ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় - বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
আমাদের জীবনে ব্যক্তিগত বা ব্যবসা যেকোন ধরনের কাজেই ঋণের প্রয়োজন হয়। সেই ঋণ আমারা অনেক সময় কাছের আত্নীয়-স্বজন কিংবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে কিছু ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় থাকে। যা আজ আমরা আমাদের এই নিবন্ধটিতে আলোচনা করব।
চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় বা ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় গুলো কি?
পেজ সূচিপত্রঃ ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় - বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
- ব্যাংক ঋণ কি?
- ব্যাংক থেকে কত ধরনের ঋণ দেয়?
- বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
- ব্যাংক ঋণের আবেদন করার নিয়ম কি?
- ব্যাংক ঋণ পাওয়ার শর্ত
- ব্যাংক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সেরা ব্যাংকগুলো কি কি?
- ব্যাংক ঋণের সুবিধা কি?
- ব্যাংক ঋণের অসুবিধা কি?
- ব্যাংক ঋণের সুদের হার কত টাকা?
- শেষ কথাঃ ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় - বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
ব্যাংক ঋণ কি? | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
ব্যাংক গ্রাহকদের বিপদে তাদের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুদের উপর ভিত্তি করে অর্থ প্রদান করে এবং সেই অর্থ মাস ভিত্তিক বা বছর ভিত্তিক নিয়মে সুদ সহ ব্যাংককে ফেরত দিতে হয়। গ্রাহককে ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই অর্থ প্রদান করাকে ব্যাংক ঋণ বলে।
ব্যাংক থেকে কত ধরনের ঋণ দেয়?
ব্যাংক থেকে বিভিন্ন ধরনের ঋণ দেয়। সেগুলোর নাম নিচে উল্লেখ করা হলঃ
- হোম লোন,
- অটো লোন,
- বিজনেস লোন,
- পার্সোনাল লোন,
- প্রবাসী লোন,
- কৃষি লোন,
- স্টুডেন্ট লোন।
এছাড়াও আরও ২ প্রকার লোন আছে। যথাঃ
- স্বল্প মেয়াদী লোন
- দীর্ঘমেয়াদী লোন
বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
এখন বাংলাদেশে অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহযে লোন পাওয়া যায়। ব্যবসার কাজ বা ব্যাক্তিগত কাজে অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় এবং সেই ঋণ বিভিন্ন ধরনের শর্ত সাপেক্ষে পরিশোধ করতে হয়। আগে মানুষকে লোন বা ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাংকে গিয়ে অনেক সময় অপেক্ষা এবং অনেক জায়গায় ঘুরে ঘুরে লোন নিতে হত যা ছিল অনেক কষ্টের এবং সময়ও অপচয় হত অনেক। কিন্তু এখন আর সেই কষ্ট নাই। এখন আপনি ঘরে বসে খুব সহযেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাংক ঋণ পেয়ে যাবেন। চলুন দেখে নেই ঘরে বসে বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় কি?
বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়ঃ বাংলাদেশে অনলাইনের মাধ্যমে লোন নিতে আপনাকে যা যা করতে হবে তা নিম্নরূপঃ
ধাপ-১ঃ প্রথমে আপনাকে http://forms.mygov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ-২ঃ তারপর সবার উপরে লিখা "বাংলাদেশ ফরম" বাটনটিতে ক্লিক করুন।
ধাপ-৩ঃ তারপর নিচের চিত্রের ন্যায় একটি পেজ আসবে, সেখান থেকে “অনলাইনে আবেদন করুন” বাটনটিতে ক্লিক করুন।
ধাপ-৪ঃ এবার আপনি এরকম একটি পেজ পাবেন, সেখান থেকে আপনি যেই মাধ্যমে বাংলাদেশে অনলাইনে লোন নিতে চান সেই মাধ্যমে সঠিক নিয়ম অনুসরন করে ফরমটি পূরন করুন।
আশা করি আপনি বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় জানতে পেরেছেন। উপরোক্ত নিয়ম অনুসরণ করে আপনি খুব সহযেই অনলাইনের মাধ্যমে যেকোন ব্যাংক থেকে লোন/ঋণ নিতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও এখন বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপস তৈরী হয়েছে যেমনঃ ক্রেডিট বি, এম পকেট, ইন্ডিয়াবুলস ধানি, লেজি পে, জেস্ট মানি অ্যাপ। যার মাধ্যমেও আপনি অনলাইনে লোন নিতে পারবেন খুব সহযেই।
ব্যাংক ঋণের আবেদন করার নিয়ম কি? | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্তিগত, ব্যবসায়িক সমস্যার জন্য আমাদের ব্যাংক থেকে মোটা সুদের উপর ভিত্তি করে ঋণ নিতে হয়। সেই ঋণ নেওয়ার জন্য আমাদের অনেক ধরনের নিয়ম বা শর্ত মেনে কাজ করতে হয়। চলুন ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য কিভাবে আবেদন করব তার নিয়ম জেনে নেই।
- ব্যাংক থেকে ঋণ/লোন নিতে হলে প্রথমে ব্যাংক ঋণের আবেদন ফরম এনএফ সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
- ফরমে ঋণ নেওয়ার কারণ ও কত টাকা ঋণ নিবেন সেটা বিস্তারিতভাবে ফরমে লিখে দিতে হবে। এবং আপনার ব্যাক্তিগত সকল ধরনের কাগজ পত্র জমা দিতে হবে। যেমনঃ আপনার রঙ্গিন ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, অফিসের আইডি কার্ড, আপনার বেতনের সার্টিফিকেট, চেকবুকের কাগজ, যেকোন বিলের কপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট, ইনকাম ট্যাক্স, ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- কিভাবে ব্যাংকের চেক ইনস্টল করতে হবে ও সুদের হার কত টাকা তা যাচাই করতে হবে এবং ফরমটি সাবমিট করতে হবে।
- তারপর ব্যাংক থেকে আপনাকে নিদিষ্ট সময়ে ইন্টারভিউ এর জন্য কল করা হবে। এবং সেখানে আপনার ব্যাংক ঋণ/লোন সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য জানতে চাইবে সেইসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হবে।
- তারপর ব্যাংক থেকে আপনাকে যাচাই করবে যে আপনি সঠিক মানুষ কিনা। ভেরিফিকেশন করা হয়ে গেলে আপনার একাউন্টে লোনের/ঋণের টাকা দেওয়া হবে।
ব্যাংক ঋণ পাওয়ার শর্ত | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
ব্যাংক ঋণ নেওয়ার অনেক নিয়ম রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাংকের দেওয়া শর্ত সমূহ সঠিকভাবে পালন করা। এবং আপনি ব্যাংক ঋণ নেওয়ার আগে ভালোভাবে পর্যালোচনা করবেন যে আপনি ব্যাংক থেকে দেওয়া শর্তগুলো সঠিকভাবে পূরণ করতে পারবেন কিনা। এবং যদি আপনি মনে করেন আপনি ব্যাংকের দেওয়া সকল ধরনের শর্ত পূরণ করতে সক্ষম তাহলেই আপনি ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করুন।
ব্যাংক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সেরা ব্যাংকগুলো কি কি?
