি? - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি?: উপস্থাপনা

পৃথিবীতে যত মুসলমান রয়েছে তাদের সকলেই বিশ্বনবী মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম কে নিজের জীবনের চেয়েও অধিক ভালোবেসে থাকে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর এত বছর পরে যদি বর্তমান বিশ্বের পৃথিবীর মুসলমানদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর জন্য এত গভীর ভালোবাসা থাকে, তাহলে তৎকালীন সময়ে যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম এর সান্নিধ্যে থাকতেন তাদের অন্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর প্রতি কেমন ভালোবাসা ছিল তা সহজেই অনুমেয়? 

যাইহোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের অসুস্থতার সাথে আখেরি চাহার সোম্বার সম্পর্ক রয়েছে. কেননা রাসুলের অসুস্থ জনিত ঘটনাকে কেন্দ্র করেই আখেরি চাহার সোম্বা পরিভাষাটি এসেছে। নিচে আখেরি চাহার সোম্বা কি?( akheri chahar somba ki) সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

আখেরি চাহার সোম্বা কি?( akheri chahar somba ki) - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি? 

"আখেরি চাহার সোম্বা" বাক্যটি মূলত একটি মিশ্র বাক্য বাক্যটিতে আরবি এবং ফার্সি উভয় ধরনের শব্দ রয়েছে। আখেরি চাহার সোম্বা বাক্যটির প্রথম শব্দ "আখেরি" শব্দের অর্থ শেষ। আর দ্বিতীয় শব্দ "চাহার" এর অর্থ হলো সফর মাস এবং শেষ শব্দ সম্বা শব্দের অর্থ হলো বুধবার। অর্থাৎ আখেরি চাহার সোম্বা বাক্যটির অর্থ দাঁড়ায় সফর মাসের শেষ বুধবার। আখেরি চাহার সোম্বা কি? ( akheri chahar somba ki) বা আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি? আশা করি এই প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন।
অনেকেই এই দিনটিকে খুশির দিন হিসেবে বিবেচনা করে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। আদৌ কি এই দিনটি উদযাপন করা যাবে? না যাবে না? ইসলাম এ ব্যাপারে কি কি বলে? চলুন প্রথমে জেনে নেয়া যাক আখেরি চাহার সোম্বা সম্পর্কিত ঘটনাটি। কেননা আখেরি চাহার সোম্বা সম্পর্কিত ঘটনা দিয়ে যদি আপনি চিনে রাখেন তাহলে বিষয়গুলো বুঝতে সুবিধা হবে। 

আখেরি চাহার সোম্বা কি? - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি?: ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট


ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক তার সিরাত গ্রন্থে উল্লেখ করেন: সফর মাসের শেষের দিকে প্রিয় নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরপারে যাওয়ার জন্য অন্তিম যাত্রার রোগে আক্রান্ত হন। সে সময় কোন এক রাতে তিনি বাকিউল গারকাদ নামক স্থান অর্থাৎ কবরস্থানে গিয়েছিলেন এবং সেখানে গিয়ে তিনি মৃত ব্যক্তিদের জন্য মোনাজাত করেন। শেষ রাতে যখন তিনি সেখান থেকে ঘরে ফিরে আসেন তখন অসুস্থ হয়ে পড়েন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের এই অসুস্থতা যে তার পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার অসুস্থতা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। এবিষয়ে সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের মুক্ত ক্রীতদাস হিবার কথোপকথন থেকে। আখেরি চাহার সোম্বা কি? ( akheri chahar somba ki) বা আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি? সে সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন।

যে রাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক কবরস্থানে কবর জিয়ারত করার জন্য গিয়েছিলাম সেই রাত্রে তার সাথে ছিলেন তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালাম আমাকে দেখে বললেন আমাকে আল্লাহতায়ালা ২ টি বিষয়ের মধ্যে থেকে কোন একটি কে পছন্দ করতে বলেছেন। প্রথমটি হলো এই জগতের সকল ধনবান ঘরের চাবি এবং দীর্ঘমেয়াদী জীবন আর দ্বিতীয়টি হলো জান্নাত। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বুঝতে পেরেছেন যে এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাম কে নিজের সান্নিধ্য নিতে চাচ্ছেন।  

হিবা বলেন আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রথমটি পছন্দ করার জন্য অনুরোধ করলাম কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেন যে আমি দ্বিতীয় দিয়ে পছন্দ করেছি। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আল্লাহতালার সান্নিধ্যকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আখেরি চাহার সোম্বা কি?(akheri chahar somba ki) নিচে সে সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

