OrdinaryITPostAd

রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ - শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা

আপনি কি জানতে  চান  রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ? অথবা শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আর দেরি নয়। আজ আমাদের এই পোস্টে রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ এবং শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা আলোচনা করব।

চলুন আর দেরি না করে জেনে নেই রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ ও শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা সম্পর্কে সম্পূর্ন তথ্য।

আরও পড়ুনঃ আলহামদুলিল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ কি?

পেজ সূচীপত্রঃ রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ - শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা

রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ

হিজরি ১২ মাসের মধ্যে সপ্তম মাস রজব মাস। এই রজব মাসের ফজিলত ও আমল অনেক। আল্লাহর দেওয়া হিজরি ১২ টি মাসের মধ্যে ৪টি মাস উত্তম আর তার মধ্যে একটি হল রজব মাস। এই রজব মাসে সব ধরনের যুদ্ধ-বিগ্রহ হারাম করা হয়েছে। এই মাসে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর নির্দেশে ৭ আসমান ভ্রমণ করে ছিলেন। এই মাসেই পবিত্র শবে-মেরাজ পালন করা হয়। রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে মিরাজের নামাজ পড়া ও ২৭ তারিখ পবিত্র শবে-মেরাজ পালন করা হয়। এই মাসের বিশেষ কিছু দিনগুলোতে রোজা রাখার নির্দেশ আছে।

পবিত্র শবে মেরাজ কি? | রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ

লাইলাতুল মেরাজ বা মেরাজের রাত, যাকে সাধারণত শবে মেরাজ বলা হয়, ইসলামে সেই রাত যখন আমাদের শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) অলৌকিকভাবে আকাশে আরোহণ করেন এবং স্রষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

মুসলমানরা এ রাতটি ইবাদতের মাধ্যমে উদযাপন করে। ইসলামে শবে মেরাজের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে, কারণ এই মেরাজের মাধ্যমেই ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয় স্তম্ভ অর্থাৎ "নামাজ" মুসলমানদের জন্য অপরিহার্য (ফরজ) হিসেবে নির্ধারিত হয় এবং দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান সুনির্দিষ্ট করা হয়।

শবে-ই-মেরাজের নামাজের নিয়ত ও নিয়ম | রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ

পবিত্র শবে-ই-মেরাজের রাতে নামাজ পড়া ও রোজা রাখার নিয়ম আছে। এটা নফল ইবাদত আপনি চাইলে করতে পারেন আবার নাও করতে পারেন। এই রাতে ইবাদত করলে সওয়াব আছে না করলে গুনাহ নেই। অনেকের মতে শবে-ই-মেরাজের নামাজ ১২ রাকাত আপনি চাইলে তার বেশিও আদায় করতে পারেন। প্রতি ২ রাকাতের নিয়ত করে ১২ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ ইনশাআল্লাহ অর্থ কি?

শবে-ই-মেরাজের নামাজের নিয়তঃ

نويت أن أصلي يله تعا لى ركعت صلوة اليلة المعراج متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله اكبر

উচ্চারণঃ 

নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকায়াতাই ছালাতিল লাইলাতিল মিরাজ মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার। 

বাংলায় নিয়তঃ 

লাইলাতিল মিরাজের দুই রাকাআত নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা | রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ

‘মিরাজ’ একটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ হল মই। অন্যভাবে বলা যায়, মহান মিলন। মিরাজের রাতেই মহিমান্বিত ও বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছিল ৬২০ খ্রিস্টাব্দের রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে, নবুওয়াতের দশম বছরে, নবীজির ৫০ বছর বয়সে মক্কী জীবনের প্রায় শেষের দিকে।

এ রাত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র রাত। এ রাতে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) স্বর্গীয় বাহন বোরাকে করে আসমানে গমন করেন। এই মহিমান্বিত রাতে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বান্দাদের উপর ফরজ করা হয়।

ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কাছে এই রাতের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। শবে মেরাজের রাতে যা ঘটেছিল তা বিশ্বাস করা মুসলমানদের কর্তব্য। হজরত মুহাম্মদ (সা.) সপ্তম আসমান অতিক্রম করে আরশে আজিমে পৌঁছেন এবং আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের পর পৃথিবীতে ফিরে আসেন।

প্রথমে মদীনা মুনাওওয়ারা, তারপর সিনাই পর্বতে, তারপর হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্মস্থান ‘বায়ত লাহম’ এবং চোখের নিমেষে জেরুজালেমের আকসা মসজিদ বা বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছান। আম্বিয়াতে কিরামের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে দুই রাকাত নামাযের জামাতের ইমামতি করেন।

