OrdinaryITPostAd

জেনে নিন কিভাবে সিম কার্ড কাজ করে

আজ থেকে অনেক বছর আগেও ল্যান্ডফোনের সময় তারের মাধ্যমে মানুষ এক স্থান অন্য স্থানে কথা বলতো।কিন্তু দিন দিন সভ্যতার বিকাশে মানুষ তার নিজের বুদ্ধিকে কাজে তথ্য প্রযুক্তিকে অন্যন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছে।


আগে যেখানে তারের মাধ্যমে কথা হতো বর্তমানে স্মার্টফোনে সিমের মাধ্যমে সেই যোগাযোগ টা সম্পন্ন হয়।একটা সময় মানুষ যেখানে তার নিয়ে বিপাকে পড়তো সেখানে সিম কার্ড মানুষের জীবনে আসার পর শুধু যে কষ্টই কমিয়েছে তা নয় বরং মানুষকে নতুন করে তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে ভাবতে শিখিয়েছে।

সিম কার্ড কী?

ইংরেজি শব্দ সিম(SIM) এর পূর্নরূপ হচ্ছে সাবস্ক্রাইবার আইডিন্টিটি মডিউল।বর্তমানে সাধারণত আমরা যে সিম কার্ড দেখতে পাই তা ১৯৯১ সালে প্রথম তৈ‌রি করা হয়।এটি মোবাইল ফোনকে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করে সেবা প্রত্যাশিকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিয়ে থাকে।সাধারনত সিম কার্ডের মাধ্যমে ফোন কল,মেসেজ,ইন্টারনেট ইত্যাদি সুবিধা পাওয়া যায়।

 সিম কার্ডের অংশ 

সিম কার্ডে সাধারনত একটা নিজস্ব নাম্বার থাকে যা আইএমএসআই(IMSI) নাম্বার নামে পরিচিত।আইএমএসআই(IMSI) পূর্নরূপ হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল সাবস্ক্রাইবার আইডিন্টিটি।সাথে একটি প্রমানীকরন অক্ষর কিংবা অথেনটিকেশন কি থাকে যা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে ফোনের সাথে।আইএমএসআই নাম্বারে ১৫ টি ডিজিট থাকে(+৮৮০১৮××××××××)।প্রথম তিনটি ডিজিট বা সংখ্যা হয় কোনো দেশের নিজস্ব কোড ,তিনটি ডিজিটের পরে একটি কিংবা দুইটি ডিজিট হয় সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক কোড এবং সবশেষের সংখ্যাগুলো হলো ব্যবহৃত সিমের আইডিন্টিফিকেশন নাম্বার ।প্রতিটি দেশের নিজস্ব কোড আলাদা হওয়ায় এক দেশের সিম কার্ড অন্য দেশে ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই রোমিং এর মাধ্যমে ব্যবহার করতে হয়।

সিম কার্ড যেভাবে কাজ করে 

অনেকেই জানেনা যে এত ছোট একটা জিনিস দিয়ে কিভাবে এত কাজ করা যায়।তো চলুন জেনে নেওয়া যাক:-
আসলে সিম কার্ডের মূল জিনিসটাই হচ্ছে সিমে অবস্থিত চিপ এবং এতে বিদ্যমান নাম্বার।

যখন নতুন কোনো সিম মোবাইলে সংযোগ দেওয়া হয় তখন সেই সিম কার্ডে অবস্থিত আইএমএসআই নাম্বারটি সেবা প্রদানকারী মোবাইল অপারেটরের কাছে চলে যায়।তখন সেবাপ্রদানকারী মোবাইল কোম্পানিটি আইএমএসআই নাম্বারের জন্য ডেটাবেজ থেকে অথেনটিকেশন কি  খুজে বের করে।তারপর সেবাদানকারী প্রতিষ্টানটি সিমের জন্য একটি এলোমেলো নাম্বার তৈরী করে এবং এই এলোমেলো নাম্বারের সাথে অথেনটিকেশনের কি টি হিসাব করে একটি রেসপন্স নাম্বার তৈরি করে।তারপর এলোমেলো নাম্বারটি সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান টি ফোনে পাঠায় তখন সিম কার্ড ওই এলোমেলো নাম্বারটি এবং সিম কার্ডের অথেনটিকেশন নাম্বার দ্বারা নতুন আরেকটি এলোমেলো নাম্বার তৈরী করে।এখন এই দুইটি এলোমেলো নাম্বার (যেটা একবার সেবাদানকারী প্রতীষ্ঠান তৈরী করে এবং অন্য এলোমেলো নাম্বারটি যা ফোনে থাকা সিম কার্ড তৈরী করে) যদি একই হয় তাহলে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টি সিম এবং ফোনের সকল ডেটা গ্রহন করে এবং নেটওয়ার্ক টাওয়ারের সাথে সংযোগ করায়।

