OrdinaryITPostAd

ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস এর মধ্যকার পার্থক্য জেনে নিন

আপনারা নিশ্চয় জানেন, ইঞ্জিনিয়ারিং এ যে সাবজেক্টে ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করানো হয় তাকে বলে EEE , যার পূর্নরূপ Electrical and Electronics Engineering। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ লোকই জানি না, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস এর মাঝে পার্থক্য কি? অনেকের মতে তো একটির পরিপূরক হিসেবে অন্যটি ব্যবহার করে থাকি! তাহলে চলুন আজ জেনে নিই, ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস এর মাঝের পার্থক্য!


আজকের প্রযুক্তির যুগ মূলত ইলেক্ট্রনিক্সের যুগ। যেমন আমরা প্রত্যহ যে মোবাইল, ল্যাপটপ, টেলিভিশন ইত্যাদি ডিভাইস ব্যবহার করছি, সবই কিন্তু এক একটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস। ফলে বুঝাই যাচ্ছে, প্রযুক্তি এখন যে স্থানে আছে তাতে ইলেক্ট্রনিক্সের রয়েছে বিশাল ভূমিকা।

আমাদের বাসা বাড়িতে আমরা নিত্যদিন বহুবিধ ডিভাইস ব্যবহার করি। যেমন : ফ্যান, টিভি, এসি, ফ্রিজ, মোবাইল, কম্পিটার, লাইট ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে কোনটিকে বলা হয় ইলেক্ট্রিক্যাল ডিভাইস, আবার কোনটিকে বলা হয় ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস। আসলে কোনটা কি ডিভাইস তা মুখস্ত না করে মূল বিষয়টা জেনে নিতে পারলেই আমরা বুঝতে পারবো কোনটা ইলেক্ট্রিক্যাল ও কোনটা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস!

আচ্ছা, আমি আপনাদের বলে দিলাম, ফ্যান হলো ইলেক্ট্রিক্যাল ডিভাইস এবং টেলিভিশন হলো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস। এখন কি আপনারা আমাকে ফ্যান ও টেলিভিশনের মধ্যে তুলনা করে বলতে পারবেন ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস এর পার্থক্য কি? নিশ্চয় আপনারা বলবেন না যে, ফ্যান পুরোনো জিনিস বলে এটিকে ইলেক্ট্রিক্যাল ডাকা হয়, আর টিভি তুলনামূলক নতুন বলে একে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস বলা হয়!

পরিবাহিতা

মূল জিনিস বুঝতে হলে আমাদের প্রথমে বুঝতে হবে পরিবাহিতার প্রকারভেদগুলো। পরিবাহিতার উপর ভিত্তি করে পদার্থকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ সুপরিবাহী, অন্তরক ও অর্ধপরিবাহী

সুপরিবাহী

যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে, তাকে বলা হয় পরিবাহী। যেমন - তামা, লোহা ইত্যাদি।

অন্তরক

আবার যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে একদমই বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে না, তারা অন্তরক। যেমন - কাঁচ, প্লাস্টিক।

অর্ধপরিবাহী

যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ চলাচল সুপরিবাহী ও অন্তরকের মাঝামাঝি অর্থাৎ সামান্য মাত্রায় চলাচল করে, তারা অর্ধপরিবাহী। যেমন - সিলিকন।

এবার উপরের উদাহরণে ফিরে যায়। ফ্যানের মোটরের ভিতরে আমরা যদি তাকায়, তবে আমরা দেখে থাকবো সেখানে রয়েছে তামার তারে প্যাচানো একটি কয়েল। উল্লেখ্য, তামা একটি সুপরিবাহী। অর্থাৎ-
যে সকল ডিভাইসে সুপরিবাহী পদার্থ ব্যবহার করা হয় সেগুলোই হলো ইলেক্ট্রিক্যাল ডিভাইস।
আবার উপরের উদাহরণে যে টিভির কথা বলা হয়েছে তার ভিতরে থাকে একটি সার্কিট বোর্ড। সবুজ রঙের এই সার্কিট বোর্ড লক্ষ্য করলে আপনার চোখে পড়বে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ। এই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরি হয় অর্ধপরিবাহী পদার্থ দিয়ে। অর্থাৎ-
যে সকল ডিভাইস তৈরিতে অর্ধপরিবাহী পদার্থ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোই হলো ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস।
যেমনঃ টিভি, মোবাইল, ল্যাপটপ, নোটবুক ইত্যাদি।

যেসব ডিভাইস একই সাথে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স

খুব সহজ কিছু উদাহরণ আমাদের সামনেই আছে। বাসা বাড়ির লিফটের কথা চিন্তা করলে দেখবেন, লিফটকে উঠা-নামা করায় যে মোটর তা কিন্তু একটি ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্র। আবার, লিফটে যে বোতামগুলো টিপলে লিফট খুলে, বন্ধ হয়, উপরে বা নিচে যায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণের পিছনে রয়েছে সার্কিট বোর্ড, যার মূল উপাদান অর্ধপরিবাহী! অর্থাৎ এটি একই সাথে ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসও।

একইভাবে কিছু কমন ডিভাইস যেগুলো একই সাথে ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স, তাদের উদাহরণ- রেফ্রিজারেটর, ওভেন, হিটার, গাড়ি, বিভিন্ন খেলনা ইত্যাদি।

এখন নিশ্চয় আপনি ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেক্ট্রনিক্স এর উপর একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন। এরকমই নিত্যনতুন আপডেট পেতে Ordinary IT এর সাথেই থাকুন। অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url