পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য - পহেলা বৈশাখের ১৫টি কবিতা
আপনি কি পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫টি কবিতার খোঁজ করছেন? তাহলে আজকের এই পোষ্ট টি আপনার জন্য। আজকে আমরা আলোচনা করব পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫টি কবিতা নিয়ে।
তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নিই, পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা নিয়ে।
সূচিপত্রঃ পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য - পহেলা বৈশাখের ১৫টি কবিতা
- পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
- পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা
- পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
- শেষ কথাঃ পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য - পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
আজকে আমরা আপনাদের সামনে পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য নিয়ে হাজির হয়েছি। এই বাক্যগুলো আমাদের ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষাতে লিখলে ভালো ফল পাবেন এটা আমরা আশা করি। পহেলা বৈশাখ হল বাঙ্গালীদের জাতীয় জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা উৎসব। বাংলাদেশে যেসব অসম্প্রদায়িক উৎসব পালন করা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো পহেলা বৈশাখ।
আরো পড়ুনঃ পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা বাণী
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রশ্ন আসে পহেলা বৈশাখ নিয়ে। পরীক্ষার প্রশ্নের ধরন গুলো এরকম আসে -পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য, পহেলা বৈশাখ নিয়ে অনুচ্ছেদ লিখন ও পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা এ ধরনের হয়ে থাকে। সেজন্য আজকের পোষ্টে আমরা পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা আপনাদের জন্য তুলে ধরেছি। নিচেপহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে লেখা হলো -
১। পহেলা বৈশাখ একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব, এই উৎসবে মুসলমান-হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সকল ধর্মের মানুষ যুক্ত হয়ে থাকে।
২। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন টাকে পহেলা বৈশাখ বলা হয়।
৩। গ্রামগঞ্জে বিভিন্ন ধরনের বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয় পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চারুকারু কলা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে মঙ্গল শোভাযাত্রার অনুষ্ঠান করা হয় এবং মঙ্গল শোভাযাত্রা কে ইউনেস্কো " মানবতার অমূল্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য" হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
৪। বাংলা সালের প্রবর্তন করেন মোগল সম্রাট আকবর এবং তার শাসনামলে প্রথম পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়।
৫। বাংলাদেশের ১৪ ই এপ্রিল এবং ভারতের ১৫ ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালন করা হয়।
৬। বাঙালি জাতির পহেলা বৈশাখ একটি অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
৭। সেজন্য যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে প্রতিবছর এই উৎসবটি পালন করা হয়।
৮। পহেলা বৈশাখের আর একটা গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হচ্ছে হালখাতা, যা বর্তমান সময়ে ব্যাপক ভাবে পরিচিতি লাভ করছে। এখানে হালখাতা বলতে নতুন একটা হিসাব বই বোঝানো হয়েছে।
৯। প্রকৃতভাবে হালখাতা হল বাংলা সালের প্রথম দিনে দোকানের হিসাব নিকাশ আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া বা কৌশল।
১০। আমি একজন বাঙালি, সেজন্য পহেলা বৈশাখ আমারও প্রাণের উৎসব।
পহেলা বৈশাখের ১৫টি কবিতা
পহেলা বৈশাখ সকল বাঙ্গালীদের এখন প্রাণের উৎসব। বাংলার সকল মুসলমান হিন্দু খ্রিস্টান বৌদ্ধ ও বিভিন্ন গোষ্ঠীকে এক জায়গায় আনার কোন উৎসব থাকলে পহেলা বৈশাখ। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে উৎসবের সঙ্গে নতুন নতুন উপাদান যোগ হয়েছে। সব ধরনের পিঠাপুলি থেকে শুরু করে মাংস পোলাও, তার সাথে থাকছে পান্তা ইলিশের ঘনঘটা।
এ ধরনের প্রতিযোগিতায় থেমে নেই শিশু কিশোর কিশোরী, এমনকি তরুণ-তরুণী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা ও অংশগ্রহণ করেন। যেমন ব্যবসায়ীরা এ দিবস উদযাপন করে নতুন হালখাতা খুলে নতুন নতুন স্বপ্ন নিয়ে, তেমনি কবি-সাহিত্যিকদের কাছেও এ এক নতুন প্রেরণার উৎসব। প্রতীক হিসেবে বৈশাখ কে তারা কল্পনা করে।
আরো পড়ুনঃ পহেলা বৈশাখ ১৪২৯ মেসেজ দেখুন
পুরাতন বছরের বিভিন্ন অসুখ বিসুখ, রোগ-শোক, ব্যথা বেদনার জরাজীর্ণতাকে উড়িয়ে দিয়ে প্রেম-ভালোবাসা এবং সুখ-শান্তিতে ভরে দেয় নতুন বছর তাদের জীবনের ঘর গোলা। এই কারণে কবিদের কাছে রুদ্ররূপে ধরা দেয় বৈশাখ। তাই তাদের সন্ধ্যা কাব্যের কালবৈশাখী কবিতায় গর্জে ওঠেন অগ্নিঝরা কন্ঠে -
জাগেনি রুদ্র, জাগিয়াছে শুধু অন্ধকারের প্রমথ-দল,
ললাট-অগ্নি নিবেছে শিবের জটার গঙ্গাজল।
জাগেনি শিবানী জাগিয়াছে শিবা,
আধার সৃষ্টি আসেনি ক' দিবা,
এরই মাঝে হায়, কালবৈশাখী স্বপ্ন দেখিলে কে তোরা বল।
আসে যদি ঝড় আসুক, কুলোর বাতাস কে দিবি অগ্রে চল।
বারেবারে যথা কাল-বৈশাখী ব্যর্থ হলো রে পুব-হাওয়ায়
দধীচি হাড়ের বজ্র-বহ্নি বারে বারে যথা নিভিয়া যায়,
কে পাগল সেথা যাস হাকি
" বৈশাখী কাল-বৈশাখী!"
