শবে বারাত কবে ২০২২ - শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ
আপনি কি জানতে চান শবে বারাত কবে ২০২২ বা শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ? তাহলে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য। আরবি শাবান মাসের ১৫ তারিখে হয় পবিত্র শবে বারাত বা লায়লাতুল বারাত।
লায়লাতুল বারাত বা শবে বারাত হিজরি শাবান মাসের ১৫ তারিখ হয়ে থাকে। এই দিনে সকল মুসলিম সম্প্রদায় সারা রাত আল্লাহর ইবাদাত করেন ও রোজা রাখেন। এই বছরে শবে বারাত কবে ২০২২ ও শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ তা আমরা এখনও জানিনা। চলুন জেনে নেই শবে বারাত কবে ২০২২ বা শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ?
আরও পড়ুনঃ শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম
পেজ সূচীপত্রঃ শবে বারাত কবে ২০২২ - শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ
- শবে বারাত কবে ২০২২
- শবে বরাতের নামাজ ও নিয়ম-কানুন
- শবে বরাতের নফল নামাজ
- শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
- শবে বারাতের রোজার ফজিলত
- শেষ কথাঃ শবে বারাত কবে ২০২২ - শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ
শবে বারাত কবে ২০২২
শব-ই-বরাত হল একটি মুসলিম ছুটির দিন যা শাবানের (ইসলামী ক্যালেন্ডারের অষ্টম মাস) ১৫ তম রাতে পালিত হয়। এটিকে লাইলাতুল বরাত, লায়লাতুল নিসফ মিন শাবান এবং শব-ই-নিমা-ই-শাবান, বা লায়লাতুল বারাত নামেও উল্লেখ করা হয়। মুসলমানরা রাত কাটিয়ে নামাজ, প্রার্থনা, কোরআন তেলাওয়াত, জমায়েত এবং আল্লাহর কাছে তাদের পাপের ক্ষমা প্রার্থনা করে। ১৫ শাবান তথা শবে বারাতের দিনে, মুসলমানরা সাধারণত ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোজা পালন করে থাকে।
এই বছর ২০২২ এ শব-ই-বরাত পালিত হবে শুক্রবার, ১৮ মার্চ ২০২২ (১৫ শাবান)।
(**চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তারিখ পরিবর্তিত হতে পারে**)
শবে বরাতের নামাজ ও নিয়ম-কানুন | শবে বারাত কবে ২০২২
আসলে শবে বরাতের নামাজ বলে কিছু নেই, যেহেতু এই রাত ইবাদত করে কাটাতে হয়, তাই হাদিসে এই সমাধান দেওয়া হয়েছে। আর বিশ্ব মুসলিমরা বিশেষ কিছু ইবাদত করে থাকে।
সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর জীবনের বরকত, ঈমান রক্ষা এবং অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার জন্য দুই রাকাতে মোট ৬ রাকাত নফল নামাজ পড়া উত্তম। এই ৬ রাকাত নফিল নামাজের নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা তারপর যে কোনো একটি সূরা পাঠ করতে হবে। দুই রাকাত নামাজ শেষ করে সূরা ইয়াসিন বা সূরা এখলাছ ২১ বার পড়তে হবে।
শবে বরাতের নফল নামাজ | শবে বারাত কবে ২০২২
১। তাহিয়াতুল অজুর নামাজের দুই রাকাত, নিয়ম- প্রতি রাকাতে (সূরা ফাতিহা) পড়ার পর ১ বার আয়াতুল কুরসি এবং ৩ বার (সূরা এখলাছ)।
ফজিলতঃ প্রতি ফোঁটা পানির জন্য সাতশত নেকী লেখা হবে।
২। দুই রাকাত নফল নামাজ, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর আয়াতুল কুরসি একবার এবং সূরা এখলাছ ১৫ বার, তারপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ পাঠ করতে হবে।
ফজিলতঃ রুজিতে বরকত, দুঃখ থেকে মুক্তি, গুনাহ মাফের দান করা হবে।
আরও পড়ুনঃ রজব মাসের ফজিলত ও আমল
৩। আট রাকাত নফল নামায দুই রাকাতে পড়তে হবে। বাকি সবকিছু একই নিয়ম অনুসরণ করে।
ফজিলতঃ গুনাহ থেকে মুক্ত হবে, দোয়া কবুল হবে এবং আরও বেশি বেশি নেকী পাওয়া যাবে।
