OrdinaryITPostAd

২০+ নামাজের নিয়ম - পূর্ণাঙ্গ নামাজ পড়ার নিয়ম ছবিসহ

নামাজের নিয়ম সঠিকভাবে না জানা থাকার কারণে আমাদের অনেকেই নামাজ শুদ্ধ হয় না। এমনকি পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম মেনে নামাজ না পড়লে আমাদের নামাজ আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। হলে নামাজ পড়া না পড়া দুটোই সমান। তাই আজকে আপনাদের সকলের হেদায়েত এবং শুদ্ধতার জন্য নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ আমাদের পোস্টে উল্লেখ করা হবে। 


আজকের আমাদের পোস্টে আপনি পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম ও নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ আরো বিভিন্ন ধরনের নামাজ পড়ার যাবতীয় নিয়ম বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন।এমনকি কোন নামাজ কয় রাকাত এবং বিভিন্ন রাকাত নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয় তার সঠিক দিক-নির্দেশনা আমরা আজকে আপনাদেরকে দিব। তাই সঠিক নামাজের নিয়ম জানতে আমাদের পোস্ট পড়তে থাকুন।

নামাজের নিয়ম | পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম | মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ | ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম

নামাজ প্রতিটি মুসলিম নর নারীর উপর ফরজ। প্রতিদিন পাঁচবার নির্দিষ্ট সময়ে সালাত আদায় করার জন্য খুব কঠোর ভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি এই পাঁচ ওয়াক্ত সালাত সঠিক নিয়ম মেনে আদায় করতে হবে। নিয়ম সঠিক না হলে নামাজ শুদ্ধ হবে না। এজন্য নামাজের নিয়ম সঠিকভাবে মেনে নামাজ আদায় করা আমাদের একান্ত কর্তব্য।

এছাড়া মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম পুরুষদের তুলনায় বেশ কিছুটা আলাদা। আলাদা করার কারণ মেয়েদের শারীরিক গঠন এবং আকৃতি অনুযায়ী তাই সঠিক নিয়ম মত নামাজের নিয়ম ও পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম এবং ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম জানার জন্য আমাদের আজকের পোস্টটি আপনার জন্য একান্ত উপযোগী।

ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম হোক বা নফল নামাজ পড়ার নিয়ম, সব নামাজের সহীহ সুন্নাহ মেনে পড়তে হবে। এছাড়া সুন্নত এবং ওয়াজিব আরো দুই ধরনের নামাজ আছে যে সমস্ত নামাজের সঠিক হবে নিয়ম মেনে আদায় করতে হয়। চলুন প্রতিটি ওয়াক্তের প্রতিটি ফরজ, সুন্নত, নফল বা ওয়াজিব নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিন।

নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম ছবি সহ | ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | ২ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম | ৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম

আমাদের প্রাত্যহিক দিনে যে নামাজ পড়তে হয় তা আমাদের উপর ফরজ। আর সঠিক নিয়ম মেনে এই সমস্ত নামাজ আমাদের পড়া একান্ত জরুরি। চার রাকাত ফরজ এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্তর্গত দুটি অংশ। চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নিই-

৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ

চার রাকাত ফরজ নামাজে মূলত চার বারে শেষ করতে হয়। এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে-

প্রথম রাকাতঃ ৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।


  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"


দ্বিতীয় রাকাতঃ ৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
  • এরপর সেজদা শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এইভাবে প্রথম রাকাতের কার্যক্রম শেষ হবে এবার দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতে আবার হাত বাঁধা অবস্থাতেই পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এরপর একইভাবে রুকু এবং সিজদা করতে হবে।

  • সিজদা শেষ করে এবার দাড়িয়ে না যে সরাসরি বসতে হবে। বসা অবস্থায় তাশাহুদ পাঠ করতে হবে। তাশাহুদ টি হলো-

    اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

    বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

    বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

    এর মাধ্যমে আপনি দ্বিতীয় রাকাতের কার্যক্রম শেষ করবেন।


তৃতীয় রাকাতঃ ৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
  • তাশাহুদ শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে হাত পুনরায় বাধতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পড়তে হবে। সূরা ফাতিহা শেষ করে সরাসরি রুকু এবং সিজদা করতে হবে। এবং সিজদা শেষ করে আপনাকে আবার সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। পুনরায় একইভাবে বিসমিল্লাহ এবং সূরা ফাতিহা পড়ে রুকু এবং সেজদা শেষ করে এবার বসতে হবে।

    এর মাধ্যমে আপনি সালাতের শেষ রাকাতে পৌঁছে গেলেন।
চতুর্থ ও শেষ রাকাতঃ ৪ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ
  • এবার আপনাকে বসা অবস্থা তেই পরপর তিনটি দোয়া পড়তে হবে। সর্বপ্রথম তাশাহুদ, দ্বিতীয়ত দরুদ শরীফ এবং সর্বশেষে দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। দোয়াটি পড়া শেষ করে আপনাকে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