বলে রাখা ভালো যে, সিম কার্ডের উপর কিছু নাম্বার লেখা থাকে সেগুলো হলো আইসিসিআইডি নাম্বার যার পূর্নরূপ হচ্ছে ইন্টিগ্রেড সার্কিট কার্ড আইডেন্টিফায়ার।যখন বাহিরে ভ্রমন করতে যান তখন এই নাম্বার সাক্ষ্য দেয় যে আপনার ব্যবহৃত সিমকার্ডটি একটি বৈধ সিমকার্ড।

রোমিং সিস্টেম কী?

প্রতিটি সিম কার্ড নির্দিষ্ট এলাকায় কাজ করে থাকে।যেমন বাংলাদেশের সিমকার্ড শুধু বাংলাদেশেই কাজ করে থাকে এর বাইরে সাধারনত নেটওয়ার্ক পায়না।যদি বাংলাদেশের সিম কার্ড নিয়েও বাইরে যাওয়া হয় তবুও সিম কার্ড পরিবর্তন ছাড়াই কল করা যায় রোমিং পদ্ধতির মাধ্যমে।সেক্ষেত্রে হোম নেটওয়ার্কের সাথে ভ্রমনকৃত দেশের নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ থাকতে হয়।উদাহরন হিসেবে বলা যায় বাংলাদেশের কেউ যদি আমেরিকায় গিয়ে রোমিং পদ্ধতি চালু করে তবে কেউ যদি বাংলাদেশের ওই সিমে কল দেয় তবে বাংলাদেশের সেবা প্রদানকারী সিম কোম্পানীটি তার গ্রাহকের লোকেশন অনুযায়ী আমেরিকার সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিকট কল প্রেরন করে এবং তা শেষে গ্রাহকের নিকট যায়।এক্ষেত্রে আমেরিকায় যেই বাংলাদেশি সিম কার্ডের কল গেলো এর জন্য আমেরিকার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানটি কলের বিবরনী রাখবে এবং যে বিল হবে তা বাংলাদেশি সিম প্রতিষ্ঠানের নিকট পাঠাবে।এতে গ্রাহককে বাংলাদেশি সিমের বিল পরিশোধ করতে হবে। এর ফলে সাধারন ফোন কলের চেয়ে তুলনামূলক একটু বেশিই খরচ হবে ৫৫০

সিম কার্ডের প্রকারভেদ

১৯৯১ সালের দিকে সর্বপ্রথম আসে ফুল সাইজ সিম তারপর আসে মিনি সিম তারপর আসে মাইক্রো সিম আর এখন প্রায় কমবেশি সবার ফোনেই ন্যানো সিম কার্ড থাকে।ভবিষ্যৎ হয়তো ই -সিম কার্ড ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হবে।উন্নত দেশগুলোর বেশিরভাগ সিম কার্ডই থাকে ফোনের সাথে লক।অর্থাৎ যখন কেউ কোনো ফোন কিনে তার সাথে সিমও সংযুক্ত করা থাকে এর ফলে গ্রাহক চাইলেও অন্য কোনো সিম কিনতে বা মোবাইলে প্রবেশ করাতে পারবেনা।

সিম কার্ডের তথ্য মেমোরি

একটি সিম কার্ডে সাধারনত ৮ কিলোবাইট থেকে ২৫৬ কিলোবাইট ডেটা সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রায় ২৫০ টির মতো নাম বা নাম্বার সংরক্ষণ করা যায়।সিম কার্ডের মেমোরিতে আইসিসিআইডি নাম্বার,আইএমএসআই নাম্বার,অথেনটিকেশন কি,এলএআই,ইমার্জেন্সি নাম্বার,এসএমএস,কন্টাক নাম্বার থাকে।এর মধ্য এলএআই হলো লোকাল এরিয়া আইডেন্টিটি যা ফোনের অবস্থান ট্র্যাক করে। যখন এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্ক এ যাওয়া হয় তখন নতুন এলএআই ভ্যালু চেঞ্জ হয়ে সিমে সংরক্ষণ হয়ে ওভারলোড হয়ে যায়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url