প্রযুক্তির ১০টি সেরা আবিষ্কার যা ভবিষ্যতকে শাসন করবে
জেনে
নিন কোন ১০টি সেরা প্রযুক্তির আবিষ্কার (টেকনোলজি) আগামীর ভবিষ্যতকে শাসন করবে।
প্রযুক্তি হলো বিভিন্ন যন্ত্র ও প্রাকৃতিক উপাদান প্রয়োগের ব্যাবহারিক
জ্ঞান। বিজ্ঞানের নানান উৎকর্ষ সাধনের ফলে এই প্রযুক্তি দিন দিন হচ্ছে আরো
উন্নত।
প্রযুক্তি যেমন পালটে দিয়েছে মানুষের জীবন ঠিক তেমন ভাবে দিন দিন
পালটে দিচ্ছে এই পৃথিবীকে। বিজ্ঞানের এই নতুন নতুন প্রযুক্তি গুলো পৃথিবীকে
নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। শিখিয়েছে স্বপ্ন দেখতে।আর তার মাধ্যমেই এগিয়ে
যাচ্ছে আমাদের সভ্যতা।আজ ২০১৯ সালের এমন ই ১০ টি অসাধারণ প্রযুক্তি নিয়ে
আলোচোনা করবো যা পরিবর্তন করে দিয়েছে সকল অতীত চিন্তা ধারা।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার টেকনোলজি
কুয়ান্টাম
কম্পিউটার হলো পৃথিবীর সব চেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার। ১০টি সেরা প্রযুক্তি
(টেকনোলজি)র তালিকায় প্রথমেই আছে কোয়ান্টাম কম্পিউটার টেকনোলজি। ১৯৮০ সাল
নাগাদ যেটি শুধু কল্পনা ছিল তা ২০১৯ এ এসে বাস্তবে রূপ নিয়েছে। ২০০১ সালে
কুয়ান্টাম কম্পিউটার প্রথম তৈরি করা হয় কিন্তু সেটির ক্ষমতা ছিলো অনেক কম
কিন্তু ২০১৯ সালে তৈরিকৃত কোয়ান্টাম কম্পিউটার অতীত এর সব ধারণা কে পালটে
দিয়েছে। শুধু মাত্র ল্যাবরেটরি তে কুয়ান্টাম কম্পিউটারের ব্যাবহার শুরু
হলেও আই বি এম প্রথম তাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার বাজারে নিয়ে আসে যা সর্বত্র
ব্যাবহার করা সম্ভব।
২০১৯ সালের শেষের দিকে গুগল বাজারে নিয়ে আসে শক্তিশালী ৫৩-কিউবিট কুয়ান্টাম প্রসেসর যা কুয়ান্টাম কম্পিউটারের ধারণা কে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। এই সিকেমর কুয়ান্টাম প্রসেসর এতটাই শক্তিশালী ও দ্রুত যে অতীতের সকল শক্তিশালী কম্পিউটার কে পেছনে ফেলে দেয়। ১০ হাজার বছরের ক্যালকুলেশন মাত্র ২০০ সেকেন্ডে করতে পারে এই সিকেমর প্রসেসর।
২০১৯ সালের শেষের দিকে গুগল বাজারে নিয়ে আসে শক্তিশালী ৫৩-কিউবিট কুয়ান্টাম প্রসেসর যা কুয়ান্টাম কম্পিউটারের ধারণা কে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়। এই সিকেমর কুয়ান্টাম প্রসেসর এতটাই শক্তিশালী ও দ্রুত যে অতীতের সকল শক্তিশালী কম্পিউটার কে পেছনে ফেলে দেয়। ১০ হাজার বছরের ক্যালকুলেশন মাত্র ২০০ সেকেন্ডে করতে পারে এই সিকেমর প্রসেসর।
টেলিপোর্টেশন প্রযুক্তি
কুয়ান্টাম
কম্পিউটারের সাথেই সহযোগী টার্ম টেলিপোর্টেশন। টেলিপোর্টেশন প্রযুক্তি
অন্যতম সেরা প্রুযুক্তি বা টেকনোলজি ভবিষ্যতের জন্য। মানুষের এই প্রযুক্তি
ব্যাবহারে সুযোগ যদিও এখন নেই কেননা এখনো টেলিপোর্টেশন এর উপরে বিজ্ঞানীরা
গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে কিন্তু ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা কুয়ান্টাম কিউট্রেট এর