    4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | দরুদ শরীফ :

    اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ



    বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

    বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

    4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | দোয়া মাসুরা :

    اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


    বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা । ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি । মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা । ওয়ার হামনি । ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম ।"

    বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।"



উপরোক্ত দলসমূহের পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে চার রাকাত ফরজ নামাজ শেষ হবে। 4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম অনুযায়ী আমরা নামাজ আদায় করব।

সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম | নফল নামাজ পড়ার নিয়ম | ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম | নফল নামাজ পড়ার নিয়ম | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

সুন্নত নামাজ হলো সেই সমস্ত নামাজের নামাজ আমাদের নবীজি সাঃ আদায় করতেন। তাঁর অনুসারে এই নামাজ গুলো কে সুন্নত নামাজ বলা হয়। সুন্নত নামাজ এবং ফরজ নামাজ উভয়ই চার রাকাত অথবা দুই রাকাত হতে পারে। সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম, ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম এর অনুরূপ শুধুমাত্র তৃতীয় রাকাতে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। চলুন সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম দেখে নিই-

প্রথম রাকাতঃ সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে চার রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম
  • এরপর সেজদা শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এইভাবে প্রথম রাকাতের কার্যক্রম শেষ হবে এবার দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতে আবার হাত বাঁধা অবস্থাতেই পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এরপর একইভাবে রুকু এবং সিজদা করতে হবে।

  • সিজদা শেষ করে এবার দাড়িয়ে না যে সরাসরি বসতে হবে। বসা অবস্থায় তাশাহুদ পাঠ করতে হবে। তাশাহুদ টি হলো-

    اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

    বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

    বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

    এর মাধ্যমে আপনি দ্বিতীয় রাকাতের কার্যক্রম শেষ করবেন।
তৃতীয় রাকাতঃ সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম
  • তাশাহুদ শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে হাত পুনরায় বাধতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পড়তে হবে সূরা ফাতিহার শেষ হলে আপনাকে এই সূরার সাথে মিলিয়ে অন্য একটি সূরা পাঠ করতে হবে। এরপর রুকু এবং সিজদা করতে হবে।

    সিজদা শেষ করে আপনাকে আবার সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। পুনরায় একইভাবে বিসমিল্লাহ এবং সূরা ফাতিহা পড়ে এর সাথে অপর একটি সূরা মিলিয়ে পড়ে তারপর রুকু এবং সেজদা শেষ করে এবার বসতে হবে।

    এর মাধ্যমে আপনি সালাতের শেষ রাকাতে পৌঁছে গেলেন।
চতুর্থ ও শেষ রাকাতঃ সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম
  • এবার আপনাকে বসা অবস্থা তেই পরপর তিনটি দোয়া পড়তে হবে। সর্বপ্রথম তাশাহুদ, দ্বিতীয়ত দরুদ শরীফ এবং সর্বশেষে দোয়া মাসুরা পড়তে হবে। দোয়ার তিনটি পড়া শেষ করে আপনাকে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

    সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম | দরুদ শরীফ :

    اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

    বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

    বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

    সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম | দোয়া মাসুরা :

    اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


    বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা । ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি । মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা । ওয়ার হামনি । ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম ।"

    বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।"
উপরোক্ত নিয়ম মেনে আপনি সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম অনুসারে সুন্নত নামাজ পড়তে পারেন।

৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম | নফল নামাজ পড়ার নিয়ম | নামাজের নিয়ম | পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম

আমরা সবাই জানি এশার নামাজে সর্বশেষে ওয়াজীব তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়তে হয়। এই নামাজ টিতে একটি বিশেষ দোয়া রয়েছে যাকে দোয়া কুনুত বলা হয়। এই দোয়াটি এই তিন রাকাত নামাজের অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ দোআ। চলুন জেনে নেই তিন রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম-

প্রথম রাকাতঃ ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে তিন রাকাত বিতরের নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

সিজদা শেষ করে আপনাকে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ- র সহিত সূরা ফাতিহা এবং অপর একটি সূরা পাঠ করে পুনরায় রুকু সিজদা করে বসতে হবে। এবং সরাসরি তাশাহুদ পাঠ করতে হবে।

তাশাহুদ টি হলো-

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

এটি শেষ করে পুনরায় দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং এখান থেকে তৃতীয় রাকাতের শুরু।

তৃতীয় রাকাতঃ ৩ রাকাত বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

তৃতীয় রাকাতের সর্বপ্রথম বিসমিল্লাহ -র সহিত সূরা ফাতিহা এবং পুনরায় অন্য একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে এবং আর আকবার তাকবীর ধ্বনি দিয়ে হাত বাধতে হবে। এই অবস্থায় আপনি দোয়া দোয়া কুনূত পড়বেন।