তিনি হলেন ‘ইমামুল মুরসালিন’ অর্থাৎ সকল নবীর ইমাম। নামাজের পর জিব্রাইল (আ.) উপস্থিত সকলের সাথে রাসূল (সা.)-এর পরিচয় করিয়ে দেন। রাতের সফরের প্রথম পর্ব এখানেই শেষ।

পবিত্র কোরআনের ভাষায়, মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত যাত্রাকে 'ইসরা' বলা হয়।

অতঃপর হযরত করিম (সা.) বোরায় আরোহণ করলে তা দ্রুত মিরাজ বা উপরের জগতে যাত্রা শুরু করে।

তিনি মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার মহাবিশ্বের অপূর্ব দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। প্রত্যেক আসমানে বিশিষ্ট নবীদের সাথে তাঁর সালাম ও সালাম বিনিময় হয়। প্রথম আসমানে হজরত আদম (আ.), দ্বিতীয় আসমানে হজরত ঈসা (আ.) ও হজরত ইয়াহিয়া (আ.), তৃতীয় আসমানে হজরত ইউসুফ (আ.), চতুর্থ আসমানে হজরত ইদ্রিস (আ.), হজরত হারুন (আ.)। ) পঞ্চম আসমানে। মহানবী (সা.) ষষ্ঠ আসমানে হজরত মুসা (আ.) এবং সপ্তম আসমানে হজরত ইবরাহীম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সালাম বিনিময় করেন।

সপ্তম আসমানে ফেরেশতাদের স্বর্গীয় কাবা বায়তুল মামুরে তিনি অসংখ্য ফেরেশতাকে তাওয়াফরত এবং অনেককে নামাজ পড়তে দেখেছেন। এরপর তিনি জিব্রাইল (আঃ)-এর সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম পরিদর্শন করেন। এছাড়া অসংখ্য দৃশ্য অবলোকন করে আলম বারযখ সিদরাতুল মুনতাহায় ফিরে আসেন।

এভাবে সপ্তম আসমান থেকে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ পর্যন্ত সফরসঙ্গী জিব্রাইল (আ.) ও ঐশিবাহন বোরাকের গতি স্থির হয়ে যায়। জিব্রাইল (আ.) এখানেই থামলেন এবং বললেন, ‘এই সীমানা অতিক্রম করার শক্তি আমার নেই। এখানে শুধু তুমি এবং তোমার রব। '

অতঃপর জিব্রাইল (আঃ) নবীজীর সাথে যাননি। এখানে তার গাড়িরও পরিবর্তন হয়। অতঃপর হযরত কারিম (সা.) স্বয়ং ‘রফরাফ’ নামক বিশেষ আসমানী বাহনে আরোহণ করে রাব্বুল আলামিনের অসীম শক্তিতে অকল্পনীয় গতিতে ৭০ হাজার নূরের পর্দা অতিক্রম করে আরশ মোয়াল্লার কাছে পৌঁছে আল্লাহর দরবারে হাজির হন। রাসুল (সা.) স্থান-কালের উর্ধ্বে লা মাকাম-লা জামানের স্তরে পৌঁছেছিলেন। নূর আর নূরের সৌরভে তিনি অভিভূত হলেন।

সেখানে হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কথোপকথন করেন। তিনিই একমাত্র মহান মানুষ যিনি এই যাত্রার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নৈকট্য, সান্নিধ্য ও দিদার লাভের পর আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করেছেন এবং শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ পুরস্কার হিসেবে আল্লাহর বান্দাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে ওই রাত ও উষার সন্ধিক্ষণে আবার মক্কায় নিজগৃহে প্রত্যাবর্তন করেন।

মহানবী (সা.)-এর মেরাজ একটি অলৌকিক ঘটনা এবং মহানবী (সা.)-এর নেতৃত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের জ্বলন্ত প্রমাণ। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মিরাজের অনন্য শিক্ষা নানা দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। মহানবী (সা.) যখন সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থায় ছিলেন, তখন তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদিজা (সা.) এবং তাঁর আশ্রয়দাতা চাচা আবু তালিব হঠাৎ মারা যান।

অন্যদিকে কাফেরদের অত্যাচার তাকে বিচলিত করে। অতঃপর মিরাজের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তাঁর হাবীবকে নিজের কাছে ডেকে নেন এবং তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে সমাজ সংস্কারের পরিপূর্ণ দিক নির্দেশনা দেন।

আরও পড়ুনঃ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম এর অর্থ কি?

শেষ কথাঃ রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ

বন্ধুরা আজ আমরা আমাদের এই নিবন্ধটিতে রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ ও শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশাকরি আপনারা আমাদের এই নিবন্ধটির মাধ্যমে রজব মাসের কত তারিখে শবে মেরাজ, শবে মেরাজের বিস্তারিত ঘটনা ও শবে মেরাজের নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন। নতুন নতুন আরও পোস্ট পেতে আমাদের সঙ্গেই থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url