হেথা বৈশাখী-জ্বালা আছে শুধু, নাই বৈশাখী-ঝড় হেথায়
সে জ্বালায় শুধু নিজে পুড়ে মরি, পড়াতে কারেও পারিনে, হায়।
কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও রুদ্ররূপে বৈশাখে অবলোকন করেছেন। কল্পনা কাব্যের " বৈশাখ" কবিতার বৈশাখ কে সরাসরি সম্বোধন করেছেন এই নামেঃ
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ,
ধুলাই ধূসর রুক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল,
তপঃক্লিষ্ট তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিষাণ ভয়াল
কারে দাও ডাক
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈেশাখ?
কবি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, বৈশাখ তার প্রকৃত রুদ্র রূপ ধরে আবির্ভূত হয় নি বলেই সারাদেশে আজও পুরাতন জন্য তাই পরিপূর্ণ হয়ে আছেন। তাই তার ক্ষোভঃ
কালবৈশাখী আসেনি হেথায়, আসিলে মোদের তরু-শিরে
সিন্ধু শকুন বসিত না আসি' ভিড় করে আজ নদীতীরে।
জানিনা কবে সে আসিবে ঝড়
ধুলাই লুটাবে শত্রু গড়,
আজিও মোদের কাটেনি ক'শীত, আসেনি ফাগুন বন ঘিরে।
আজিও বলির কাঁসরঘন্টা বাজিয়া উঠেনি মন্দিরে।
কবি বৈশাখের রুক্ষ রূপ কবিতার শুরুতে তুলে ধরেছেন। তিনি কিন্তু কবি নজরুলের মত বৈশাখের বজ্রকঠিন আঘাতের পক্ষপাতী পক্ষপাতী নন।
হে বৈরাগী, করো শান্তিপাঠ।
উদার উদাস কন্ঠ যাক ছুটে দক্ষিনে ও বামে
যাক নদী পার হয়ে, যাক টলি গ্রাম হতে গ্রামে,
পূর্ণ করি মাঠ।
হে বৈরাগী, করো শান্তিপাঠ।
ছাড়ো ডাক, হে রুদ্র বৈশাখ!
ভাঙ্গিয়া মধ্যন্য তন্দ্রা জাগি উঠি বাহিরিব দ্বারে,
চেয়ে রবো প্রাণীশূন্য দগ্ধ তৃণ দিগন্তের পারে
নিস্তব্ধ নির্বাক
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ।
শান্ত ঋষির মত বৈশাখের কাছে কবির আবেদনঃ
দুঃখ সুখ আশা ও নৈরাশ
তোমার ফুতকারক্ষু্দ্ধ ধুলাসম উড়-ক গগনে,
ভরে দিক নিকুঞ্জের স্বলিত ফুলের গন্ধ সনে
আকুল আকাশ
দুঃখ সুখ আশা ও নৈরাশ।
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।.
মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।
রসের আবেশরাশি শুষ্ক করি দাও আসি
আনো আনো আনো তব প্রলয়ের শাঁখ।
মায়ার কুজ্বটিজাল যাক দূরে যাক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৈশাখ নিয়ে অনেক গান রচনা করেছেন। বর্ষবরণের এগানটি সকল বাঙ্গালীর এখন প্রাণের সংগীতঃ
এসো এসো, এসো হে বৈশাখ
তাপস নিঃশ্বাস বায়ে মুমূর্ষু এর দাও উড়ায়,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক।
জ্বলিতেছে সম্মুখে তোমার
লোলুপ চিতাগ্নিশিখা লেহি লেহি বিরাট অম্বর
নিখিলের পরিত্যক্ত মৃত স্তপ বিগত বৎসর
করি ভস্মসার
চিতা জলে সম্মুখে তোমার।
ধ্বংসের নকীব তুমি দুর্বার, দুর্ধর্ষ বৈশাখ
সময়ের বালুচরে তোমার কঠোর কন্ঠে
শুনি আজ অকুণ্ঠিত প্রলয়ের ডাক।
এসো তুমি সাড়া দিয়ে বিজয়ী বীরের মতো, এস স্বর্ণ শ্যেন,
বাজায় নাকাড়া কাড়া এস তুমি দিগি! জয়ী জুলকারনায়েন,
আচ্ছন্ন আকাশ নীলে ওড়ায়ে বিশাল শক্তিমত্ত ও প্রাবল্যে প্রাণের,
সকল প্রকার বাধা চূর্ণ করি মুক্ত কর পৃথিবীতে সরণি প্রাণের,
সকল দীনতা, ক্লেদ লুপ্ত কর, জড়তার চিহ্ন মুছে যাক,
বিজয়ী বীরের মতো নির্ভীক সেনানী তুমি
এসো ফিরে হে দৃপ্ত বৈশাখ।
রোজ হাশরের দগ্ধ তপ্ত তাম্র মাঠ, বন, মৃত্যুপুরী, নিস্তব্ধ নির্বাক;
সুরে ইসরাফিল কন্ঠে পদ্মা মেঘনার তীরে
এসো তুমি হে দৃপ্ত বৈশাখ।
বৈশাখের কাল ভোরে উঠে এলো। বন্দর, শহর
পার হয়ে সেই ঘোরা যাবে দূর কোকাফ মুলুকে,
অথবা চলার তালে ছুটে যাবে কেবলি সম্মুখে
প্রচন্ড আঘাতে পায়ে পিষে যাবে অরণ্য, প্রান্তর।
দূর সমুদ্রের বুকে নির্বাসিত যুগ যুগান্তর
শুনেছে ঘরের ডাক দূর দিগন্ত পার থেকে,
বাঁকায়ে বঙ্কিম গ্রীবা বজ্রের আওয়াজে উঠে ডেকে
শূন্য এ ওড়ে বুকে নিয়ে সুলেমান নবীর স্বাক্ষর।
মাঠ-ঘাট বন
পুড়ছে যখন
অগ্নি খরায়
তাপে
পুড়ছে পৃথিবী
পুড়ছে জীবন
পারমাণবিক
পাপে।
যখন মানুষ,
পশু ও পাখির
জীবন ওষ্ঠা-
গত।
তখন বৈশাখ
এল পৃথিবীতে
হাতেম তাই এর মত।
বৈশাখ এসেছে
ফুল বৃষ্টিতে
ধুয়ে যাক শোক-
তাপ।
কালবৈশাখী
এনেছে সঙ্গে,
উড়ে যাক যত পাপ।
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
মুঘল সম্রাট পহেলা বৈশাখের প্রবর্তন। মোগল সম্রাটের থেকে খাজনা আদায় করার সুবিধার জন্য বাংলা সালের প্রবর্তন করা হয়েছিল। সেই থেকে উপমহাদেশে অনেক উৎসাহর মাধ্যমে পালন করা হয় পহেলা বৈশাখ। পুণ্যাহ এবং হালখাতা পহেলা বৈশাখের কিছু গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। বেশ উৎসবের সাথে শহরে বন্দরে, গ্রামেগঞ্জে পালিত হালখাতার অনুষ্ঠান।
আরো পড়ুনঃ পহেলা বৈশাখ ২০২২ ইংরেজি কত তারিখে
ব্যবসায়ীরা সারা বছর তাদের কাস্টমারদের বাকি দিয়ে রাখে। সেই বাকি টাকা উঠানোর জন্য হালখাতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। ব্যবসায়ীগণ গ্রাহকদের মিষ্টিমুখ করায় এই দিনে। জমিদার এবং কাদের মধ্যে পুণ্যাহ অনুষ্ঠানটি হয়ে থাকে। পুণ্যাহ অনুষ্ঠানটি এখন আর আগের মতো পালিত হয় না বর্তমানে জমিদার প্রথা না থাকার কারণে।
শেষ কথাঃ পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য - পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা গুলো জানতে আমাদের পুরো আর্টিকেলটি পড়ুন। পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য ও পহেলা বৈশাখের ১৫ টি কবিতা কেমন লাগলো আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। আমাদের আজকের এই পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনাদের ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url