OrdinaryITPostAd

১ মিনিটের জন্য মোবাইল নিয়ে আপনার যেসব ক্ষতি করা সম্ভব

ধরুন আপনার বন্ধু আপনার ফেসবুক, জিমেইল বা ইউটিউব অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার টার্গেট নিল। এবার সমস্ত সিকিউরিটি থাকার পরেও যদি দেখেন আপনার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে তাহলে আপনার অনুভূতি কেমন হবে?

উত্তরে কি বলবেন তা নিয়ে এখনি ভেবে মাথা নষ্ট করার দরকার নেই, আগে আর্টিকেলটা পড়ে শেষ করুন। প্রথমে কিছু ঘটনার দিকে আলোকপাত করা যাক যে বন্ধু যেসব ক্ষতি সাধন করতে পারে আপনার।

ঘটনা ১

একদিন আপনি রাস্তায় হাঁটছেন। এমন সময় পাশ থেকে কেউ একজন বলল তার ফোনটি হারিয়ে গিয়েছে কিংবা চার্জ শেষ হয়ে গিয়েছে। তো, কল করার জন্য আপনার ফোনটি চাইলো আপনিও মানুষ ভাল। ব্যাচারার মুখের দিকে তাকিয়ে না করতে পারলেন না। দিয়ে দিলেন সাময়িক ব্যবহারের জন্য। কদিন পর জানতে পারলেন আপনার গোপন তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছে। গোপন তথ্য বলতে, সিক্রেট ফটো, ভিডিও কিংবা আরো স্পর্শকাতর তথ্য হতে পারে।

ঘটনা দুই ২

আপনার ফোনের কোন প্রবলেম ঠিক করার জন্য মোবাইল সার্ভিসিং-এর দোকানে গেলেন। তারা বলল যে, ঠিক করতে কিছুক্ষণ লাগবে। তো আপনি অপেক্ষা করতে থাকলেন কখন ঠিক হবে। কিছুক্ষণ পর যথারীতি ঠিক করে আপনার ফোন আপনার হাতে পৌঁছে দিল দোকানদার। বাড়ি এসে একদিন পর্ন সাইটে ঢুকে দেখলেন যে, আপনারই স্পর্শকারত মুহূর্তের ভিডিও যেটি আপনারই ধারণ করা সেটি কেউ একজন সাইটে শেয়ার করেছে।

ঘটনা ৩

একদিন কোথাও বেড়াতে গেলেন। আর নিজেদের ফোটা তোলার দায়িত্ব দিলেন পাশের পরিচিত কোন বন্ধুকে। দিন শেষে বাড়ি ফিরে দেখলেন আপনার জিমেইল বা গুগল অ্যাকাউন্ট হ্যাকড। যদি এই জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়েই ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা স্কাইপের মতো অন্যান্য সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করে থাকেন তাহলে সেগুলো হ্যাক করাটাও সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ঘটনা ৪

একদিন আপনার বন্ধু কথা বলার জন্য আপনার ফোন চাইল। যেহেতু বন্ধু চেয়েছে সেহেতু আর না করতে পারলেন না, দিয়ে দিলেন। বাড়ি এসে ১ সপ্তাহ পর দেখলেন যে আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড কেউ পরিবর্তন করে ফেলেছে। কিভাবে কি হল আপনি কিছুই বুঝে উঠতে পারলেন না। তো আবার আপনি নিজের ফেসবুকের পাসওয়ার্ডটি পরিবর্তন করে শক্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে দিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর দেখলেন যে, এবার শুধু আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ডই পরিবর্তন হয় নি, সেই সাথে ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন কেউ একজন নিয়ে নিয়েছে। এখন আপনার আর কিছুই করার নেই। কারণ উক্ত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে কানেক্ট থাকা সকল ফোন নাম্বার ও ইমেইল অ্যাড্রেসও চেইঞ্জ করে ফেলা হয়েছে। এখন ঐ একাউন্ট থেকে বাজে পোস্ট করতে থাকে তাহলে আপনার অবস্থা কি হবে বুঝতে পেরেছেন?

ঘটনাগুলো পড়তে পড়তে নিশ্চয় অনেক সূত্র নিজেই মিলিয়ে নিয়েছেন তাই না? আর যারা কোন সূত্রই মিলাতে পারছেন না তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটির নিচের অংশঃ

ঘটনা ১ ও ২ এর ব্যাখ্যা

ঐ ব্যাক্তি আসলে আপনার ফোন নিয়ে সাথে সাথেই গ্যালারিতে ঢুকে পড়েছে। এবং সেখানে সেসব সিক্রেট বিষয়াদি পেয়েছে তা তার নিজের ফোনে অথবা পাশে ওঁৎ পেতে থাকা আরেক পাইরেটের কাছে সেন্ড করে দিয়েছে।

ঘটনা ৩ এর ব্যাখ্যা

এখানে আপনার বন্ধু আপনার জিমেইলের পাসওয়ার্ড রিসেট করে নিয়েছে। পাসওয়ার্ড ফরগেট অপশনে গিয়ে এটি খুব দ্রুত করা যায়। এখন সে যদি রিকভারি ইমেইল চেঞ্জ করে তার নিজের ইমেল দিয়ে দেয় তাহলে আপনি আপনার জিমেইলের পাসওয়ার্ড চেইঞ্জ করার পর রিস্কের মধ্যেই থেকে গেলেন। এখন আপনার বন্ধু চাইলেই যে কোন মুহূর্তে আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্টটি পূনরায় হ্যাক করতে পারে। এখন হ্যাক করার জন্য আর আপনার সংস্পর্শে যাবার প্রয়োজন নেই।

ঘটনা ৪ এর ব্যাখ্যা

এখানে আসলে আপনার বন্ধু আপনার ফোনটি নিয়ে কি-লগার টাইপের কোন অ্যাপ আপনার ফোনে ইনস্টল করে দিয়েছে। তারপর সেটি সিস্টেম অ্যাপে কনভার্ট করে হাইড করে দিয়েছে। এখন ঐ অ্যাপটি গোপনে আপনার সমস্ত অ্যাকাউন্টের তথ্য নিয়ে আপনার বন্ধুর ইমেইলে সেন্ড করে দিচ্ছে। আপনি যদি কখনও কোন অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পুনরায় চেঞ্জও করে দেন তাহলেও সেই তথ্য ঐ অ্যাপটি গোপনে রেকর্ড করে আপনার বন্ধুর ইমেইলে পাঠিয়ে দেয়। এতে করে আপনি দীর্ঘমেয়াদি হ্যাকিং এর শিকার হলেন।
তো এতক্ষণ আপনার যে বিষয়টি সম্পর্কে জানলেন, হ্যাকিং এর ভাষায় একে বলা হয় "সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং" এটিকে অনেকেই আর্ট অফ হিউম্যান হ্যাকিং বলে থাকেন। এটি হ্যাকিং এর এমন একটি কৌশল যাকে কাজে লাগিয়ে সমস্ত নিরপত্তার মধ্যেও ভিকটিমকে হ্যাক করা যায়। মোট কথা হল ভিকটিমকে বোকা বানিয়ে বা তার সরলতার সুযোগ নিয়ে এই হ্যাকিং হামলা চালানো হয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url