রাস্টার গ্রাফিক্স কি? পিক্সেল ও রেজুলেশন সম্পর্কে বিস্তারিত
আজকে আমরা রাস্টার গ্রাফিক্স, পিক্সেল ও রেজুলেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। কম্পিউটারে আমরা যেসব ছবি দেখি, ডিজিটাল ক্যামেরা থেকে যেসব ছবি ইমপোর্ট
করি তার বেশিরভাগই রাস্টার গ্রাফিক্স ইমেজ, যারা নির্দিষ্ট পিক্সেল বা
নির্দিষ্ট রেজুলেশন ধারণ করে।
রাস্টার গ্রাফিক্স কি এবং কিভাবে কাজ করে
রাস্টার
গ্রাফিক্স মূলত পিক্সেল এর সেট, যেটা তৈরী হয় পিক্সেল এর বর্গাকার গ্রিড
এর সমন্বয়ে যাকে বিটম্যাপ (Bitmap) বলা হয়। রাস্টার গ্রাফিক্স এই বিটম্যাপ
সহযোগে কাজ করে বলে রাস্টার গ্রাফিক্সকে অনেকসময় বিটম্যাপও বলা হয়।
সাধারণত
কম্পিউটার মনিটর বা কাগজে যেসব ছবি প্রদর্শিত হয় সেসব ছবির পিক্সেল বা
রঙবিন্দুর বর্গাকার গ্রিড সংক্রান্ত তথ্য রাস্টার গ্রাফিক্স এর মাধ্যমে
প্রকাশ করা হয়। রাস্টার গ্রাফিক্সে ব্যবহৃত প্রতিটা পিক্সেলের রঙ আলাদাভাবে
প্রকাশিত হয়। যেমন, RGB রঙজগতে বর্ণ পিক্সেলগুলো তিনটি বিট দ্বারা
নির্দিষ্ট করা থাকে, যাদের প্রতিটি লাল, সবুজ ও নীল রঙের মান নির্দেশ করে।
অপরদিকে
এখানে সাদা কালো ছবির পিক্সেলের জন্য মাত্র একটি বিট (Bit) বরাদ্দ থাকে।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, সাদাকালো ছবির তুলনায় রঙিন ছবির জন্য কম্পিউটার
মেমোরিতে বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় অর্থাৎ রাস্টার গ্রাফিক্সে রঙিন ছবি
প্রদর্শন করতে হলে কম্পিউটার মেমোরিতে অনেক বেশি স্পেস ধারণ করতে হয়।
রাস্টার
গ্রাফিক্স একটি ছবিকে দেখায় অনেকগুলো ছোট স্কয়ার এর সমষ্টি হিসেবে।
প্রতিটা স্কয়ার বা পিক্সেল নির্দিষ্ট রঙ অথবা শেড এ কোড করা থাকে। এককভাবে
এই পিক্সেলগুলো মূল্যহীন হলেও সমষ্টিগত ভাবে এদের মূল্য হাজার শব্দের
গুরুত্ব বহন করে। হাজার হাজার পিক্সেল বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ডটের সমন্বয়ে একটি পিকচার গঠিত হয়।
রাস্টার গ্রাফিক্স সবচেয়ে ভালো ব্যবহার হয়
যেসব ছবিতে রেখা সংযুক্তির প্রয়োজন হয়না। যেমন, ডিজিটাল ফটোগ্রাফি,
স্ক্যানড আর্টওয়ার্ক অথবা ডিটেইলড গ্রাফিক্স। রাস্টার গ্রাফিক্স পিক্সেল
বেজড হওয়ার কারণে এখানে ছবিগুলো যখন খুব কাছে থেকে দেখা হয় বা জুম করা হয়
তখন ছবিগুলো ব্লার বা আবছা দেখা যায়। এটা রাস্টার গ্রাফিক্সের একটি
সীমাবদ্ধতা।
রাস্টার গ্রাফিক্সের কোয়ালিটি বিবেচনা করার সময়
আমাদের অবশ্যই চিন্তা করতে হবে যে রাস্টার ইমেজ রেজুলেশনের একটি ফরমেট।
অর্থাৎ রাস্টার ইমেজকে বর্ণনা ও প্রদর্শন করা হয় একটি নির্দিষ্ট রেজুলেশনে।
আর এখানে রেজুলেশন পরিমাপ করা হয় প্রতি ইঞ্চি ডটস (Dots) এ। রাস্টার
গ্রাফিক্সে কোন ছবির ডটস বা পিক্সেল যত বেশি হবে তার রেজুলেশন বা ছবির
কোয়ালিটি তত ভালো হবে। রেজুলেশন হলো কোন পিকচারের লম্বালম্বি ও আনুভূমিক মোট পিক্সেলের সমষ্টি।
রাস্টার গ্রাফিক্সের জন্য রেজুলেশন ক্যাপাবিলিটি সম্পন্ন ডিভাইস ও থাকা জরুরী। এক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, কোন ডিভাইসে আমরা যে রেজুলেশন লক্ষ করি সেটা আসলে ডিভাইস এর ইন্টারনাল প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে না বরং নির্ভর করে ডিভাইসের আউটপুট ক্যাপাসিটির উপর। সুতরাং হাই রেজুলেশনের রাস্টার ছবি ব্যবহারের আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, যে ডিভাইসে ছবিটা প্রদর্শিত হবে সেটার হাই রেজুলেশনে প্রদর্শন করার ক্যাপাবিলিটি আছে কিনা। রাস্টার গ্রাফিক্স প্রিন্ট করতে এবং কোয়ালিটি ধরে রাখার জন্য বেশি রেজুলেশন মেইনটেন করা অত্যন্ত জরুরী।
রাস্টার ইমেজ ফরমেট
রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহৃত কিছু ফরমেট হচ্ছে jpg, gif, png, pdf ইত্যাদি। রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহার করে ছবি তৈরির কমন সফটওয়্যারগুলো হচ্ছে, পেইন্ট প্রোগ্রাম, অ্যাডোবি ফটোশপ, স্কেচবুক ইত্যাদি।
রাস্টার গ্রাফিক্সের সুবিধা ও ব্যবহার
১)
যেসব গ্রাফিক্সের কাজে অরৈখিক বা নন-লাইন সম্বলিত ছবি শিল্প প্রয়োজন যেমন,
ডিজিটাইজড ফটোগ্রাফ, স্ক্যান করা ছবি এসব ক্ষেত্রে রাস্টার গ্রাফিক্স
ব্যবহার করা যায়।
২) সূক্ষ্ম রঙ্গিন ক্রমবিন্যাস, নিখুঁত লাইন ও আকার এবং জটিল অক্ষরবিন্যাস তৈরীতে রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহার করা সহজ।
৩) রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহারের খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
৪) কালার মিশ্রণ সম্বলিত কোন ছবি তৈরী করতে চাইলে রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহার করা সর্বোত্তম। কারণ যেকোনো কালার ব্যবহার করা যায় এবং কালার এর ভিন্নতা সৃষ্টি করা যায়।
৫) কিছু অসুবিধা থাকলেও রাস্টার গ্রাফিক্সই এখন পর্যন্ত ওয়েব স্ট্যান্ডার্ড। তাই প্রিন্টার এবং ডিসপ্লে গুলো বেশিরভাগ রাস্টার বেজড হওয়ায় প্রায় সব ধরনের ডিভাইসে রাস্টার গ্রাফিক্সের ব্যবহার রয়েছে। আমরা অনলাইনে যেসব ছবি বা পিকচার দেখি তার প্রায় সবই রাস্টার গ্রাফিক্স। আমরা যেসব ভিডিও বা সিনেমা দেখি তাও রাস্টার গ্রাফিক্স।
২) সূক্ষ্ম রঙ্গিন ক্রমবিন্যাস, নিখুঁত লাইন ও আকার এবং জটিল অক্ষরবিন্যাস তৈরীতে রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহার করা সহজ।
৩) রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহারের খরচ তুলনামূলকভাবে কম।
৪) কালার মিশ্রণ সম্বলিত কোন ছবি তৈরী করতে চাইলে রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহার করা সর্বোত্তম। কারণ যেকোনো কালার ব্যবহার করা যায় এবং কালার এর ভিন্নতা সৃষ্টি করা যায়।
৫) কিছু অসুবিধা থাকলেও রাস্টার গ্রাফিক্সই এখন পর্যন্ত ওয়েব স্ট্যান্ডার্ড। তাই প্রিন্টার এবং ডিসপ্লে গুলো বেশিরভাগ রাস্টার বেজড হওয়ায় প্রায় সব ধরনের ডিভাইসে রাস্টার গ্রাফিক্সের ব্যবহার রয়েছে। আমরা অনলাইনে যেসব ছবি বা পিকচার দেখি তার প্রায় সবই রাস্টার গ্রাফিক্স। আমরা যেসব ভিডিও বা সিনেমা দেখি তাও রাস্টার গ্রাফিক্স।
রাস্টার গ্রাফিক্সের অসুবিধা
১) রাস্টার গ্রাফিক্সের প্রধান সমস্যা হচ্ছে একে জুম করলে বা কাছে থেকে দেখলে ছবি অস্পষ্ট বা ব্লার হয়ে যায়, অমসৃণ এবং রাফ হয়ে যায়।
২)
রাস্টার গ্রাফিক্সের রেজুলেশন স্পেসিফিক। এজন্য রাস্টার গ্রাফিক্স ব্যবহৃত
ডিভাইসে অবশ্যই রেজুলেশনসহ রাস্টার গ্রাফিক্স ছবি দেখানোর ক্যাপাবিলিটি
থাকতে হবে।
৩) রাস্টার গ্রাফিক্স যদিও প্রিন্টিং এবং ডিসপ্লেতে ব্যবহার হয়, তবে এসবক্ষেত্রে রাস্টার গ্রাফিক্স খুব ধীরগতিতে কাজ করে।
৪)
রাস্টার গ্রাফিক্সের বহুমুখী কাজ করার ক্ষমতা কম। কারণ রাস্টার গ্রাফিক্সে
একই সাথে অন্য আরেকটি কাজ করতে গেলে রাস্টার গ্রাফিক্সের ছবির কোয়ালিটি
নষ্ট হয়ে যায়। যেমন, এমব্রয়ডারির কাজে রাস্টার ইমেজ ব্যবহার করা কোন ভালো
অপশন নয়।
৫) রাস্টার গ্রাফিক্স পিক্সেল বেজড হওয়ায় এতে ব্যবহৃত ছবির জন্য ডিভাইসে বেশি স্পেস বা বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।
যদি
আপনি একটি ফটোগ্রাফিক ইমেজ চান যেখানে অনেক কালার এর মিশ্রণ থাকবে এবং জুম
করে দেখার বা প্রিন্ট দেয়ার প্রয়োজন নেই, তাহলে আপনি অবশ্যই রাস্টার ইমেজ
ব্যবহার করবেন। জুম করলে ব্লার হয়ে যাওয়ার কারণে যদিও রাস্টার ইমেজ এর
জনপ্রিয়তা কমে গেছে তারপরও ফটোগ্রাফি রাস্টার গ্রাফিক্স এর ব্যবহার ছাড়া
অসম্পূর্ণই থেকে যায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url