১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। কেননা ১৯৭৫ সালের আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে দুর্বৃত্তদের হামলায় নিহত হন। ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ ইতিহাস ও তাৎপর্য সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে।
পেজ সূচিপত্রঃ ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ঃ উপস্থাপনা
১৫ ই আগস্ট ১৯৭৫ বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে শোক দিবস পালন করা হয়। কেননা এই দিনে মৃত্যুবরণ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সাথে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।স্বাধীনতাবিরোধী, ক্ষমতালোভী পাকিস্তানের দোসরা ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড ঘটায়।
১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস নিয়ে আরো পোস্ট
- জাতীয় শোক দিবস অনুচ্ছেদ - জাতীয় শোক দিবস রচনা
- ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় কত সাল থেকে
- ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের স্ট্যাটাস ২০২৩
- জাতীয় শোক দিবস কবে? - জাতীয় শোক দিবস কত তারিখ?
- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন ২০২৩
- ২০টি জাতীয় শোক দিবসের স্ট্যাটাস - জাতীয় শোক দিবসের কবিতা
- ১৫ আগস্ট কতজন মারা গিয়েছিল - ১৫ আগস্ট নিহতদের ছবি
- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩
- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস রচনা ২০২৩
- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কবিতা ছন্দ আবৃতি ৫টি
- শোক দিবসের কালো পতাকার মাপ - শোক দিবসের পতাকা উত্তোলনের নিয়ম
- ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছবি, পিকচার ডাউনলোড ১৪টি
- ১৫ ই আগস্ট এর বক্তব্য - ১৫ ই আগস্ট এর ভাষণ
- ১৫ আগস্ট এর রচনা - ১৫ আগস্ট এর ইতিহাস
- ১৫ ই আগস্ট পোস্টার ডিজাইন - ১৫ ই আগস্ট এর ব্যানার
- জাতীয় শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য - জাতীয় শোক দিবসের বক্তব্য
প্রতিবছর এই দিবসকে ঘিরে নানা ধরনের আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবারও বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাতের জন্য বিভিন্ন ধরনের আয়োজন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এরই মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৫ ই আগস্টের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে এবং সেই অনুপাতে তারা তাদের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলো পর্যন্ত ১৫ আগস্টে দোয়া মাহফিলে সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করে থাকে।
এছাড়াও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানেও বিভিন্নভাবে শোক দিবস পালন করা হয়। কোন কোন প্রতিষ্ঠান গরিব-দুঃখীদের কে খাওয়ানোর মাধ্যমে শোক দিবস পালন করে, আবার কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে ১৫ আগস্ট শোক দিবস পালন করে।
আবার অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা রয়েছে যে সংস্থাগুলো ব্লাড ডোনেশন বা অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ কর্মের মাধ্যমে ১৫ ই আগস্টের শোক দিবস পালন করে থাকে। এবছর কিভাবে ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ পালন করা হবে সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ঃ যাদেরকে হত্যা করা হয়েছিল
১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট সেই কাল রাতে নিষ্ঠুর ঘাতকেরা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেনি বরং তার সাথে হত্যা করেছিল তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কেউ। এমনকি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য শেখ রাসেল কেউ হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি ঘাতকরা।
শেখ রাসেল ঘাতকদের কাছে অনেক অনুনয় বিনয় করে বলেছিল যে, " আমাকে আপনারা মরবেন না আমাকে আমার হাসু আপুর কাছে পাঠিয়ে দিন আমি তাদের সাথেই থাকব" কিন্তু নিষ্পাপ ছোট্ট শেখ রাসেলের করুণ আর্তনাদ ঘাতকদের মনকে টলাতে পারেনি। তারা শেখ রাসেলকে তার মায়ের কাছে নিয়ে যাবে এই কথা বলে নিচে নামিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সেই রাতে যাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তারা হলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী শেখ ফজিলাতুননেছা, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামাল, জামালের স্ত্রী রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, এসবি অফিসার সিদ্দিকুর রহমান, কর্ণেল জামিল, এবং সেনা সদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে।
প্রায় একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগ নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে শেখ ফজলুল হক মণি, তাঁর অন্ত:সত্তা স্ত্রী আরজু মণি, বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াতের বাসায় হামলা করে সেরনিয়াবাত ও তার কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় বেন্টু খান।
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ঃ কি ঘটেছিল সেই রাতে?
