শবে মেরাজের রোজা কয়টি - শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে
শবে মেরাজের রোজা কয়টি এবং শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে সেগুলো জানার জন্য আমরা সম্পূর্ণ নিবন্ধনটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
ইসলামী পরিভাষায় যে রাতে নবী কারীম (সাঃ) আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে ঊর্ধ্ব আকাশে গমন করেছিলেন সেই রাতকে শবে মেরাজের রাত বলে। এইজন্য শবে মেরাজের অর্থ দাঁড়ায় শবে অর্থাৎ রজনী ।মেরাজ অর্থ ঊর্ধ্বগমন। তাই আমাদের উচিৎ এই দিনটিকে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখা,এবাদাত বন্দেগী করা। এখন আমরা শবে মেরাজের রোজা কয়টি রোজা কত তারিখে তা সম্পর্কে জানব।
আরও পড়ুনঃ রমজানের সময়সূচী ২০২২ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
পেজ সূচিপত্রঃ
- কখন হয়েছিল শবে মেরাজ
- শবে মেরাজের রোজা কয়টি জেনে নেই
- শবে মেরাজের নফল নামাজ
- শবে মেরাজের রোজা রাখা কি বেদাআত
- শবে মেরাজের রোজা কয়টি এটা নিয়ে ভিন্নমত
কখন হয়েছিল শবে মেরাজঃ
শবে মেরাজের এই ঐতিহাসিক ঘটনাটি কবে ঘটেছিল তা নিয়ে বিভিন্ন মতবিরোধ আছে। বিভিন্ন ঐতিহাসিকদের মতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুয়তের পঞ্চম বছরে এই রাত টি সংঘটিত হয়।কিন্তু কেউ কেউ বলেন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের ষষ্ঠ বছরের এই ঐতিহাসিক রাতটি তাঁর এর কাছে আসে। ২৭ রজব শবে মেরাজ হয় বলে অনেক হাদিসে উল্লেখিত আছে। কিন্তু শবে মেরাজের রোজা কয়টি এটা নিয়ে সঠিক কোন মতবাদ পাওয়া যায়নি।
শবে মেরাজের রোজা কয়টি জেনে নেই ঃ
নবী করিম (সাঃ) তাঁর এক হাদীসে উল্লেখ করেছিলেন যে " রজব মাস হল আল্লাহ এর মাস, শাবান মাস হল নবীর মাস, রমজান মাস হল আল্লাহর উম্মতের মাস।"
আসলে শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে পালন করা উচিত এরকম কোন নির্দিষ্ট হাদিস নেই।কিন্তু আরো একটি হাদীসে উল্লেখিত আছে যে নবী কারীম (সাঃ) বলেছেন "কোন ব্যক্তি রজব মাস আসলো কিন্তু ক্ষেত চাষ করল না,শাবান মাস আসলো কিন্তু ক্ষেত নিড়ানী দিল না,আগাছা পরিষ্কার করল না,সে তার ফসল রমজান মাসে ঘরে তুলতে পারবে না "।তাহলে আমরা বুঝতে পারছি যে রজব মাস হল রমজানের জন্য প্রস্তুতি মাস।
যেহেতু এই মাস রমজানের জন্য প্রস্তুতি মাস। এইজন্য নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এই মাসে রোজার প্রস্তুতি শুরু করে দিতেন । খুব ঘনঘন রোজা রাখতেন এজন্য আসলে শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে তা নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি ।
শবে মেরাজের রোজা কয়টি এই মতবাদ নিয়ে অনেক হাদিসে উঠে এসেছে যে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজব মাসে ১০ টি রোজা রাখতেন । কিন্তু শবে মেরাজের রোজা কয়টি তা নিয়ে নির্দিষ্টতা নাই। কিন্তু রজব মাসের সোমবার ,বৃহসপতিবার বা শুক্রবারে রোজা রাখা সুন্নত আর রজব মাসের চান্দ্র মাস হিসেবে যদি হিসাব করা হয় তাহলে ১ তারিখে, ১০ তারিখে,১৩ তারিখে, ১৪ তারিখে,১৫ তারিখে,২০ তারিখে,২৯ তারিখে,৩০ তারিখে রোজা রাখা সুন্নত।
শবে মেরাজের নফল নামাজঃ
আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনেরা শবে মেরাজ উপলক্ষে ১০ বা ১২ রাকাত নফল নামাজ আদায় করে থাকেন। কিন্তু শবে মেরাজের নফল নামাজ সম্পর্কে তেমন কোন হাদিস নেই কিন্তু নফল ইবাদত করা যেহেতু সোয়াবের কাজ সেহেতু আমরা নফল নামাজ পড়তে পারি কিন্তু শবে মেরাজ কে উদ্দেশ্য করে কোন নফল নামাজ পড়া গ্রহণযোগ্য নয়। শবে মেরাজ কে উদ্দেশ্য করে আমরা যদি কোন নামাজ পড়ি সেটা আমাদের ধর্মে সংযোজন হয়ে গেল। ঠিক তেমন ভাবে শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা কত তারিখে সেটা নিয়েও উদ্বিগ্ন হওয়া যাবে না।
