OrdinaryITPostAd

এই ১১টি উইন্ডোজ ১০ ফিচার আপনারও জানা উচিত

  

পাঠক, আজ আমি আপনাদের সাথে উইন্ডোজ ১০ টিপস ও এর কিছু আকর্ষণীয় ফিচার নিয়ে কথা বলবো যা অনেকেই জানে না। তাহলে চলুন জেনে নিই উইন্ডোজ ১০ এর ১১টি আকর্ষণীয় ফিচার।

WiFi Hotspot

ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের ইন্টারনেট মোবাইলে বা অন্য ডিভাইসে ব্যবহারের জন্য আমরা বিভিন্ন থার্ডপার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপকে ওয়াইফাই হটস্পট বানিয়ে ফেলি। এটা অনেকটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অনেকে আবার ভাল মানের সফটওয়্যারও খুঁজে পান না। আপনি যদি উইডোজ ১০ ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে কোন সফটওয়্যার ছাড়াই আপনার পিসিকে ওয়াইফাই হটস্পট বানিয়ে ফেলতে পারেন। এজন্য স্টার্ট মেনু ওপেন করে সেখানে mobile hotspot লিখে সার্চ দিন তাহলেই পেয়ে যাবেন। এখন ওপেন কয়ার পর ইচ্ছেমত ওয়াইফাই নাম আর পাসওয়ার্ড দিয়ে বানিয়ে ফেলুন WiFi Hotspot।

Hidden Start Menu

উইন্ডোজ-১০ এর স্টার্ট মেন্যু তো আমরা সবাই দেখছি। এটা বিগত সকল উইন্ডোজ সিরিজের অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে বেস্ট। কিন্তু আপনি জানেন কি আমরা যেই উইন্ডোজ স্টার্ট মেন্যু দেখি তার আরো একটি সিক্রেট রুপ আছে। সত্যি বলতে আমি নিজেও এটার সম্পর্কে জানতাম না। এই পোস্ট টি লিখবো তাই ঘাটতে গিয়ে জেনেছি। স্টার্ট অপশনের উপর রাইট ক্লিক করলেই পেয়ে যাবেন এই সিক্রেট স্টার্ট মেন্যু। এটা স্বাভাবিক স্টার্ট মেন্যুর মত দেখতে না হলেও এতে সব কিছুই রয়েছে। এপস, পাওয়ার, নেটওয়ার্কিং, ডিভাইস ম্যানেজার, কম্পিউটার ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি আর অনেক ফিচার এতে বিকল্প হিসেবে আছে।

Storage Manager

এটা খুব মজার একটা ফিচার যা আমার বেশ ভালো লেগেছে। স্টোরেজ ম্যানেজার অপশনে গেলে আপনি একই সময়ে দেখতে পাবেন আপনার কোন ড্রাইভ কত স্পেস নিয়েছে, কোন ড্রাইভে কোন কোন ফাইল (মিউজিক, পিকচার, ভিডিও) কেমন স্পেস নিয়েছে, জাংক ফাইল , টেম্পোরারি ফাইলের হিসেব সহ আর অনেক মজার অজার তথ্য এখানে পাওয়া যাবে। স্টোরেজ ম্যানেজারে যেতে প্রথমে স্টার্ট মেনুতে গিয়ে সেটিংসে যেতে হবে। এখান থেকে সিস্টেমে গিয়ে স্টোরেজ অপশনে ক্লিক করলেই স্টোরেজ ম্যানেজার পাওয়া যাবে। (অথবা স্টার্ট মেনুতে গিয়ে Storage লিখে সার্চ দিন, পেয়ে গেলে ওপেন করুন) এখন যে ড্রাইভের তথ্য দেখতে চান সেই ড্রাইভে ক্লিক করলেই বিস্তারিত সব দেখা যাবে।