ইতিহাসের অন্যতম কাল রাত ১৫ ই আগস্টে যে নিন্দনীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় তার পেছনে ছিল পথভ্রষ্ট পাকিস্তানপন্থি সেনাবাহিনীর অংশবিশেষ। তারা নির্মমভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সকলকে হত্যা করেন। ১৫ আগস্টের ঘটনায় যে মামলা করা হয় সেই মামলার এজাহারে সেই কাল রাতের বর্ণনা তুলে ধরা হয়।
জনাব মোহিতুল ইসলাম এজাহারে উল্লেখ করেন, যে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন হঠাৎ করে টেলিফোনের যে ইঞ্জিন মিস্ত্রি ছিল তিনি তাকে জাগিয়ে তুলে বলেন প্রেসিডেন্ট সাহেব আপনাকে ডাকছেন। যখন এই খবর দেয়া হলো তখন ভোর চারটা পাঁচটা হবে। কেননা তখন চারিদিকে রাতের অন্ধকার দূর হয়ে আকাশ ফর্সা হয়ে এসেছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বললেনঃ সেরনিয়াবাতের বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। জনাব মোহিতুল ইসলাম বলেন "খবর পেয়ে আমি জলদি পুলিশের কন্ট্রোল রুমে ফোন করার চেষ্টা করলাম কিন্তু অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরেও কোনো পুলিশ অফিসার কে আমি লাইনে পেলাম না এরপর গণভবন একশনস লাইনে লাগানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু তাতেও কোনো ফল হলো না কেননা আমি কোন পুলিশ অফিসারের সাথে কথা বলতে সক্ষম হলাম না" ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য নিচে তুলে ধরা হবে।
জনাব মোহিতুল ইসলাম আরও বলেন, " এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপর থেকে নিচে নেমে আসতেন এবং আমাকে বললেন যে পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে কেউ ফোন রিসিভ করছে না কেন? তখনও আমি পুলিশের সাথে কথা বলার চেষ্টা অব্যাহত রেখে ছিলাম এবং বারবার হ্যালো হ্যালো চিৎকার করে তাদের সাথে যোগাযোগ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম"
"এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জনাব মাহবুবুল আলম এর হাত থেকে রিসিভারটি নিয়ে বললেন যে আমি প্রেসিডেন্ট বলছি। এ কথা বলার সাথে সাথে দক্ষিণ দিকের জানালা দিয়ে মুহুর্মুহু গুলি আসতে লাগলো এমনকি সেখানে থাকা কাঁচের টুকরো আমার হাতে এসে বিদ্ধ হলো। এমন সময় আমি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উভয়ই শুয়ে পড়লাম। এবং গুলির শব্দের প্রভাব কিছুটা কমে এলে আবারো হয়েই দাঁড়িয়ে গেলাম" বলেন জনাব মোহিতুল ইসলাম। ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ সম্পর্কিত আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
এজাহারের অপর আরেকটি বর্ণনায় জনাব মোহিতুল ইসলাম বলেন," মুহুর্মুহু গুলির শব্দের পড়ে এক পর্যায়ে দেখতে পেলাম যে ডিএসপি নুরুল ইসলাম খানের পায়ে গুলি লেগেছে তখন আমার কাছে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গেল যে আক্রমণকারীরা আর্মির লোক এবং তারা এখানে হত্যাযজ্ঞ চালাতেই এসেছে। জনাব নূরুল ইসলাম যখন আমাদের সকলকে রুম থেকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ঠিক সে সময় মেজর বজলুল হুদা এসে আমার চুল টেনে ধরলো এবং আমাকে নিচে নিয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পরে উপর থেকে বিকট শব্দে গুলির আওয়াজ আসতে লাগল এবং মহিলাদের চিৎকার শোনা গেল। এর কিছুক্ষণ পরে রাসেলকে নিয়ে আসা হল আমাদের কাছে এবং রাসেল আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল আমাকে মারবেন না তো আমি বললাম তোমার কিছু হবে না। নোনা আমি কল্পনা করতে পারিনি যে হত্যাকারীরা রাসেলকেও হত্যা করবে। অবশেষে তাদের অপারেশন শেষ হয়ে গেলে মেজর বজলুল হুদা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের সামনে দাঁড়িয়ে মেজর ফারুক কে বললেন, 'অল আর ফিনিশড" নিচে ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ সম্পর্কে আরও কিছু আলোচনা করা হলো।
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ঃ উপসংহার
বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর অবশেষে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার সমাপ্ত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখনো ১৫ আগস্টের অনেক আসামি বিভিন্ন দেশে ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালত উত্তর দন্ডাদেশ প্রদান করলেও সিটি কার্যকর করা সম্ভবপর হয়নি।
১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ২০২৩ সম্পর্কে উপরে যে সকল তথ্য তুলে ধরা হলো এই তথ্যগুলো আপনি মনোযোগ সহকারে পড়ার মাধ্যমে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন বলে আশা করি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url