দোয়া কুনুত টি হলঃ

اَللَّهُمَّ اِنَّا نَسْتَعِيْنُكَ وَنَسْتَغْفِرُكَ وَنُؤْمِنُ بِكَ وَنَتَوَكَّلُ عَلَيْكَ وَنُثْنِىْ عَلَيْكَ الْخَيْرَ وَنَشْكُرُكَ وَلاَ نَكْفُرُكَ وَنَخْلَعُ وَنَتْرُكُ مَنْ يَّفْجُرُكَ-اَللَّهُمَّ اِيَّاكَ نَعْبُدُ وَلَكَ نُصَلِّىْ وَنَسْجُدُ وَاِلَيْكَ نَسْعَى وَنَحْفِدُ وَنَرْجُوْ رَحْمَتَكَ وَنَخْشَى عَذَابَكَ اِنَّ عَذَابَكَ بِالْكُفَّارِ مُلْحِقٌ

বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈনুকা, ওয়া নাস্তাগফিরুকা, ওয়া নু'মিনু বিকা, ওয়া নাতাওয়াক্কালু 'আলাইকা, ওয়া নুছনী 'আলাইকাল খাইর, ওয়া নাশকুরুকা, ওয়ালা নাকফুরুকা, ওয়া নাখলাউ, ওয়া নাতরুকু মাঁই ইয়াফজুরুকা। আল্লাহুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু ওয়া লাকানুসল্লী, ওয়া নাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাস'আ, ওয়া নাহফিদু, ওয়া নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা আযাবাকা, ইন্না আযাবাকা বিল কুফ্ফারি মুলহিক্ক।"

বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ আমরা তোমারই সাহায্য চাই, তোমারই নিকট ক্ষমা চাই, তোমারই প্রতি ঈমান রাখি, তোমারই ওপর ভরসা করি এবং সকল, মঙ্গল তোমারই দিকে ন্যস্ত করি। আমরা তোমার কৃতজ্ঞ হয়ে চলি অকৃতজ্ঞ হই না, এবং যারা তোমার অবাধ্য হয় তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করে তাদেরকে পরিত্যাগ করি। হে আল্লাহ আমরা তোমারই দাসত্ব করি তোমারই জন্য নামায পড়ি এবং তোমাকেই সিজদাহ করি, আমরা তোমারই দিকে দৌড়াই ও এগিয়ে চলি। আমরা তোমারই রহমত, আশা করি এবং তোমার আযাবকে ভয় করি আর তোমার আযাবতো কাফেরদের জন্যই র্নিধারিত।"

দোয়াটি শেষ করে আপনি আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যাবেন। এরপর সিজদা এবং এই রাকাতে বসে পরপর তাশাহুদ, দরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

নফল নামাজ পড়ার নিয়ম | নামাজের নিয়মঃ

নফল নামাজ মূলত ফজিলত এবং অধিক সোয়াবের আশায় পড়া হয়। এটি মূলত একটি নামাজ। স্বাভাবিক দুই রাকাত নামাজ পড়ার মতোই এই নামাজ পড়তে হয়। নফল নামাজ পড়ার নিয়ম নিচে দেওয়া হল-

প্রথম রাকাতঃ নফল নামাজ পড়ার নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ নফল নামাজ পড়ার নিয়ম

সিজদা শেষ করে আপনাকে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ- র সহিত সূরা ফাতিহা এবং অপর একটি সূরা পাঠ করে পুনরায় রুকু সিজদা করে বসতে হবে। এবং সরাসরি তাশাহুদ, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

তাশাহুদ টি হলো-

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

দরুদ শরীফ :

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

দোয়া মাসুরা :

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা । ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি । মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা । ওয়ার হামনি । ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম ।"

বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।"

ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | ২ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম | মহিলাদের নামাজ শিক্ষা বই | নামাজের নিয়ম | নামাজের নিয়ম

দিনের শুরু হয় ফজরের নামাজ দিয়ে যেটি সূর্যোদয়ের পূর্বে পড়তে হয়। ফজরের নামাজ মোট চার রাকাত। প্রথমে দুই রাকাত সুন্নত এবং পরবর্তীতে দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার মাধ্যমে ফজরের নামাজ সম্পন্ন হয়। ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম এবং দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম একই। চলুন জেনে নিই ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম-

ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | ২ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়মঃ

প্রথম রাকাতঃ ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে দুই রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ ফজরের ২ রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম

সিজদা শেষ করে আপনাকে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ- র সহিত সূরা ফাতিহা এবং অপর একটি সূরা পাঠ করে পুনরায় রুকু সিজদা করে বসতে হবে। এবং সরাসরি তাশাহুদ, দরুদ শরীফ ও দোয়া মাসুরা পড়ে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

তাশাহুদ টি হলো-

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

দরুদ শরীফ :

اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

দোয়া মাসুরা :

اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা । ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি । মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা । ওয়ার হামনি । ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম ।"

বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।"

জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম | নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ | পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম | মহিলাদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়

