ইমেজ ফাইল ফরম্যাট কি? JPG, PNG, GIF... সম্পর্কে বিস্তারিত
চলুন জেনে নিই ইমেজ ফরম্যাট কি এবং জনপ্রিয় কিছু ইমেজ ফরম্যাট সম্পর্কে যেমন JPG, PNG, GIF। আপনার মোবাইল এর গ্যালারি থেকে একটি ছবির ডিটইলস চেক করলেই দেখতে পাবেন ছবিটা হয় jpg টাইপ না হয় png টাইপ বা এরকম কতগুলো শব্দের ফরম্যাটে আছে। আপনি কি জানেন এগুলো শব্দ দ্বারা কি বোঝায়? জি, এগুলোই হলো ইমেজ ফরম্যাট।
ইমেজ ফরমেট কি?
একটি ছবি সংরক্ষণ করার পর ছবিটি সম্পর্কে সকল তথ্য বর্ণনা করা হয় ইমেজ ফরম্যাটে। ইমেজ ফরম্যাটগুলোর কোনটা রাস্টার গ্রাফিক্স আবার কোনটা ভেক্টর গ্রাফিক্স এর অন্তর্ভুক্ত। কমন কিছু ইমেজ ফরমেট হলো - jpg, tif, png, gif, eps এছাড়াও রয়েছে র ইমেজ (Raw Images)।
জে.পি.জি /Jpg /Jpeg (Joint photographic experts group)
সবচেয়ে প্রচলিত এবং বহুল ব্যবহৃত ইমেজ ফরম্যাট হলো JPG। এটা লজি কম্প্রেশন (Lossy Compression) মেথড এ কাজ করে। অর্থাৎ এতে ব্যবহৃত ছবির তথ্যগুলো সংকুচিত করে এর ফাইল সাইজকে ছোট করা হয়। ছবি সম্বলিত তথ্য খুব সহজেই দক্ষতার সাথে কমপ্রেস বা সংকুচিত করে ফাইল সাইজ ছোট করা যায় বলে Jpg একটি জনপ্রিয় ইমেজ ফরমেট। Jpg এর মত অন্য কোন ইমেজ ফরমেট এতটা ছোট নয়, এটা Jpg এর একটা মূল্যায়ন হলেও ফাইল সাইজ ছোট করতে যেয়ে Jpg তে ছবির কোয়ালিটি কিছুটা নষ্ট হয়। তাই Jpg ব্যবহৃত হয় যেখানে ছবির কোয়ালিটির চেয়ে ফাইল ছোট হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেসব জায়গায়। যেমন - ডিজিটাল ক্যামেরা, ইমেইল, ওয়েবপেজ, MS অফিস, মেমোরি কার্ড ইত্যাদি তে Jpg ফরমেট ব্যবহৃত হয়। JPG রাস্টার গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করে। এই ধরণের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড লেয়ার থাকে।
জি.আই.এফ/GIF ( Graphics Interchange Format)
GIF লজলেস কম্প্রেশন পদ্ধতিতে কাজ করে এবং গ্রাফিক্স এর কাজের জন্য একটি অন্যতম ইমেজ ফরমেট। রঙীন ছবির জন্য GIF এর সীমাবদ্ধতা হলো এতে সীমিত সংখ্যক কালার ব্যবহার করা যায়, মাত্র ২৫৬ টি কালার। তবে GIF এ ট্রান্সপারেন্সি এবং এনিমেশন এর কাজ করা যায়। আপনি যদি অল্পসংখ্যক কালার নিয়ে কাজ করতে চান তাহলে ছোট ফাইল এর ফরমেটগুলোর মধ্যে Jpg এর তুলনায় GIF বেস্ট ফরমেট হবে। মূলত GIF ফরম্যাট ব্যবহার করা হয় ভিডিও ইমেজ তৈরি করার জন্য। একটি GIF ফরম্যাটের ইমেজের মধ্যে অনেকগুলো ইমেজ ফ্রেম রাখা যায় বলে GIF ফরম্যাটের ইমেজকে দেখতে ভিডিওর মত মনে হয়। ব্যাকগ্রাউন্ড লেয়ার ছাড়াও GIF ফরম্যাটে ছবি সেভ করা যায়। GIF রাস্টার গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করে।
পি.এন.জি /PNG (Portable Network Graphics)
Gif এর বিকল্প হিসেবে png ফরমেট ব্যবহার করা যায়। কারণ png তে প্রায় ১৬ মিলিয়ন কালার সাপোর্ট করে, যেখানে GIF এ মাত্র ২৫৬ টি কালার সাপোর্ট করে। যেহেতু png লজলেস কম্প্রেশন পদ্ধতিতে কাজ করে তাই এতে ছবি এডিট করা যায় এবং ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হয় না। বেশিরভাগ ওয়েব প্রজেক্ট এ png ব্যবহারের কারণ হচ্ছে এতে ট্রান্সপারেন্ট ব্যাকগ্রাউন্ড রাখা যায় এবং বেশি কালার এর ছবি সেভ করা যায়। png ফরম্যাট ব্যবহার করে কোন ইমেজকে ব্যাকগ্রাউন্ড লেয়ার বাদ দিয়ে সেভ করা যায়। PNG রাস্টার গ্রাফিক্স নিয়ে কাজ করে।