God Mode Menu

সাধারণত উইন্ডোজের কন্ট্রোল প্যানেলের কোন অপশন বা ফিচার কে ডেস্কটপে সর্টকাট করা যায় না। কারণ এটা উইন্ডোজের প্রোগ্রামের মাধ্যমে করতে হয় শুধু। কিন্তু এখানেও একটা মজার বিষয় হলো আপনি এই গড মেন্যু ব্যবহার করে যেকোনো অপশনকে ডেস্কটপে  শর্টকাট করে রাখতে পারেন। তাছাড়া এই অপশন গুলো ব্যবহার করে ফোল্ডার/ফাইলের সেটংস পালটিয়ে দিতে পারেন। যাইহোক, এই ফিচারটি নিয়ে কাজ করতে হলে এইচটিএমএল প্রোগ্রামিং ভাষায় একটু দক্ষতা থাকলে ভালো হয়। এই অপশনটির জন্য প্রথমে ডেস্কটপে একটি সাধারণ ফোল্ডার বানিয়ে রি-নেম করে "GodMode" string: WhateverName.{ED7BA470-8E54-465E-825C-99712043E01C} লিখুন। তারপর দেখবেন  ফোল্ডার থিম পালটে গিয়েছে। এখন ফোল্ডারে ঢুকলে দেখতে পাবেন কন্ট্রোল প্যানেলের প্রচুর অপশন/ ফিচার। যেই অপশনকে শর্টকাট আকারে ব্যবহার করতে চান সেটাতে রাইট ক্লিক করে ডেস্কটপে ক্রিয়েট শর্টকাট করতে হবে।

Snipping Tool

এর কাজ মোটামুটি অনেকেই জানেন। স্ক্রিনশট নিয়ে যারা কাজ করেন তারা এটা নিয়মিতই ব্যবহার করেন। এটা একটি উইন্ডোজের বিল্টইন ফিচার। আমরা সাধারণত স্ক্রিনশট নিতে windows+print screen প্রেস করি। কিন্তু এতে সরাসরি পুরো মনিটরের স্ক্রিনশট হয়ে যায়। আপনি যদি নিজের ইচ্ছা মত আকারের স্ক্রিনশট চান তাহলে উইন্ডোজের স্নিপিং টুলস বেশ উপকারী। স্নিপিং টুলস পেতে উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে snipping tools লিখে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। এই মাধ্যমে আপনি ফ্রি হ্যান্ড স্ক্রিনশট নিতে পারবেন অর্থাৎ আপনি চাইলে গোলাকার, বর্গাকার কিংবা আপনার ইচ্ছা মত শেপে নিতে পারেন। এছাড়াও এতে রয়েছে সময় নির্ধারণ করার সুবিধা। অর্থাৎ স্ক্রিন শট নেয়ার কমান্ড দিয়ে কত সময় পর শটটি নিতে পারবেন তার সময় আপনার ইচ্ছে মত ঠিক করে দিতে পারেন।

Sticky Note

স্টিকি নোট, বিশেষ করে স্মার্ট ফোন গুলোতে আমরা বেশি ব্যবহার করি। পিসিতেও এই অপশন টি রেখেছে উইন্ডোজ-১০। এতে আপনি আপনার প্রতিদিনের কাজের পরিকল্পনা সহ অন্যান্য বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ করতে পারবেন। এছারাও এতে রয়েছে ডে রিমাইন্ডার। ডে রিমাইন্ডার দিয়ে আপনি প্রতিদিনের কাজ কিংবা ভবিষ্যতের কোন কাজ পরিকল্পনা মোতাবেক সময় মত করতে পারবেন। স্টিকি নোট পেতে উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে sticky note লিখলেই পেয়ে যাবেন। স্টিকি নোটের কালার চেঞ্জ সুবিধাটাও বেশ আকর্ষণীয়।

Windows Remote Assistance

আমরা রিমোট কম্পিউটার সম্পর্কে অনেকেই জানি। আমাদের কম্পিউটার যদি কখনো কোন সমস্যায় পড়ে কিংবা কোন ফ্রেন্ড এর কম্পিউটার সমস্যায় পরে তাহলে অনুমতি সাপেক্ষে একজন আরেকজনের কম্পিউটার স্ক্রিন শেয়ার করে সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। এই কাজ গুলো করতে সাধারণত আমরা থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা যে আমাদের এই কাজটি করতে কোন থার্ড পার্টি সফটওয়্যারের প্রয়োজন নেই। কারণ উইন্ডোজ-১০ নিজস্ব ভাবে এই কাজের জন্য একটি বিল্টইন ফিচার রেখেছে। উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে remote assistance লিখলেই পেয়ে যাবেন এই ফিচারটি। তারপর অ্যালাও কানেকশন দিন। এরপর remote Desktop Connection লিখে সার্চ দিন স্টার্ট মেনুতে। তাহলে remote Desktop অপশন পেয়ে যাবেন। দুটি পিসি যদি একই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকে তাহলে পরবর্তী নির্দেশনা অনুসরণ করে এক পিসিতে বসে আরেক পিসি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন।