সূর্য মাথার উপর অবস্থান করলে সেই সময়টাকে আমরা মধ্যাহ্ন বলে থাকি। এই সময় আমাদের যে নামাজ পড়তে হয় সেটি জোহরের নামাজ। এই নামাজ , নফল নামাজ সহ 12 (বারো) রাকাত হয়ে থাকে। প্রথমে চার রাকাত সুন্নত, তারপর চার রাকাত ফরজ, তারপর দুই রাকাত সুন্নত এবং সর্বশেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার মাধ্যমেই নামাজ সম্পন্ন হয়।

উপরে বর্ণিত চার রাকাত ফরজ এবং চার রাকাত সুন্নত দুই রাকাত নামাজ পড়ার নিয়ম অনুযায়ী এই নামাজ পড়তে হয়। পার্থক্য শুধু হয় নিয়ত বাধায়। আপনি মনে মনে যখন নিহত করবেন তখন ফরজ অথবা সুন্নত ভেবে নিয়ত করবেন। তাহলে আপনার নামাজ একই নিয়মে হয়ে যাবে। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন নিয়তের উপরই কিন্তু সমস্ত কাজের ফলাফল নির্ভর করে তাই নিয়ত সঠিকভাবে অবশ্যই মনে মনে ভাবতে হবে।

আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম | নামাজ পড়ার নিয়ম ছবি সহ | মহিলাদের নামাজ শিক্ষা বই | নামাজের নিয়ম | সুন্নত নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম

আসরের নামাজ শুধু মাত্র চার রাকাত ফরজ পড়লেই যথেষ্ট। তবে এই নামাজের চার রাকাত সুন্নত নামাজ আছে কিন্তু সেটি আবশ্যক নয় পড়া তাই এটিকে বাদ দিয়েও মোট চার রাকাত ফরজ নামাজ দিয়ে আসরের নামাজ শেষ করা যায়। নিচে আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম দেওয়া হল-

আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়মঃ

4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়মঃ আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

চার রাকাত ফরজ নামাজে মূলত চার বারে শেষ করতে হয়। এর জন্য আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে-

প্রথম রাকাতঃ আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
  • এরপর সেজদা শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। এইভাবে প্রথম রাকাতের কার্যক্রম শেষ হবে এবার দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতে আবার হাত বাঁধা অবস্থাতেই পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এরপর একইভাবে রুকু এবং সিজদা করতে হবে।

  • সিজদা শেষ করে এবার দাড়িয়ে না যে সরাসরি বসতে হবে। বসা অবস্থায় তাশাহুদ পাঠ করতে হবে। তাশাহুদ টি হলো-

    اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ O وَرَسُولُهُ

    বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

    বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

    এর মাধ্যমে আপনি দ্বিতীয় রাকাতের কার্যক্রম শেষ করবেন।
তৃতীয় রাকাতঃ আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
  • তাশাহুদ শেষ করে সরাসরি দাঁড়িয়ে হাত পুনরায় বাধতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ বলে শুধুমাত্র সূরা ফাতিহা পড়তে হবে। সূরা ফাতিহা শেষ করে সরাসরি রুকু এবং সিজদা করতে হবে। এবং সিজদা শেষ করে আপনাকে আবার সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে। পুনরায় একইভাবে বিসমিল্লাহ এবং সূরা ফাতিহা পড়ে রুকু এবং সেজদা শেষ করে এবার বসতে হবে।

    এর মাধ্যমে আপনি সালাতের শেষ রাকাতে পৌঁছে গেলেন।
চতুর্থ ও শেষ রাকাতঃ আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম
  • এবার আপনাকে বসা অবস্থা তেই পরপর তিনটি দোয়া পড়তে হবে। সর্বপ্রথম তাশাহুদ, দ্বিতীয়ত দরুদ শরীফ এবং সর্বশেষে দোয়া মাসুরা পড়তে হবে।

    4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | দরুদ শরীফ :

    اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

    বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

    বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

    4 রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | দোয়া মাসুরা :

    اللّٰهُمَّ إِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ ظُلْمْاً كَثِيْراً، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِيْ مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ


    বাংলা উচ্চারণঃ "আল্লাহুম্মা ইন্নি যলামতু নাফসি যুলমান কাসিরা । ওয়ালা ইয়াগ ফিরুয যুনুবা ইল্লা আনতা ফাগফির লি । মাগফিরাতাম মিন ইনদিকা । ওয়ার হামনি । ইন্নাকা আনতাল গাফুরুর রাহিম ।"

    বাংলা অর্থঃ "হে আল্লাহ ! আমি আমার নিজ আত্মার উপর বড়ই অত্যাচার করেছি, গুনাহ মাফকারী একমাত্র আপনিই । অতএব আপনি আপনা হতেই আমাকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন । নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল দয়ালু ।"

    দোয়া গুলি শেষ হলে আপনাকে ডানে বামে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।
এভাবে আপনি আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে পারবেন। আসরের চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায়ের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ আদায় করলে অবশ্যই নামাজ সঠিক এবং আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে।