৪। দুই রাকাত করে ১২ রাকাত নফল নামাজ পড়ুন, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১০ বার সূরা এখলাছ পাঠ করুন এবং এই নিয়ম অনুযায়ী বাকী নামাজ শেষ করুন, ১০ বার কলেমা তাওহীদ, ১০ বার কলেমা তামজীদ ও ১০ বার দুরূদ শরীফ।
৫। ১৪ রাকাত নফল নামায দুই রাকাত করে, নিয়ম- প্রতি রাকাত সূরা ফাতিহার পর যেকোনো একটি সূরা পাঠ করুন।
ফজিলতঃ যে কোন দোয়া কবুল হবে।
৬। এক সালামে চার রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ।
ফজিলতঃ আপনি পাপ থেকে এমনভাবে শুদ্ধ হবেন যে আপনি সবেমাত্র আপনার মায়ের গর্ভ থেকে জন্মগ্রহণ করেছেন।
৭। এক সালামে আট রাকাত নফল নামাজ, নিয়ম- প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা এখলাছ শরীফ ১১ বার।
ফজিলতঃ বর্ণিত আছে যে, হযরতে সৈয়্যদাতুনা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহা বলেছেন যে, ‘আমি ওই নামাজ আদায় কারীর সাফায়াত করা ব্যতীত জান্নাতে প্রবেশ করব না।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত | শবে বারাত কবে ২০২২
উচ্চারনঃ
নাওয়াইতুয়ান উশাল্লিয়া লিল্লা-হি তা-লা- রাকাতাই সালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন-নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল কাবাতিশ শরিফতি আল্লা-হু আকবার।
আপনি যদি এটি বাংলায় করতে চান তবে আপনি এটি এভাবে করতে পারেনঃ
কিবলামুখী হয়ে শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত আদায় করছি, 'আল্লাহু আকবর'।
শবে বারাতের রোজার ফজিলত | শবে বারাত কবে ২০২২
রোজা রাখার ফজিলত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি শা'বান মাসে একদিন রোজা রাখবে, আমার পক্ষ থেকে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। অন্য একটি হাদিসে বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখ রোযা রাখবে তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। সালাতুল তাসবীহের নামাজ ও পড়তে পারেন। এ নামাজের অনেক ফজিলত রয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন হাদিস শরিফে এসেছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) প্রতি আরবি মাসের ১৩,১৪ ও ১৫ তারিখে নফল রোজা রাখতেন। এবং তিনি নফল রোজা রাখতে উৎসাহিত করেছেন। সেই হিসাবে শাবান মাসেও ৩টি রোজা রাখা যেতে পারে।
নবী করীম সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার চাচা হযরত আব্বাস (রাঃ) কে সালাতুল তাসবীহ এর নামায সম্পর্কে বলেছিলেন যে, এই নামাজ আদায় করলে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুণাহ মাফ করে দেবেন।
নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছিলেন হে ‘চাচা জান! যদি পারেন, তাহলে প্রতিদিন একবার এই নামাজটি আদায় করুন। আপনি যদি প্রতিদিন না পারেন তবে সপ্তাহে একবার এটি পড়ুন। না পারলে মাসে একবার পড়ুন। না পারলে বছরে একবার পড়ুন। যদি আপনি তাও করতে না পারেন, তাহলে জীবনে অন্তত একবার এই নামাজটি আদায় করুন (তবুও ছেড়ে দিবেন না)।
আরও পড়ুনঃ রমজান মাসের সময়সূচি ২০২২
শেষ কথাঃ শবে বারাত কবে ২০২২ - শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ
বন্ধুরা আজ আমরা শবে বারাত কবে ২০২২ ও শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ তা নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন শবে বারাত কবে ২০২২ বা শবে বারাত ২০২২ কত তারিখ। ২০২২ সালের ১৮মার্চ লায়লাতুল বারাত বা পবিত্র শবে বারাত পালিত হবে ইনশাল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url