কারন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম বলেছেন" যে আমাদের ধর্মে কোন কিছু সংযুক্ত বা উদ্ভাবন করবে যা তার(শরীয়তের) অংশ নয় তা প্রত্যাখ্যাত হবে" [বাখারী ১/৩৭১]। হাদীস শরীফে উল্লিখিত আছে রজব মাস পুরোটা জুড়েই আমরা নফল ইবাদত বন্দেগী করতে পারব। আর শবে মেরাজ রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে পড়ছে সেহেতু আমাদের ইবাদাত বন্দেগী আমরা চালায় যাব।
শবে মেরাজের রোজা রাখা কি বেদাআতঃ
আমাদের নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই শবে মেরাজ কে উদ্দেশ্য করে রোজা রাখা বা নফল ইবাদত করেন নাই। অনেক হাদিসে রজব মাস উল্লেখ করে এবাদত বন্দেগীর কথা বলা হয়েছে কিন্তু শবে মেরাজ কে উল্লেখ করে কোন নির্দিষ্ট এবাদত বন্দেগীর কথা বলা হয় নাই। কারণ ইসলামিক মতাদর্শে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন রাতে মেরাজে গিয়েছিলেন এটা নিয়ে নির্দিষ্ট হাদিস নেই।
সুতরাং আমরা শবে মেরাজ কে উল্লেখ করে যদি রোজা রাখি বা ইবাদত করি সেটা বেদাআত হবে। যেহেতু অনেক বড় বড় আলেম শবে মেরাজের রোজা রাখা নিয়ে ভিন্নমত দেয় অর্থাৎ তাঁরা শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে এই নিয়ে কোন নির্দিষ্ট বার্তা দেন নাই। কারণ আলেমগণ অনেক বড় বড় হাদিস শরীফ পাঠ করে দেখেছেন যে শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে এই নিয়ে কোন নির্দিষ্টতা নেই।
রজব মাস এ রোজা রাখা যে বিশেষ ফজিলত পূর্ণ এই ধারণা বেদাআত। ফজিলত পূর্ণ মনে করে রোজা রাখা যাবে না কিন্তু নফল ইবাদত করলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হয় সেহেতু আমরা আল্লাহ তায়ালাকে খুশি রাখার জন্য এই মাস জুড়ে রোজা রাখতে পারি।
শবে মেরাজের রোজা কয়টি এটা নিয়ে ভিন্নমতঃ
সাধারণত সব চন্দ্র মাসের ১৪ বা ১৫ তারিখে রোজা রাখা বিশেষ ফজিলত পূর্ণ বা সোমবার, বৃহসপতিবার রোজা রাখা সুন্নত সেই হিসেবে আমরা রজব মাস এর ১৪ বা ১৫ তারিখে রোজা রাখতে পারি কিন্তু শবে মেরাজকে উপলক্ষে কোন রোজা রাখা যাবে না সুতরাং শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা শবে মেরাজের রোজা কত তারিখে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া যাবে না ।
শবে মেরাজের রোজা কয়টি এটা যদি পাঠকের মূল প্রশ্ন হয়ে থাকে তাহলে উত্তর হবে এমন যে রজব মাস জুড়ে দশটা রোজা রাখার কথা অনেক হাদীস শরীফে আছে। সুতরাং আমরা চন্দ্র মাসের ৩,১৪,১৫,২০ এই তারিখগুলোতে রোজা রাখতে পারি।
আল্লাহতালা কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ মাসের মধ্যে উল্লেখ করেছেন রজব ,শাবান, রমজান ,জিলকদ,জিলহাজ। রমজান মাসের রোজা যেমন ফরজ করেছেন। কিন্তু অন্যান্য ফজিলত পূর্ণ মাসগুলোতে রোজা করা নিয়ে তেমন কোনো সঠিক হাদিস পাওয়া যায় নি। আমরা নফল ইবাদত অবশ্যই করতেই পারি কিন্তু কোন মাসে কয়টা রোজা বা কোন কোন তারিখে রোজা এগুলো নিয়ে আমরা চিন্তিত হব না।
আরো পড়ুনঃ ২০২২ সালের কোরবানি ঈদ কত তারিখে বাংলাদেশ
আমরা শবে মেরাজের রোজা কয়টি বা কত তারিখে সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করছি আপনাদের যদি আরো কোন কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাবেন।
বিভিন্ন জায়গায় সুন্নত বলেছেন কিন্ত প্রমান দেননি হাদিসের।