মাগরিবের নামাজ ৩ রাকাত কেন | মাগরিবের নামাজ পড়ার নিয়ম | একা নামাজ পড়ার নিয়ম | ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম

মাগরিবের নামাজ মোট সাত রাকাত (নফল নামাজ সহ)। অন্যথায় এই নামাজ পাঁচ রাকাত পড়লে যথেষ্ট। প্রথমে তিন রাকাত ফরজ এবং পরে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়েই নামাজ শেষ করা যা... মাগরিবের নামাজ তিন রাকাত পড়তে হয়। যে মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম দেওয়া হল-

প্রথম রাকাতঃ মাগরিবের নামাজ পড়ার নিয়ম
  • সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় এবং পাক-পবিত্র জায়গায় দাঁড়িয়ে তিন রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত মনে মনে করতে হবে। আবশ্যক নয় মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়া।

  • এরপরে তাকবীরে তাহরীমা বাধার জন্য আল্লাহু আকবার বলে হাত কান বরাবর উঠিয়ে ছেলেরা পেটের উপর এবং মেয়েরা বুকের উপর হাত বাঁধবে।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • থানা শেষ করে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়ে সূরা ফাতিহা এবং তার সাথে অন্য যেকোনো একটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এটা শেষ করে আল্লাহু আকবার বলে রুকুতে যেতে হবে।

  • রুকুতে যেয়ে নিম্নোক্ত তাসবিহ টি সর্বনিম্ন তিন বার পড়তে হবে-

    سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيْمِ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহা-না রব্বিয়াল আ`যিম।" (তিরমিজি, আবু দাউদ)

    বাংলা অর্থ : “আমার প্রভু পবিত্র ও মহামহিম।


  • এরপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে জোরে তাকবীর দিয়ে বলতে হবে "সামি আল্লাহ হুলিমান হামিদা" এবং সাথে সাথেই নিম্নস্বরে বলতে হবে " রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ"। এরপর সরাসরি সেজদায় চলে যেতে হবে।

  • সিজদায় যে নিম্নোক্ত তাজবীর সর্বনিম্ন তিনবার বলতে হবে-

    O سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

    বাংলা উচ্চারণ : সুবহা-না রব্বিয়াল আ‘লা।

    বাংলা অর্থ : “আমার রব্বের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে।”

    সিজদার সংখ্যা মোট দুই টি। দুই সিজদার মাঝখানে বসে স্বল্প সময়ে নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়তে হয়-

    اَللّهُمَّ اغْفِرْلِيْ وَارْحَمْنِي وَاهْدِنِيْ وَعَافِنِيْ وَارْزُقْنِيْ

    বাংলা উচ্চারণ : "আল্লাহুম্মাগফিরলি, ওয়ারহামনি, ওয়াহদিনি, ওয়া আফিনি, ওয়ারযুকনি।" (মুসলিম, মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করুন, আমাকে রহম করুন, আমাকে হেদায়েত দান করুন, আমাকে শান্তি দান করুন এবং আমাকে রিজিক দান করুন।"

দ্বিতীয় রাকাতঃ মাগরিবের নামাজ পড়ার নিয়ম

সিজদা শেষ করে আপনাকে সরাসরি দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং পুনরায় বিসমিল্লাহ- র সহিত সূরা ফাতিহা এবং অপর একটি সূরা পাঠ করে পুনরায় রুকু সিজদা করে বসতে হবে। এবং সরাসরি তাশাহুদ পাঠ করতে হবে।

তাশাহুদ টি হলো-

اَلتَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِيْنَ، أَشْهَدُ أَن لَّاإِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ

বাংলা উচ্চারণ : "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস্‌ সালাওয়াতু, ওয়াত্‌ তাইয়িবাতু। আস্‌সালামু ‘আলাইকা আইয়্যুহান নাবীয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। আস্‌সালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস্‌ সালিহীন। আশহাদু আল-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশ্‌হাদু আননা মুহাম্মাদান আদুহু ওয়া রাসুলুহু।"

বাংলা অর্থঃ "কি মৌখিক,কি দৈহিক,কি আর্থিক সকল ইবাদাত এক মাত্র আল্লাহ’র জন্য/সমস্ত সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্যে।সমস্ত শান্তি কল্যাণ ও পবিত্রার মালিক আল্লাহ। হে নবী, আপনার উপর আল্লাহ’র শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)আসসালামু আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সোয়ালেহিন(আমাদের উপর এবং সৎকর্মশীল বান্দাদের উপর আল্লাহ’র শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোন ইলাহ নেই,আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ(সাঃ) আল্লাহ’র বান্দা ও রাসুল।"