GIF আর PNG এর মেইন পার্থক্য হচ্ছে GIF অনেক ইমেজ ফ্রেম নিয়ে কাজ করতে পারে বলে তা ভিডিওর মত দেখায় অন্যদিকে PNG কেবল একটি ইমেজ ফ্রেম নিয়েই কাজ করে বলে তা JPG র মত স্থিরচিত্র মনে হয়। PNG আর JPG এর মধ্যে মেইন পার্থক্য হচ্ছে JPG ইমেজের ব্যাকগ্রাউন্ড থাকে আর PNG ইমেজ ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়াই ট্রান্সপারেন্স অবস্থায় সেভ করা যায়।
টি.আই.এফ /TIF (Tagged Image File)
এটা একটা উচ্চ গুণমান সম্পন্ন ইমেজ ফরমেট যেটা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হয়। এটা বড় রাস্টার ইমেজ ফাইল যেখানে ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হয় না অনেকটা ভেক্টর গ্রাফিক্সের মত। এটা লজলেস কম্প্রেশন পদ্ধতিতে কাজ করে। অর্থাৎ এতে ছবি কপি, পেস্ট, সেভ করলেও অরিজিনাল ছবির কোয়ালিটি নষ্ট হয় না। TIF বহুমুখী কাজ সম্পন্ন করার জন্য উপযুক্ত একটি ফরমেট। তবে এর ফাইল সাইজ বড় হওয়ায় এটা আপলোড হতে অনেক সময় নেয়। প্রফেশনাল প্রিন্টিং এর কাজে TIF ব্যবহার করা হয়।
ই.পি.এস/EPS( Encapsulated postscript file)
এটা একটা কমন ভেক্টর ফাইল, যেটা প্রিন্টিং এর ক্ষেত্রে হাই রেস্যুলিউশন এর গ্রাফিক্স তৈরীর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। প্রায় সব ধরনের ডিজাইন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে EPS ফরমেট তৈরী করা যায়। ভেক্টর গ্রাফিক্স এর সব এপ্লিকেশন প্রোগ্রামে EPS ওপেন করা যায়। যেমন- কোরেল ড্র (Corel draw), Adobe Illustrator.
র ইমেজ ফাইল/Raw Image File
র ইমেজ ফাইল (Raw Image File) হচ্ছে প্রসেসিং ছাড়া যেসব ছবি ক্যামেরা অথবা স্ক্যানার এ তৈরী হয়। এই ছবিগুলো প্রসেস করার জন্য একটি এডিটর প্রোগামের প্রয়োজন হয় যেমন- অ্যাডোবি ফটোশপ (Adobe Photoshop) অথবা লাইটরুম (Lightroom) । এটা মেটাডাটা সংরক্ষণ করে এবং ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত হয়। র ইমেজ ফাইলে ছবি তোলার সময় একটি ছবির প্রতিটা অংশ ধারণ করে এবং কোনরকম প্রসেসিং এবং কোন তথ্য নষ্ট হওয়া ছাড়াই এটা ছবি সংরক্ষণ করে। র ইমেজ কে আমরা ভেক্টর বা রাস্টার যেকোনো গ্রাফিক্স এর অন্তর্ভুক্ত করতে পারি এবং র ইমেজকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ট্রান্সফার এবং রিসাইজ করা যায়।
ইমেজ ফরমেট গুলো প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করা যায়। তবে কাজের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বেছে নিতে হবে যেটা আপনার কাজকে নিপুণভাবে কোন ঝামেলা ছাড়ায় সময়মত শেষ করবে।
i have understandthis matter...
আমি খুবই উপকৃত হয়েছি। তথ্য গুলো জানানোর জন্য ধন্যবাদ।
Thank You
খুব সুন্দর ও দরকারি একটি পোস্ট