Step Recorder

এই ফিচারটি বেশ কাজের। কখনো পিসিতে যদি কোন কাজ সম্পর্কে বুঝতে না পারেন আর তখন আপনার ফ্রেন্ডকে এই বিষয়ে জানাচ্ছেন কিন্তু সে ঠিক বুঝতে পারছে না আপনার সমস্যা কিংবা আপনি একটা কাজের বর্ণনা দিচ্ছেন আর এই ক্ষেত্রে প্রতিটা ধাপ উল্লেখ করতে চাচ্ছেন সেই ক্ষেত্রে বার বার স্ক্রিন শট নেয়াটা একটু বিরক্তিকর। আপনি এই বিরক্তিকর মুহূর্ত থেকে খুব সহজেই রেহাই পেতে পারেন আর সেই সাথে কাজের প্রতিটা ধাপ স্ক্রিনশট আকারে নিতে পারেন স্টেপ রেকর্ডারের মাধ্যমে। স্টেপ রেকর্ডার দিয়ে কাজ করতে উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে লিখুন steps recorder তাহলেই পেয়ে যাবেন। এখন আপনি ইচ্ছেমত রেকর্ড চালিয়ে যান।

Voice Recorder

ভয়েস রেকর্ডার এর ব্যাবহার আমরা সবাই জানি কিন্তু এর দ্বারা যে ভয়েস এডিট করা যায় তা হয়তো অনেকেই জানিনা। উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে voice recorder লিখলেই পেয়ে যাবেন ভয়েস রেকর্ডার। আর আপনি এখানে আপনার ইচ্ছে মত ভয়েস রেকর্ড করে সেই সাথে এডিট করে নিতে পারেন।

Malicious Removal Tools

আপনার পিসিতে অ্যান্টিভাইরাস নাই? কোন চিন্তা নেই। উইন্ডোজ-১০ তার অপারেটিং সিস্টেমে বিল্টইন ভাবে ম্যালওয়্যার রিমুভাল চেকিং এবং ডিলেট করার ফিচার রেখেছে।উইন্ডোজ স্টার্ট মেনুর সার্চ অপশনে গিয়ে লিখুন mrt আর শুরু করেদিন ম্যালওয়্যার রিমুভ।

উইন্ডোজ মেমোরি ডায়াগনিস্টিক

হার্ড ডিস্ক কিংবা RAM এর যদি কখনো সমস্যা বলে মনে হয় তাহলে এটা একটা ভালো সমস্যা সমাধানের মাধ্যম। এটা আপনার সমস্ত ডিস্ক/ মেমোরি চেক করবে আর সমস্যা থাকলে সমাধান করবে নয়তো আপনাকে ম্যাসেজ আকারে সমস্যা সনাক্ত করে দিবে। উইন্ডোজ বারে সার্চ অপশনে গিয়ে windows diagnostics লিখলেই অপশনটি পেয়ে যাবেন। তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই রিস্টার্ট দেয়ার আগে রানিং কাজ গুলো সেভ করে নিবেন।

আশাকরি পাঠক এই ফিচার গুলো আপনার খুব কাজে আসবে। এই ফিচার গুলো হয়তো আমাদের কারো কারো জানা রয়েছে আগে থেকে তবে অনেকেই জানেন না এমন অসাধারণ ফিচার গুলো উইন্ডোজ-১০ বিল্টইন করে রেখেছে। পোস্টটি কেমন লাগলো তা অবশ্যই জানাবেন আর কোন প্রশ্ন থাকলে বা জানার থাকলে মন খুলে জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url