এটি শেষ করে পুনরায় দাঁড়িয়ে যেতে হবে এবং এখান থেকে তৃতীয় রাকাতের শুরু।

তৃতীয় রাকাতঃ মাগরিবের নামাজ পড়ার নিয়ম
 
তৃতীয় রাকাতের সর্বপ্রথম বিসমিল্লাহ-র সহিত সূরা ফাতিহা পড়তে হবে এরপর সরাসরি রুকুতে চলে যেতে হবে। এরপর সিজদাহ এবং শেষ বৈঠকের মতো বসে তাশাহুদ, দরুদ শরীফ এবং দোয়া মাসূর পড়ে সালাম ফিরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।

এশার নামাজ পড়ার নিয়ম | নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম ছবি সহ | ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম | ২ রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ম

একদিন অর্থাৎ 24 ঘন্টায় আমাদের সর্বশেষ যে নামাজ কি পড়তে হয় সেটি হল এশার নামাজ বা রাত্রিকালীন সময় নামাজ। এটি পঞ্চম নামাজ হিসেবে পরিচিত। এই নামাজে চার রাকাত ফরজ, দুই রাকাত সুন্নত এবং তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়া আবশ্যক। তবে আপনি চাইলে সুন্নত নামাজের পরে 2 রাকাত নফল নামাজ পড়তে পারেন।

চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম এবং দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম ও তিন রাকাত বেতরের নামাজ উপরে বর্ণিত আছে। আপনি উপরে উল্লেখিত নিয়ম বা পদ্ধতি অনুসরণ করে সঠিকভাবে এশার নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম মেনে ফরজ, সুন্নত ও ওয়াজিব নামাজ পড়তে পারবেন।

নামাজের নিয়ম | পূর্ণাঙ্গ নামাজের নিয়ম | নফল নামাজ পড়ার নিয়ম | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদের নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ নামাজ। মহান রাব্বুল আলামিন রাতের শেষ প্রহরে সপ্তম আসমানে নেমে আসেন। বলা হয়ে থাকে মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর বান্দাদের কাছে এই সময়টায় সবচেয়ে বেশি নিকটবর্তী হন। তাই এই সময়ে তাহাহহুদের নামাজ পড়াটা অতি উত্তম একটি সময়। এমনকি এই নামাজের ফজিলত অগণিত। আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার ডাক শোনার জন্য এই সময় তাঁর রহমতের দরজা খুলে দেন।

এই নামাজ দুই রাকাত করে সর্বমোট 12 রাকাত পর্যন্ত পড়া যায়। তাহাজ্বতের নামাজ পড়ার অন্যতম শর্ত হচ্ছে এই নামাজ ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে অর্থাৎ আপনাকে রাত্রিবেলায় ঘুমিয়ে শেষ রাতে উঠে পড়াটা সর্বোত্তম। তবে বলে রাখা ভাল আপনি যদি তাহাজ্জুতের নামাজ পড়েন তবে আপনার নিয়তে এটিকে সুন্নত হিসেবে ধরতে হবে। কিন্তু যদি আপনি নামাজ মাঝেমধ্যে পড়েন আবার ছেড়ে দেন, এরপর আবার পড়েন তবে আপনার জন্য এই নামাজ নফল ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে সেক্ষেত্রে আপনার নিয়ত করতে হবে নফল ইবাদতের।

উপরে বর্ণিত দুই রাকাত সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ম অনুযায়ী আপনি এই নামাজ পড়তে পারবেন। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার নিয়ম অন্য সব নামাজের মতই একই রকম।

মহিলাদের নামাজ শিক্ষা বই | নামাজের নিয়ম | মহিলাদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় | ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ম

পুরুষ এবং নারীর শারীরিক গঠনে বেশ কিছু পার্থক্য থাকায় নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে বেশকিছু শরীয়ত সম্মত পার্থক্য রয়েছে। আপনাদের সুবিধার জন্য এসমস্ত পার্থক্য নিয়ে আলোচনা করব চলুন দেখে নিই মহিলাদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় এবং মহিলাদের নামাজ পড়ার নিয়ম কানুন যাবতীয় বিস্তারিত-

  • নামাজ পড়ার জন্য প্রথমে মহিলাদের সতর সম্পূর্ণরূপে ঢাকতে হবে। কোন অংশ বের না হয়ে থাকে। এরপর নামাজের প্রথম অংশ অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমা বাধার সময় তাদের হাত কতদূর উঠাতে হবে এবং সেই হাত কোথায় বাঁধবে এ সম্পর্কে নবীজির হাদিস এ বর্ণনা আছে- 

    "ওয়ায়েল ইবনে হুজুর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট এলাম, তিনি আমাকে বললেন : হে ওয়ায়েল ইবনে হুজুর! যখন তুমি নামাজ পড়বে তখন তুমি তোমার হাত কান পর্যন্ত ওঠাবে আর মহিলারা তাদের হাত বুকের ওপর বাঁধবে।"

  • পরবর্তীতে রুকুর সময় মহিলাগণ অল্প পরিমাণ ঝুঁকবেন। পুরুষগণ তাদের অপেক্ষা অধিক বেশি ঝুঁকবেন।

