রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি জেনে নিন
অনেকেই আছেন যাদের প্রায়শো স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে। এরকম হলে আমাদের করণীয় কি তা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু যদি রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হয় তাহলে করণীয় কি তা আমরা জানি না। তাই আজ আমরা জানব রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি?
চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি?
পেজ সূচিপত্রঃ রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয়
রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয়
নারী- পুরুষ উভয়েরই স্বপ্নদোষ হতে পারে। এতে লজ্জার কোন কারণ নেই। এটা অন্য সময় হলে ফরজ গোসল করে নিলে কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি তা আমরা অনেকেই জানি না। অনেকে মনে করেন রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙ্গে যায় কিন্তু এটা সঠিক নয়। অনেকে রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে রোজা ভেঙ্গে গেছে বলে খাবার খায় বরং এটা মারাত্নক বড় ভুল। যদি আপনি রোজা ভেঙ্গে ফেলেন তাহলে তা আবার আদায় করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ কেউ দোয়া করলে উত্তরে কি বলতে হয় জেনে নিন
রোজা থাকা অবস্থায় যদি দিনের বেলা স্বপ্নদোষ হয় তাহলে হাদিসের নিয়ম অনুযায়ী যদি ভেজা দেখতে পায় তাহলে নারী-পুরুষ উভয়কেই ফরজ গোসল করতে হবে।
হাদিস শরিফে বর্নণা এসেছে ৩ টি কারণে রোজা ভাঙ্গে না। সেগুলো হল-
- অল্প বা বেশি বমি করলে,
- কোন ধরনের রোগের জন্য শরীরে শিঙ্গা লাগালে,
- দিনের বেলায় নারী বা পুরুষের স্বপ্নদোষ হলে। রোজা ভাঙ্গে না। বরং, আপনি ফরজ গোসলের মাধ্যমে পাক-পবিত্র হতে হবে।
স্বপ্নদোষ হলে ফরজ গোসলের নিয়ম? | রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয়
স্বপ্নদোষ হলে ফরজ গোসলের নিয়ম সমূহ হলো-
গোসলের ফরজ হল মোট ৩টি। এই ৩টির মধ্যে যেকোনো ১টি বাদ পড়লে ফরজ গোসল আদায় করা হবে না। তাই ফরজ গোসলের সময় এই ৩টি কাজ খুব সাবধানে- সর্তকতার সাথে আদায় করে নিতে হবে।
১. গড়গড়ার সাথে কুলি করতে হবে, (কিন্তু রোজা রাখা অবস্থায় গড়গড়া করা যাবে না এতে গলায় পানি ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাই সাধারণ কুলি করতে হবে)।
২. নাকে পানি দিয়ে নাকের নরম অংশ আঙ্গুল দারা ভিজানো, (কিন্তু রোজা অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে নাকে পানি দেওয়া যাতে নাকের নরম অংশে পানি না যায়, এতে নাকের মাধ্যমে গলায় পানি ধুকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে)।
আরও পড়ুনঃ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম এর অর্থ জানুন
৩. এরপর পুরো শরীরে পানি ঢালা ও ভালোভাবে গোসল করা (নাভীর ভেতর আঙ্গুল দিয়ে ভেজানো, আর নারীরা লজ্জাস্থান সুন্দরভাবে ধৌত করা)।
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম কি? | রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয়
ফরজ গোসলের সঠিক নিয়ম হল নিম্নরূপঃ
১. ফরজ গোসলের জন্য মনে মনে নিয়্যাত করে নিতে হবে (মুখে কোন আরবি শব্দ উচ্চারণ করে নিয়্যাত করা বিদ’আত)।
২. দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ৩ বার ধৌত করতে হবে।
৩. তারপর ডানহাতে পানি নিয়ে বামহাত দিয়ে লজ্জাস্থান এবং তার আশপাশ ভালো করে ধৌত করতে হবে। শরীরের অন্য কোন জায়গায় নাপাকি লেগে থাকলে সেটাও ধুয়ে নিতে হবে।
৪. এবার বামহাতকে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
৫. এবার সঠিকভাবে ওজু করে নিতে হবে, তবে দুই পা ধৌত করা যাবে না।
৬. ওজু শেষ হলে মাথায় তিনবার পানি ঢালতে হবে।
৭. এবার সমস্ত শরীর ধোয়ার জন্য প্রথমে ডানে ৩ বার তারপরে বামে ৩ বার পানি ঢেলে ভালোভাবে শরীর ধুতে হবে, যেন শরীরের কোন অংশ বা লোম পর্যন্ত শুকনো না থাকে। (নাভি, বগল ও লজ্জাস্থান পানি দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে)।
৮. সবার শেষে একটু সরে গিয়ে দুই পা ৩ বার ভালোভাবে ওজুর মতো করে ধুতে হবে।
বিঃ দ্রঃ পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল এবং মহিলাদের চুল ভালোভাবে ভিজাতে হবে। এবং এই নিয়মে গোসল করলে যদি ওজু না ভাঙ্গে তাহলে আর নতুন করে আর ওজু করার দরকার নাই।
শেষ কথাঃ রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয়
বন্ধুরা, আজ আমরা রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় কি তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের এই পোস্টটে রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় সুন্দর করে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আশাকরি, আমাদের এই রোজা থাকা অবস্থায় স্বপ্নদোষ হলে করণীয় পোস্টটি থেকে আপনার অনেক কিছু শিখতে ও জানতে পারবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url