এ সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং অধিকাংশ সময় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকতেন বিভিন্ন চিকিৎসা করা হয় কিন্তু কোনোভাবেই অবস্থার পরিবর্তন হয় না। এমনকি আবিসিনিয়া থেকে ওষুধ কিনে খাওয়ানো হয়। এরকম অবস্থার মধ্যে একদিন তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন এবং জ্ঞান ফিরে পেলেন স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারলেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের এই সুস্থতা দেখে সকলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল এবং প্রত্যেকটি আনন্দকর যাপন করতে লাগলো যদিও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের সুস্থতা দীর্ঘস্থায়ী ছিল না। সন্ধ্যা নাগাদ আবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন কিন্তু যখন তিনি সুস্থ হয়ে ছিলেন তখন সকলের আনন্দের কোনো সীমা ছিল না। 
বর্ণিত আছে এই খুশিতে অনেক সবাই বিভিন্ন ভাবে দান-সদকা করেন বিশেষ করে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ৫০০০ দিরহাম গরীব মিসকিনদের কে দান করেন এবং হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ৭০০০ দিরহাম অসহায় মানুষের মাঝে বিলি করে দেন। আরেক বর্ণনায় রয়েছে হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য.১০০ উট দান করে দেন।

আখেরি চাহার সোম্বা কি?(akheri chahar somba ki): আখেরি চাহার সোম্বা পালনের বিধান

অনেকেই আখেরি চাহার সোম্বা দিবসে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকেন। আসলে এই ধরনের অনুষ্ঠানের বিধান ইসলামে রয়েছে কিনা তা যেন আমাদের একান্ত কর্তব্য। কেননা আমরা যদি এমন কোনো কাজ করে যা কিনা করা এবং হাদিসের বাইরে তাহলে কিন্তু তা আমাদের জন্য অবশ্যই ক্ষতির কারণ। তাই যে কোন আমল করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদেরকে ইসলামের বিধি-বিধান গুলো ভালভাবে জেনে নিতে হবে।

আখেরি চাহার সোম্বা যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেই ঘটনাটি হলো মৃত্যুর পাঁচদিন পূর্বে বুধবার রাসূল (সাঃ) এর দেহ মোবারকের উত্তাপ ও মাথাব্যথা প্রচুর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। আর প্রচন্ড মাথা ব্যাথার কারণে তিনি বারবার হারিয়ে ফেলেন। অতঃপর তাঁর মাথার উপরে পানি ঢালা হ’লে তিনি একটু সুস্থ বোধ করেন এবং মসজিদে গিয়ে যোহরের ছালাত আদায় করেন এবং মুছল্লীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। বুখারী - ৪৪৪২; ইবনু হিশাম - ২/৬৪৯

কিন্তু এই দিবসকে কেন্দ্র করে যে অনুষ্ঠান করা হয় এই অনুষ্ঠানের কোনো ভিত্তি নেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সালাম এর মৃত্যুর পর সাহাবীরা এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন বা তার পরবর্তী প্রজন্ম এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের প্রচলন নেই পরবর্তীতে বেদাতিদের মাধ্যমেও ধরনের অনুষ্ঠানের প্রচলন শুরু হয়। যাইহোক ইসলাম বহির্ভূত এ ধরনের যে কোন অনুষ্ঠান আমাদেরকে পরিহার করতে হবে। 

আখেরি চাহার সোম্বা কি? - আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি?: উপসংহার

আখেরি চাহার সোম্বা কি?( akheri chahar somba ki) বা আখেরি চাহার সোম্বা মানে কি? সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আখেরি চাহার সোম্বায় কী করতে হবে? বা কি করা যাবে না সে সম্পর্কিত নিয়ম কানুন আমাদের মেনে চলতে হবে। কেননা আমরা যদি সাওয়াবের উদ্দেশ্যে এমন কোন কাজ করি ইসলামের শরীয়ত বিরুদ্ধ তাহলে কিন্তু আমাদের সাওয়াবের পরিবর্তে পাপ হতে পারে। তাই আমাদেরকে সাবধানে থাকতে হবে। 
উপরে আখেরি চাহার সোম্বা সম্পর্কিত সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে আশা করি আপনি আখেরি চাহার সোম্বা সম্পর্কিত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। যদি আপনার এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ১৬৪১৩

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url