  • সেজদারত অবস্থায় মহিলাদের সিজদা হবে অপেক্ষাকৃত ছোট অর্থাৎ সিজদা দেওয়ার সময় মহিলাদের শরীরের ভাজ বেশি হবে। এ সম্পর্কে একটি হাদীসে বর্ণিত আছে-

    প্রসিদ্ধ তাবেঈ ইয়াযীদ ইবনে আবী হাবীব বলেন, একবার নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নামাজরত দুই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদেরকে (সংশোধনের উদ্দেশ্যে) বললেন, যখন সিজদা করবে তখন শরীর জমিনের সাথে মিশিয়ে দেবে। কেননা মহিলারা এ ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো নয়।' (কিতাবুল মারাসীল ইমাম আবু দাউদ হা. নং ৮০)

    অপর একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, হজরত মুজাহিদ ইবনে জাবর (রহ.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষদের জন্য মহিলাদের মতো ঊরুর সাথে পেট লাগিয়ে সিজদা করাকে অপছন্দ করতেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা : ১/৩০৩)

  • মহিলাগণ নামাজে বসার ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান হবে একপাশে। এক্ষেত্রে ডান দিকে পা দিয়ে বসাকে ওলামা একরামগণ বেশি প্রাধান্য দেন। তবে ইসলামিক নিয়ম কারোর উপর জুলুম করে না। নামাজকে নিজের সুবিধার জন্য অনেক ছাড় দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কারোর যদি ডান দিকে পা দিয়ে পড়তে সমস্যা হয় তবে সে চাইলে বাম দিকে পা দিয়ে বসতে পারে।


উপরোক্ত নিয়মগুলো পুরুষের নামাজের থেকে মহিলাদের নামাজের পার্থক্য নির্দেশ করে। এই নিয়ম মোতাবেক নামাজ আদায় করলে নামাজ পড়ার নিয়ম শুদ্ধ হবে

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম | জানাজার নামাজের নিয়ম | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম | ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম | নফল নামাজ পড়ার নিয়ম

আমাদের পোস্টের এই অংশে আপনি আরো বেশকিছু নামাজের সম্পর্কে জানতে পারবেন যে নামাজ গুলো আমাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় নামাজ হিসেবে বিবেচিত। যেমন- ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম অথবা জানাজার নামাজ পড়ার নিয়ম ইত্যাদি। এসমস্ত নামাজ আমরা পড়ে থাকি। তাই চলুন এসমস্ত নামাজ পড়ার নিয়ম সমূহ জেনে নিই।

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়মঃ

ঈদের নামাজ একটি ওয়াজিব নামাজ। এই নামাজ জামাতে পড়ার জন্য ইসলামের নির্দেশ দেওয়া আছে। জামাত ছাড়া এই নামাজ হবে না। ছয় তাকবীরের সাথে এই নামাজ পড়তে হয়। এই নামাজ মোট দুই রাকাত।


জানাজার নামাজ পড়ার নিয়মঃ

ইসলামিক ধর্ম মতে মৃত ব্যক্তির জন্য যে নামাজ পড়া হয় তাকে জানাজার নামাজ বলা হয়ে থাকে। একজন ইমামের নেতৃত্বে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করতে হয়। এই নামাজে মোট চারটি তাকবীর রয়েছে তবে কোনো রুকু-সেজদা নেই। অর্থাৎ এই নামায টি সম্পূর্ণটাই দাঁড়িয়ে থেকে আদায় করতে হয়। নিচে বিস্তারিত জানাজার নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানানো হলোঃ

  • জানাজার নামাজ আদায়ের জন্য সর্বপ্রথম পাক পবিত্র অবস্থায় ইমামের পেছনে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়াতে হবে। মনে মনে এই নিয়ত করলেও চলবে। জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ সেই মোতাবেক নিয়ত করলেও হবে।

    এরপর আল্লাহু আকবার বলে কাঁধ অথবা কানের লতি পর্যন্ত হাত উত্তোলন করে হাত বাঁধতে হবে অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমা সম্পন্ন করতে হবে। তবে এরপরের তাকবীর সমূহে হাত তোলার কোন প্রয়োজন নেই।

  • এরপর ছানা পড়তে হবে। অবশ্য অনেকে এই সময়ে সূরা ফাতিহার পরে অন্য সূরা মিলিয়ে পড়ার কথাও উল্লেখ করেছেন।

    সানা হল- 

    O سُبْحَانَكَ اَللَّهُمَّ وَ بِحَمْدِكَ وَ تَبَارَكَ اسْمُكَ وَ تَعَالِىْ جَدُّكَ وَ لَا اِلَهَ غَيْرُكَ

    বাংলা উচ্চারণ : "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, ওয়া তাবারাকাসমুকা, ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।" (তিরমিজি, আবু দাউদ মিশকাত)

