OrdinaryITPostAd

বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন - স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া?

আপনি কি বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান কিনা তা জানতে চান? তাহলে আমাদের আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। আজ আমরা আলোচনা করব বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান কিনা তা নিয়ে।
শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান কিনা।

পেজ সূচিপত্রঃ বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন - স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান

কবে বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস? |  বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন

পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালীদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় ও ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, নির্বিচারে গণহত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করে। এই অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে ঢাকায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তারপর একে একে এম এ হান্নান, আবুল কাশেম সন্দীপ, বেতারের জনৈক টেকনিশিয়ান এবং মেজর জিয়া ও চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রটি পাঠ করেন। এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে এই ঘোষণা প্রচার করা হয়। তারপর থেকে ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন?

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে, পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর কাছে এরেস্ট হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়। তাই বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয়। 

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনাটি ইংরেজিতে দিয়েছিলেন যাতে করে সারা বিশ্বের মানুষ তা শুনতে ও জানতে পারে। পরে বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষনাটির বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনাটি ছিল নিম্নরূপ - 
ইংরেজিঃ "Maybe this is my last message. Bangladesh is independent from today. I urge the people of Bangladesh to be ready wherever they are, whatever they have and to resist the Pakistani aggressors with all their might. Continue fighting until the last Pakistani troops are expelled from the land of Bengal and the final victory of this Bengal is achieved".

বাংলা অনুবাদঃ "হয়ত এটাই আমার শেষ বার্তা। বাংলাদেশ আজ থেকে স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগনকে আমি আহব্বান দিচ্ছি যে, যেখানে যে আছে, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত হও এবং পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ কর। এই বাংলার মাটি থেকে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীর সর্বশেষ সৈন্যটিকে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং লড়ায় চালিয়ে যাও সেই পর্যন্ত যতক্ষন পর্যন্ত এই বাংলার চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না হয়"
তারপর পরই আরও একটি বার্তা পাঠানো হয়েছিল যেটা ছিল- 
ইংরেজিঃ «Bangladesh today is a sovereign and independent state. The West Pakistani armed forces on Thursday night launched a surprise attack on the EPR headquarters and Rajarbagh in Dhaka's Peelkhana. Many innocent and unarmed people have been killed in Dhaka city and other parts of Bangladesh. Violent clashes between police and East Pakistan Rifles on the one hand and armed forces and Pindi on the other. The Bengalis are fighting for an independent Bangladesh with great courage against the enemy. Resist treacherous enemies from every corner of Bangladesh. May Allah Almighty help us in our fight for freedom. "Joy Bangla".

বাংলা অনুবাদঃ «বাংলাদেশ আজ একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন রাষ্ট্র। পশ্চিম পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করে ইপিআর সদর দপ্তরে এবং ঢাকার পিলখানার রাজারবাগে হামলা চালায়। অনেক নিরপরাধ ও নিরস্ত্র মানুষ ঢাকা শহর এবং বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানে নিহত হয়েছে। একদিকে পুলিশের এবং পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ এবং অন্যদিকেথেকে সশস্ত্র বাহিনীর ও  পিন্ডির  মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ চলছে।  অত্যন্ত সাহসের সাথে শত্রুর সাথে বাঙালিরা স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য লড়াই করছে। বিশ্বাসঘাতক শত্রুদের বাংলাদেশের প্রতিটি কোণা থেকে প্রতিরোধ করুন। মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা স্বাধীনতার জন্য আমাদের লড়াইয়ে সাহায্য করুন। "জয় বাংলা"»

দুটি ঘোষণায় প্রচার করা হয়েছিল বাংলায় অনুবাদ করে যার কারণে প্রাপ্ত ঘোষণাগুলোর বিভিন্ন মাধ্যমের মধ্যে কিছুটা শাব্দিক তারতম্য দেখা দেয়। পূর্বপ্রস্তুতকৃত এই ঘোষণাগুলো এবং টেপ করে রাখা হয়েছিল অনেক আগেই বলে ধারণা করা হয়।

স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান? | বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেও জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করে এ দেশের অন্যতম বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, প্রধান রাজনৈতিক দল। এটি ইতিহাস বিকৃতির পর্যায়ভুক্ত বলে মনে করেন ইতিহাসবিদরা। হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করা হয়েছে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উপস্থাপন করে প্রকাশিত হওয়া ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ, দলিলপত্র’-এর তৃতীয় খণ্ড। দেশ-বিদেশের সব স্থান থেকে এই খণ্ডটি বাজেয়াপ্ত ও প্রত্যাহারেরও নির্দেশ প্রদান করা হয়। হাইকোর্ট থেকে প্রদত্ত নির্দেশনাঃ
‘তারা সংবিধান লংঘন করেছে যারা এরকম ইতিহাস বিকৃতির সঙ্গে জড়িত। ইতিহাস বিকৃতির রচনা যারা করেছেন সরকার চাইলে সেই প্রত্যয়ন কমিটির বিরুদ্ধে সংবিধান লংঘন ও ধোঁকাবাজির অভিযোগে  শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন’

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ | বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন

বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষনাটি দেওয়ার পর অনেকেই এই ঘোষনা পত্রটি পাঠ করেছিলেন। তাদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ও ছিলেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষনা দেওয়ার পরে সেই ঘোষনা পত্রটি পাঠ করেছিলে। যার কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অনেকেই মনে করেন জিয়াউর রহমান ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক। স্বাধীনতার ঘোষনা পত্রটি যারা পাঠ করেছিলেন তাদের নাম নিম্নরূপঃ

এম এ হান্নান

চট্টগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হান্নান জিয়াউর রহমানের পূর্বে শেখ মুজিব কর্তৃক প্রেরিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে  একাধিকবার পাঠ করেন। অধ্যাপক আবুল কাশেম সন্দীপ সে ঘোষণাটি বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন।

বেতারের জনৈক টেকনিশিয়ান

আবদুল করিম খন্দকার মনে করেন, ২৬শে মার্চ পূর্ব বাংলা বেতারের একজন টেকনিশিয়ান সর্বপ্রথম স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি বেতার বার্তায় পাঠ করেন।

আবুল কাশেম সন্দীপ

অন্য কোন বর্ণনায় জানা গেছে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাটি আবুল কাশেম সন্দীপও জিয়াউর রহমানের আগে পাঠ করেছিলেন।

মেজর জিয়া

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে থেকে ২৭শে মার্চ চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান পাঠ করেন।

আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধু কখন স্বাধীনতার ঘোষনা দেন

শেষ কথাঃ বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন - স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান

বন্ধুরা আজ আমরা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান কিনা তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের এই বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন - স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান পোস্টটিতে স্বাধীনতার ঘোষক কে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আমাদের এই বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা হয় কেন ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ।

আপনার জন্য এই ধরণের আরো কিছু পোস্ট

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url