উপরে এই প্রযুক্তি সফলভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হয়েছেন।ত্রি-মাতৃক এনালগ এই
কিউট্রেট কিউবিট এর চেয়ে একধাপ এগিয়ে।কিউবিট এ বাইনারি ১ ও ০ ব্যাবহার করা
হলেও কিউট্রেট এ ১,০ এবং ২ সংখ্যা ব্যাবহার করা হয়েছে।এটি গুগলের বর্তমান
কুয়ান্টাম কম্পিটারের চেয়েও শক্তিশালী যা আলোর গতিতে স্টেট ট্রান্সফার করতে
সক্ষম এবং ফোটন এর মাধ্যমে এটি কাজ করে।এই প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি
কম্পিউটার কখনো হ্যাক করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন এর বিজ্ঞানীরা।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি
২০১৯
সালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তিতে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়। এই
মুহূর্তে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি বিশ মাতানো সেরা প্রযুক্তির
অন্যতম। এটি অনেক বেশি ছড়িয়ে পরতে থাকে চারদিকে । আমাদের কল্পনারও বাইরে
এটি কাজ করে।নতুন ড্রাগ এবং মেশিনের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি হয়েছে আর
শক্তিশালী।মানুষের চিন্তা ভাবনা পড়া থেকে শুরু করে মহাকাশের অতীত অবস্থা ও
নানান রূপ দেখাতে সক্ষম এই প্রযুক্তি।এবং যে কোন ধরণের ক্রাইম বা অপকর্ম
খুব সহজেই ধরিয়ে দেয়া বা তার সমাধান করা সহজ করে দিয়েছে।২০১৯ সালের এই
প্রযুক্তি সাড়া ফেলেছে পুরো বিশ্ব জুরে যা অভাবনীয়।
ফেসিয়াল রিকোগনেশন টেকনোলজি
ফেসিয়াল
রিকোগনেশন ২০১৯ সালের সেরা প্রযুক্তি গুলোর মাঝে একটি।এই প্রযুক্তি এমন
ভাবে তৈরি করা হয়েছে যা কল্পনারও অতীত।বিভিন্ন মোবাইল ও ল্যাপটপ ডিভাইসে এই
প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হয়।ব্যাবহার করা হয় টাকা তোলার এটীএম
মেশিনেও।সম্প্রতি চায়না তে এক লোক তার প্রেমিকা কে হত্যা করে এবং ফেসিয়াল
রিকোগনেশন ব্যাবহার করে প্রেমিকার একাউন্ট থেকে টাকা ওঠাতে গেলে মেশিন বুঝে
ফেলে যে মেয়ে টি জীবিত নয় এবং পুলিশ কে জানায়।তাহলে বুঝতেই পারছেন কতটা
এডভান্স প্রযুক্তির যুগে আমরা।
সাইবার ট্রাক প্রযুক্তি
২০১৯
সালে প্রযুক্তি নির্মাতা এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স বাজারে নিয়ে
আসে সম্পূর্ণ ইলেকট্রিক "টেসলা সাইবার ট্রাক"।যা চার্জ এর মাধম্যে চলে এবং
দ্রুত গতি সম্পন্ন।সম্প্রতি এটি ব্যাপক হারে সাড়া ফেলেছে পুরো বিশ্বে। এবং
অবাক করে দিয়ে অন্য যে কোন ইঞ্জিন চালিত গাড়ির মতই সক্ষম এই সাইবার ট্রাক।
আরো অবাক করা বিষয় হলো একবার চার্জ দিলে এই গাড়িটি প্রায় ২৪৮.৫ মাইল থেকে
৪৯৭ মাইল বা ৪০০-৮০০ কি.মি. প্রায় পর্যন্ত চলতে সক্ষম।তাও আবার ১.৫ টন
কার্গো সাথে ৬ টনের ট্রেলার নিয়ে। সুতরাং নিশ্চই এটি একটি অভাবনীয়
আবিষ্কার বলা যেতে পারে।তাই নয় কি?