    বাংলা অর্থ : "হে আল্লাহ্! আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। তুমি প্রশংসাময়, তোমার নাম বরকতময়, তোমার মর্যাদা অতি উচ্চে, আর তুমি ব্যতীত সত্যিকার কোনো মাবুদ নেই।"

  • এরপর আবার আল্লাহু আকবার বলে দ্বিতীয় তাকবীর সম্পন্ন করা হবে এবং এই তাকবীরের পরবর্তীতে দরুদে ইব্রাহিম অর্থাৎ নামাজে আমরা যে দূরুদ শরীফ পড়ে থাকিস এই দোয়াটি পড়তে হবে।

    দরুদ শরীফ :

    اَللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَ اهِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ ~ اَللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ وَعَلَى اَلِ سَیِّدَنَا اِبْرَا هِيْمَ اِنَّكَ حَمِيْدٌمَّجِيْدٌ

    বাংলা উচ্চারনঃ "আল্লাহুম্মা সাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারাকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামীদুম মাজিদ।"

    বাংলা অনুবাদঃ "হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর ঐরূপ রহমত/প্রশংসা অবতীর্ণ কর যেইরূপ রহমত/প্রশংসা হযরত ইব্রাহিম এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর অবতীর্ণ করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম। হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাললাম) এবং তাঁহার বংশধরগণের উপর সেইরূপ অনুগ্রহ কর যে রূপ অনুগ্রহ ইব্রাহীম এবং তাঁহার বংশরগণের উপর করিয়াছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসা ভাজন এবং মহামহিম।"

  • এরপর তৃতীয় তাকবীর ইমাম সাহেব বললে এই অংশে সূরা ইখলাসের সঙ্গে নিম্ন বর্ণিত দোয়া সমূহ পড়তে হবে। এগুলো মূলত মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া করা। এই দোয়াটি মূলত নির্দিষ্টভাবে জানাযার দোয়া হিসেবেই পরিচিত।

    জানাজার দোয়া:

    لَّهُمَّ اغْفِرْلحَيِّنَاوَمَيِّتِنَا وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا وَصَغِيْرِنَا وَكَبِيْرِنَا وَذَكَرِنَا وَاُنْثَا نَا اَللَّهُمَّ مَنْ اَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَاَحْيِهِ عَلَى الاِسْلاَمِ وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الاْيمَانِ بِرَحْمَتِكَ يَا ارْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ

    বাংলা উচ্চারণ: "আল্লাহুম্মাগফিরলি হাইয়্যেনা ওয়া মাইয়্যিতিনা ওয়া শাহিদিনা ওয়া গায়িইবিনা ও ছাগীরিনা ও কাবীরিনা ও যাকারিনা ও উনছানা। আল্লাহুম্মা মান আহইয়াইতাহু মিন্না ফাআহয়িহি আলাল ইসলামী ওয়া মান তাওয়াফ ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ ফাহু আলাল ঈমান বেরাহমাতিকা ইয়া আর হামার রাহীমিন।"

    তবে মৃত ব্যক্তি নাবালক ছেলে হলে নিম্নোক্ত জানাযার দোয়াটি পড়তে হবে-

    اَللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرْطًا وْاَجْعَلْهُ لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًا وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا وَمُشَفَّعًا

    বাংলা উচ্চারন: "আল্লাহুম্মাজ আল হুলানা ফারতাও ওয়াজ আল হুলানা আজরাও ওয়া যুখরাঁও ওয়াজ আলহুলানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ্ফায়ান।"

    নাবালিকা মেয়ের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত জানাযার দোয়াটি পড়তে হবে-

    اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا لَنَا فَرْطًا وَاجْعَلْهَا لَنَا اَجْرًا وَذُخْرًاوَاجْعَلْهَا لَنَا شَافِعَةً وَمُشَفَّعَة

    বাংলা উচ্চারন: "আল্লাহুম্মাজ আলহা লানা ফারতাও ওয়াজ আলহা লানা আজরাও ওয়া যুখরাও ওয়াজ আলহা লানা শাফিয়াও ওয়া মুশাফ ফায়ান।"

  • এরপর চতুর্থ তাকবীর বলা হলে যথাক্রমে ডানদিকে এবং বাম দিকে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে জানাজার নামাজ সম্পন্ন করতে হবে।
এইভাবে জানাজার নামাজের নিয়ম অনুযায়ী নামাজ সম্পন্ন করা যাবে।

ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়মঃ

ইশরাকের নামাজ একটি নফল ইবাদত। ইশরাকের নামাজ পড়ার জন্য আলাদা কোনো নিয়ম বা নিয়ত নেই। যথারীতি নফল নামাজের মতই এই নামাজ দুই রাকাত করে আদায় করা যায়। তবে কত রাকাত নামাজ পড়তে হবে এই নিয়ে বেশকিছু বিরোধ দেখা গেল দুই রাকাত করে চার রাকাত পড়া উত্তম।

নামাজ একটি অতি উত্তম ইবাদত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তৌফিক দান করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url