ব্যাংক ঋণ দেওয়ার জন্য অনেক ধরনের ব্যাংক রয়েছে। তার মধ্যে সেরা কিছু ব্যাংক রয়েছে যারা আমাদের ঋণ দিয়ে থাকে। চলুন ব্যাংক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সেরা ব্যাংকগুলো কি তা জেনে নেই।
আরও পড়ুনঃ সরকারি শিক্ষা বৃত্তি ২০২২
- বাংলাদেশ ব্যাংক
- এশিয়ান ব্যাংক
- জনতা ব্যাংক
- গ্রামীণ ব্যাংক
- ইসলামিক ব্যাংক
- প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড
- সিটি ব্যাংক
- আল-আরাফা ব্যাংক
- ইবিএল ব্যাংক
- ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক
- স্টান্ডার্ড কর্টারেড ব্যাংক
- ডাচ বাংলা ব্যাংক
- এইচএসবিসি ব্যাংক
- সোনালী ব্যাংক
- ব্রাক ব্যাংক
ব্যাংক ঋণের সুবিধা কি? | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
ব্যাংক ঋণের কিছু সুবিধা রয়েছে। সুবিধা গুলো নিম্নরূপঃ
- যেকোন সময় ও যেকোন প্রয়োজনে ব্যাংক আপনাকে ঋণ দিবে।
- ব্যাংক আপনাকে ঋণ দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছরের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বা তার অধিক সময়ের জন্য আরও বেশী ঋণ দিতে প্রস্তুত।
- বাংলাদেশের সকল ধরনের ব্যাংক থেকে আপনি আপনার সুবিধামত লোন নিতে পারবেন।
- কিছু কিছু ব্যাংক ঋণ থেকে আপনাকে ইন্সুরন্স সুবিধা দেয়।
ব্যাংক ঋণের অসুবিধা কি? | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
ব্যাংক ঋণের যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমন কিছু অসুবিধাও রয়েছে। অসুবিধা গুলো নিম্নরূপঃ
- ব্যাংক ঋণ নেওয়া খুব ঝামেলার।
- ব্যাংক লোন নিলে চড়া আকারে সুদ দিতে হয়।
- সঠিক সময়ে ঋণের টাকা ব্যাংকে ফেরত না দিলে ব্যাংক থেকে আইনত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।
ব্যাংক ঋণের সুদের হার কত টাকা? | ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায়
ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে ব্যাংকে ঋণ শোধ করার সময় অতিরিক্ত কিছু পরিমান টাকা প্রদান করতে হয় যাকে সুদ বলে। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী ব্যাংক ঋণের সুদের হার কত টাকা তা নিচে দেওয়া হলঃ
১৯৯১ সালের ব্যাংক আইন ৪৫ ধারা অনুযায়ী সকল ধরনের ব্যাংকের ঋণে বিনিয়োগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৯% সুদের হার। কিন্তু সেটা ক্রেডিট কার্ডের জন্য প্রযয্য নয়। এছাড়া প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে যেকোন ব্যাংক ৯% এর থেকে কম আকারে সুদ নিতে পারবে কিন্তু ৯% এর বেশী নিতে পারবে না।
কিন্তু যদি গ্রাহক সময় মত সুদ দিতে না পারে তাহলে ৯% সুদের সাথে অতিরিক্ত ২% সুদ যোগ করা হবে। এবং সব মিলিয়ে সুদের হার হবে মোট ১১%।
ব্যাংক ঋণ নেওয়ার আগে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট থেকে ব্যাংক সুদের ব্যপারে জেনে নিবেন, কারণ সুদের হার বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে। তাই ব্যাংক যেন কোন কারণে অতিরিক্ত সুদ না নেয়।
শেষ কথাঃ ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় - বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায়
বন্ধুরা, আজ আমরা ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় ও বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের এই পোস্টে ব্যাংক লোনের সকল ধরনের তথ্য বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নতুন ইপার্সপোর্ট করার নিয়ম ২০২২
আশা করি আমাদের এই ব্যাংক ঋণ পাওয়ার উপায় - বাংলাদেশে অনলাইনে লোন পাওয়ার উপায় পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে এবং আমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে উপকৃত হবেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url