এক্সো স্কেলিটন টেকনোলজি
২০১৯
সালে ইউনিভার্সিটি অফ গ্রেনেবল এল্পস ও ফ্রেঞ্চ ক্লিনাটেক এর বিজ্ঞানীরা
যৌথ ভাবে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যার মাধ্যমে যেকোনো প্যারালাইজড মানুষ
চলাচল করতে পারবে ও প্রায় সব ধরণের কাজ করতে সক্ষম হবে। যদিও প্রথম টেষ্টে
রোগী মাত্র ১৪৫ মিটার চলতে সক্ষম হয়েছিলো কিন্তু ভবিষ্যতে আরো উন্নতি
সাধনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যাবহার উপযোগী হবে বলে তারা আশাবাদী।
ন্যনো পার্টিকেলস প্রযুক্তি
ইউনিভার্সিটি
অফ ম্যাসেচুসেট মেডিকেল স্কুল এর গবেষকগন এক নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন
ন্যনো পার্টিকেলস ব্যাবহার করে। তারা খুব দুষ্প্রাপ্য মৌল আরবিয়াম ও
ইথারবিয়াম ব্যাবহার করে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন যা আমাদের চোখের দৃষ্টি
ক্ষমতাকে আলাদা এক লেভেলে নিয়ে যাবে।এটি একটি ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ
করা হয়।এটির মাধ্যমে রাতেও পরিষ্কার দেখা সম্ভব হবে।এটি চোখে সবুজ আলো
সৃষ্টি করে যা এমন ক্ষমতা দেয়। বর্তমানে ইঁদুরের উপরে পরীক্ষা করা হলেও
ভবিষ্যতে মানুষ এ প্রয়োগ করা হবে এই প্রযুক্তি।
কোরপ্যাথ জি আর এক্স রোবট টেকনোলজি
ইতিহাসে
প্রথমবারের মত একজন ডাক্তার একজন রোগির অপারেশন করেন ২০ মাইল বা ৩২
কিলোমিটার দূর থেকে এই প্রযুক্তি ব্যাবহার করে যা সত্যিই অকল্পনীয়। রিমোট
কন্ট্রোলের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি দ্বারা অনেক দূর থেকেও এমন অপারেশন করা
সম্ভব।এই প্রযুক্তি সত্যিই নতুন যুগের সূচনা করেছে।এভাবে মানুষ কে খুব
সহজেই চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভভ হবে।এই প্রযুক্তি যদি আর উৎকর্ষ সাধন করে
তবে ধারণা করা যায় যে ভবিষ্যতে এই রোবট নিজেই এধরনের চিকিৎসা দিতে সক্ষম
হবে কোন ডাক্তার এর উপস্থিতি ছাড়াই।
ন্যনো রোবটস প্রযুক্তি
ডাক্তার
পিয়েরে ডুপান্ট ও বোস্টন শিশু হসপিটালের সহযোগীদের সহায়তায় এমন এক
প্রযুক্তি আবিষ্কার করেন যা স্বাধীন ভাবে যে কোনো প্রানীর দেহে প্রবেশ করে
সমস্যা খুজে বের করতে সক্ষম এবং নিজে থেকে সেই সমস্যার সমাধান করতে
পারে।বিশেষ করে হৃদপিণ্ড। এটি হৃদপিণ্ডে প্রবেশ করে যে কোন ধরণের সমস্যা
খুজে বের করতে সক্ষন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে সক্ষম।যদিও এটি পশুর
হৃদপিণ্ডে সফল ভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে তাই মানুষ এর মধ্যেও খুব দ্রুতই
প্রয়োগ হবে হয়তো।
ক্যান্সার ডিটেক্টর টেকনোলজি
বর্তমান
সময়ে ক্যান্সার একটি ভয়াবহ সমস্যা।সব চেয়ে বড় ব্যাপার হলো ক্যান্সার সহজেই
নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। ২০১৯ সালে তোশিবা কম্পানি নিয়ে আসে নতুন এক মেশিন
যা ১৩ প্রকারের ক্যান্সার শনাক্ত করতে সক্ষম এবং প্রায় ৯৯% সঠিক ভাবে।এর
জন্য শুধু মাত্র এক বিন্দু রক্ত ই যঠেষ্ট।এই মেশিনের মাধ্যমে খুব বেশি
বিপদজনক অবস্থায় পৌছানোর পূর্বেই ক্যান্সার শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করে
দিয়ে বাঁচানো যাবে প্রান।
সুতরাং
বুঝতেই পারছেন ২০১৯ সালে প্রযুক্তি কতটা উৎকর্ষ সাধন করেছে। পালটে দিয়েছে
পৃথিবীর চিত্র।এভাবে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী।প্রযুক্তির এই নতুন নতুন
উদ্ভাবন যেমন মানুষের জীবন করে দিয়েছে সহজ তেমন ভাবে সমৃদ্ধ করেছে বিজ্ঞান
কে।বিজ্ঞানের এই অভাবনীয় সাফল্য সত্যিই অতুলনীয়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url